ঠাকুরগাঁওয়ে ভূট্টা চাষে কৃষকের বাজিমাত : ভাল ফলনের সম্ভাবনা

উত্তরের সীমান্তবর্তী অর্থনৈতিক সম্ভাবনাময় জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে দিন দিন ভুট্টার আবাদ বাড়ছে। এবার দাম ভাল পাওয়ায় ভুট্টা চাষে ঝুকছে কৃষকেরা।

ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে জানা যায়, আলফা সীডস্ ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানীর আগাম রকেট-৫৫ জাতের ভূট্টার চাষ করে অধিক লাভের আশা করছেন চাষীরা। উচ্চ ফলনশীল ও গাছ মজবুত হওয়ায় এ জাতের ভূট্টা চাষে বেশি আগ্রহী হচ্ছেন তারা। আর কিছুদিনের মধ্যে ভূট্টা কর্তন শুরু হবে। প্রতি একরে ১৬০ থেকে ১৭০ মন ফলনের প্রত্যাশা করছেন কৃষকেরা।

জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও সদর উপজেলার ভূল্লী, নারগুন, মোহাম্মদপুর, চিলারং, বেগুনবাড়ী, সালন্দর, রাণীশংকৈল উপজেলার ধর্মগড়, কাশিপুর, হরিপুরের তালতলা, চৌরঙ্গী, ডাঙ্গীপাড়া, পাহাড়গাঁও, বীরগড়ে আগাম রকেট ৫৫ জাতের ভূট্টার মাঠ ঘুরে দেখা যায় সবুজে ছেয়ে গেছে। কিছু গাছে মোচা পরিপক্ক হচ্ছে। এবার চাষিরা ভালো ফলনের আশা করছেন। ধানের চেয়ে কম খরচে হয় ভুট্টার চাষ।

একদিকে খরচ কম অন্যদিকে উৎপাদনে ধানের চেয়ে ভুট্টার ফলন প্রায় দ্বিগুণ। প্রতি বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষে কৃষকের খরচ ২২ থেকে ২৪ হাজার আর বিঘা জমিতে ভূট্টার দাম লাগে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা। কৃষি বিভাগের তথ্য মতে জেলায় চলতি বছর ভূট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ৩৩ হাজার ৫শ হেক্টর নির্ধারণ করা হলেও চাষ হয়েছে ৪০ হাজার হেক্টরেরও বেশি জমিতে। আবহাওয়া অনূকুলে ও পোকার আক্রমন কম থাকায় ভালো ফলনের আশা কৃষি বিভাগের। ঠাকুরগাঁও সদর ভূল্লী থানা কচুবাড়ী গ্রামের ভূট্টা চাষী ইউসুফ বলেন, প্রতি বছর বিভিন্ন কোম্পানীর ভুট্টা আবাদ করলেও এবার আলফা সীডস্ ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানীর আগাম রকেট ৫৫ জাতের ভূট্টা চাষ করে অধিক লাভের আশা করছি।

রায়পুর ইউনিয়নের সামসুজ্জুহা বলেন, রকেট ৫৫ জাতের ভূট্টার আগা গোড়া সব সমান। ভূট্টার দানাও বেশ বড়। সে কারণে দেখে মনে হচ্ছে আমরা যে পরিমাণ ফলনের আশা করিছিলাম তার চেয়েও বেশি হতে পারে। আলফা সীডস্ ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানীর মার্কেটিং অফিসার আব্দুস সালাম বলেন, শুধু ঠাকুরগাঁও নয় সারাদেশে আমরা ভূট্টার বীজ সর্বরাহ করা হয়েছে। রকেট ৫৫ জাতের ভূট্টার চাহিদা সবচেয়ে বেশি। চাষিরা একরে ১৮০ মন পর্যন্ত ফলন পাচ্ছেন। আশা করি এ বছরের তুলনায় আগামী বছর রকেট ৫৫ জাতের ভূট্টার চাহিদা বৃদ্ধি পাবে।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) মো: আলমগীর হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে ঠাকুরগাঁও জেলার পাঁচ উপজেলাতেই ভূট্রা আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। চাষিরা বিভিন্ন জাতের আগাম হাইব্রীড জাতের ভূট্টার চাষ করেছেন। চাষিরা ভূট্টা চাষে বেশি লাভবান হওয়ায় আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষি বিভাগ থেকে যাবতীয় পরামর্শ ও সেবা প্রদান করা হয়েছে। এ বছরও ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়ে কৃষকেরা নার্য্য মূল্য পাবেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।