ঠাকুরগাঁওয়ে ভুয়া দলিলের প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত ৬

ঠাকুরগাঁওয়ে ভূল্লীতে টাকার বিনিময়ে ভুয়া খাজনা খারিজ করে দলিল সম্পাদনার সময় বাধা দিতে গেলে ভূমিদূস্যুদের হামলার শিকার হয়েছেন ৫ জন নারী ও ১ জন পুরুষ।

এ সময় আহতদের উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করান স্বজনরা। আহতরা হলেন, সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের কোনপাড়া গ্রামের ওবায়দুর রহমান এর স্ত্রী আনোয়ারা, আব্দুল আলীর স্ত্রী রাবেয়া, রেজানুল হক এর স্ত্রী রশিদা, ইসমাইল, অর্পণা ও জমিলা।

১৫ জুন বৃহস্পতিবার বিকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ভূল্লী সাব রেজিস্ট্রার অফিসে এ হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা যায়, আউলিয়াপুর ইউনিয়নের কোন পাড়া গ্রামের মৃত. সমির উদ্দীন খাঁ এর ছেলে সাফির খাঁ এর সন্তানরা দীর্ঘদিন থেকে পৈত্তিক সম্পত্তি ভোগদখল করে চাষাবাদ ও বসতবাড়ি ব্যবহার করে আসতেছে। এমতাবস্থায় একই বংশের মনছুর আলীর ছেলে ইয়াকুব আলী টাকার বিনিময়ে ভুয়া খাজনা খারিজ করে পরিকল্পিতভাবে স্থানীয় প্রভাবশালীদের কাছে কম দামে জমি বিক্রি করে দিচ্ছেন। বুধবার বিকালে স্থানীয় দুলাল নামে এক ব্যক্তির কাছে ৩৬ শতক জমি ভূল্লী সাব রেজিস্ট্রার অফিসে দলিল করতে গেলে বাধা দেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা এ সময় তাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে হামলা চালায় ইয়াকুব ও তার সহযোগীরা। এ সময় আহতদের উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করান স্বজনরা। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা গেছে। একটি সরকারি অফিসে এ ধরনের হামলা ন্যাক্কারজনক।

ভুক্তভোগী রশিদা জানান, আমরা গরিব মানুষ, আমাদের কেউ নেই। ইয়াকুব টাকা বিনিময়ে ভুয়া খাজনা খারিজ করে পানির দামে জমির দলিল করে দিচ্ছেন প্রভাবশালীদেরকে। আমি বিষয়টি জানতে পেরে সাব রেজিস্ট্রার অফিসে গেলে তারা আমাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে হামলা চালিয়ে পালিয়ে যায়। আমরা চরম আতংকের মধ্যে আছি।

আরেক ভুক্তভোগী জুবায়দুর বলেন, ইয়াকুব টাকার বিনিময়ে সব করতেছে। সে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের কাছে ভুয়া কাগজ পত্র বানিয়ে জমি বিক্রি করে দিচ্ছেন। এই অবস্থা হলে আমরা কেউ বাঁচতে পারবো না। তারা আমাদের মেরে ফেলবে এবং জোরপূর্বক ভাবে জমি দখল করবে। আমরা প্রশাসনের কাছে সহযোগিতা ও সুষ্ঠু বিচার চাই।

ভূল্লী সাব রেজিস্ট্রার এর কর্মকর্তা সফি আকরামুজ্জামান জানান, অফিসের বাইরে কী হয়েছে আমি জানি না। তবে মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে ঐ দলিল পাস করা হয়নি।

তিনি আরো জানান, ভুয়া কাগজ পত্র দিয়ে জমির দলিল করার কোন সুযোগ নেই। এই ধরনের কোন প্রমাণ পেলে যেই জড়িত থাকবে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ভূল্লী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি), আতিকুর রহমান জানান, ভূল্লী সাব রেজিস্ট্রার অফিসে জমি সংক্রান্ত মারামারির ঘটনায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।