ডিআইজি মিজান পুলিশের খুবই সৎ কর্মকর্তা : আইনজীবী

সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পুলিশের ডিআইজি মিজানকে তার আইনজীবী সৎ কর্মকর্তা বলে দাবি করার পর হাইকোর্ট বলেছেন, সে (মিজান) বেপরোয়া একজন পুলিশ অফিসার। পুলিশের ভাবমূর্তি পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে।’

সোমবার দুপুরে ডিআইজি মিজানের আগাম জামিনের আবেদনটি শুনানির জন্য উঠলে তার আইনজীবী মোমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী হাইকোর্টকে বলেন, ‘আবেদনকারী (ডিআইজি মিজান) পুলিশের খুবই সৎ কর্মকর্তা। তিনি বিভিন্ন সন্ত্রাসী হামলা বিশেষ করে জঙ্গি হামলা প্রতিরোধ এবং জঙ্গি নির্মূলে সফলতার সাথে কাজ করেছেন। শান্তি মিশনেও তার উজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে। দেশের জন্য গৌরব অর্জন করেছেন, অনেক পুরস্কারও পেয়েছেন। পুলিশে তার অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে।’

ডিআইজি মিজানের সম্পদের হিসাব তুলে ধরে এই আইনজীবী বলেন, ‘তিনি পুলিশের যে উচ্চ পদে ছিলেন, সে বিবেচনায় তার সম্পদ অসঙ্গতিপূর্ণ বলে মনে হচ্ছে না। তিনি অত্যন্ত সৎ এবং দক্ষ একজন পুলিশ কর্মকর্তা। তাকে জামিন দিলে তিনি পালিয়ে যাবেন না।’

এ সময় হাইকোর্ট বলেন, ‘সে অত্যন্ত (ডেসপারেট) বেপরোয়া একজন পুলিশ অফিসার। সে (মিজান) পুলিশের ভাবমূর্তি পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে। টিভিতে আমরা দেখেছি, (দুদকের একজন পরিচালককে) ঘুষ দেওয়ার ব্যাপারে সে ডেসপারেট বক্তব্য দিয়েছে। তিনি শুধু নিজের সংস্থা নয়, আরও একটি সংস্থার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন।’

এরপর ডিআইজি মিজানের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে সোমবার দুপুরে আদেশ দেন হাইকোর্ট।

হাইকোর্ট তার আদেশে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পুলিশের এ উপ-মহাপরিদর্শককে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন। সেই সাথে তাকে পুলিশের হেফাজতে নিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা মহানগর বিশেষ জজ আদালতে হাজির করার আদেশ দেওয়া হয়। এসময় আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

এই আদেশের পর হাইকোর্ট কক্ষে বসে থাকেন মিজান। এরপর বিকেল ৫ টা ৫০ মিনিটে তাকে হাইকোর্ট থেকে নিয়ে যায় শাহবাগ থানা পুলিশ।

৩ কোটি ৭ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও ৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগে গত ২৪ জুন মিজানুরের বিরুদ্ধে এ মামলাটি করে দুদক। এ মামলায় মিজানুর রহমান, তার স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্না, ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান ও ভাগনে পুলিশের কোতোয়ালি থানার এসআই মো. মাহমুদুল হাসানকে আসামি করা হয়। এরপর এ মামলায় আগাম জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন মিজানুর রহমান।

মিজানুর রহমান ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বিয়ে গোপন করতে নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করানোর অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে। এছাড়াও একজন সংবাদপাঠিকাকে প্রাণনাশের হুমকি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে মিজানুরের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করা হয়।

নারী নির্যাতনের অভিযোগে গত বছরের জানুয়ারিতে তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়। সর্বশেষ দুদক কর্মকর্তাকে ঘুষ লেনদেনের ঘটনার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিজানকে সাময়িক বরখাস্তের প্রস্তাব রাষ্ট্রপতির অনুমোদন করেন।