জাহিদের শপথ : পীরগঞ্জের মানুষের প্রতিক্রিয়া কী?

বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে সংসদ সদস্য হিসেবে জাহিদুর রহমান জাহিদ শপথ নেয়ায় ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ এলাকায় মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তবে বিএনপি নেতাকর্মীরা তাকে জাতীয় বেঈমান বলে অ্যাখ্যা দিয়েছে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পীরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাহিদুর রহমান জাহিদ ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচিত হন। শপথগ্রহণ নিয়ে দীর্ঘদিন নানা গুঞ্জনের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে বিএনপির এ নেতা বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় শপথ নিয়েছেন।

এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বিএনপির নেতাকর্মীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম জিয়া বলেন, জাহিদুর রহমান শুধু দলের কাছে নয়; তিনি জাতির সঙ্গে বেঈমানি করেছেন।

বিএনপির আরেক নেতা আলম আক্ষেপ করে বলেন, হালুয়া রুটির জন্য তিনি বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশ উপেক্ষা করে শপথ নিয়েছেন।

ওয়ার্কার্স পার্টির সদস্য বাবলু বলেন, ক্ষুদিরাম, প্রীতিলতা সেন কিংবা ইলা মিত্রের মতো নয় জাহিদুর রহমান। তিনি সুযোগ সন্ধানী।

কমিউনিস্ট পার্টি পীরগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু সায়েম বলেন, বিএনপি যে আদর্শিক রাজনৈতিক দল নয়। শপথগ্রহণের মধ্যে দিয়ে জাহিদ তা দেখিয়ে দিলেন।

সাধারণ মানুষও এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বীরহলী গ্রামের কৃষক ইউসুফ আলী ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, এসব সুযোগ সন্ধানী দিয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণ হয় না। তারা শুধু সুযোগের অপেক্ষায় থাকে।

সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সেলিনা জাহান লিটা বিএনপি নেতা জাহিদের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলন ঘটাতে তিনি শপথ নিয়েছেন।

বিএনপি এই নেতা শপথ নেয়ার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে।

দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি ও একাদশ সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত সংসদ সদস্য সুলতান আহম্মেদ মনসুরের হাত ধরে জাহিদুর রহমান জাহিদ দলে নির্দেশ অমান্য করে শপথ নিলেন। কেউ বলছেন আত্মীয়তার সুবাদে ঢাকার একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মালিক তাকে শপথ নিতে সহায়তা করেছেন।

জানা গেছে, জাহিদুর রহমান জাহিদের বাবা প্রয়াত মোবারক আলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তবে জাহিদ ছাত্রজীবন থেকে বিএনপির সঙ্গে সম্পৃক্ত। বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলে তিনিই একমাত্র ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।