ডিমলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে কর্মকর্তা ও অফিস সহকারীর বিরুদ্ধে অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগ

ডিমলা প্রতিনিধি, নীলফামারী : নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মহসীন সরকার ও অফিস সহকারী গোলাম সারোয়ারের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দূনীর্তির অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন অভিযোগের সূত্র ধরে সরজমিনে খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে ,উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সংশ্লিষ্ট উক্ত কর্মকর্তা উপজেলার ক্লিনিক্যাল ও নন ক্লিনিক্যাল দপ্তরগুলি দেখভাল করছেন। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, তিনি যোগদানের পর থেকেই কর্মচারীদের সাথে ভালো ব্যবহার না করে সব সময় রুঢ় ব্যবহার করে আসছেন অফিসের পিয়ন থেকে শুরু করে অধস্তন প্রায় সকলে কর্মচারীদের সাথে। শুধু তাই নয় তিনি অফিস সহকারীর মাধ্যমে কর্মচারীদের বিভিন্ন বিল যেমন-টিএ বিল, বন্ধাকরণ বিল, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকাদের ডেলিভেরী রোগীর বিল, কপারটি, ইমপ্লান্টসহ বিভিন্ন আনুসাঙ্গিক বিলের বিপরীতে টাকা উত্তোলন করে তা কমিশন বা উপঢৌকন না নিয়ে কাউকেই তাদের টাকা পরিশোধ করছেন না বলে বিস্তর অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি রংপুরে অবস্থান করায় ঠিক মতো অফিস কার্যালয়েও আসেন না। কোন দিন বেলা সাড়ে ১২ টায় এসে আবার ডিমলা সৌমী গাড়ী ধরে ৩ টায় রংপুরে চলে যান। আবার কোন দিন বিকালে এসে সন্ধায় চলে যান। প্রায় দিন তিনি অফিস ফাঁকি দিয়ে কোন মতে চালিয়ে যাচ্ছেন অফিসের কার্যক্রম। এতে করে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন অধীন্যস্ত কর্মচারীরা ও সেবা গ্রহীতা আগত রোগীরাও।

নাম প্রকাশে অনৈচ্ছুক বেশকিছু পরিববার কল্যান পরিদশির্কা এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, আমাদের পাওনা বিভিন্ন ধরনের বিলগুলি উত্তোলন করে অফিস সহকারী গোলাম সারোয়ার দীর্ঘদিন তার পকেটেই রেখে দেন। তারপর অনেকটা ঝগড়া বিবাদ করেই কমিশন কাটিয়ে নিয়ে ধীরে ধীরে টাকাগুলি পরিশোধ করেন। তারা জানান, গত এক সপ্তাহ পূবে আমাদের এফডাবিøউসিতে ডেলিভেরী রোগীদের বাচ্চা প্রসবের পর রোগীদের ঔষধ বাবদ রোগী প্রতি ৩’শ টাকা হারে বিল উত্তোলন করে সেই টাকা আমাদের কাউকেই এখন পর্যন্ত না দিয়ে পরে দিবো বলে অমাদের সকলকে তাড়িয়ে দিয়েছেন। ইতিপূর্বে এ ধরনের কোন বিল আমরা না পেলেও গত এক বছরের বিল অফিস সহকারী গোলাম সারোয়ার প্রায় দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন বলে আমরা জানতে পারি। কিন্তু টাকা উত্তোলন করে তা আমাদের হাতে না দিয়ে এ টাকা থেকে ৩০% হারে কমিশন দাবী করে বলেন আমি আপনাদের টাকা খরচ করে ফেলেছি, পরে আপনাদেরকে দেওয়া হবে আমার সময় মত। অভিযোগের সুরে এফডাবিøউভিগণ জানান, আমাদের টাকা তিনি কেন খরচ করবেন কিংবা কেনই বা পকেটে রেখেই কমিশন দাবী করবেন ? এটা আমাদের জানা নেই। তবে এ ক্ষেত্রে কর্মকর্তার ইশারা থাকতে পারে বলেও ইঙ্গিত করেন তেনারা। অভিযোগে উঠে আসে অফিস সহকারী গোলাম সারোয়ারের বিরুদ্ধে। তিনি যোগদানের পর থেকেই সিজারিয়ান বন্ধাকরণ রোগীদের মাঝে একটি করে শাড়ী দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি তা না দিয়ে ঐ টাকা আত্মসাৎ করে চলেছেন বীরদর্পে। প্রত্যেক টিএ/ডিএ বিলের জন্য তিনি কমিশন নিচ্ছেন ৩০-৩৫% হারে। বন্ধাকরন রোগী প্রতি ২৬’শ ৪০ টাকা বরাদ্দ থাকলেও তিনি মাত্র ২ হাজার টাকা দিয়ে বিদায় করছেন সহায় সম্বলহীন গরীব রোগীদের। সূত্র ধরে আরো জানা যায়, তোকদিরা নামের এক ভিজিটরের একটি টিএ বিলের ২৮’শ টাকা উত্তোলন করে অফিস সহকারী সারোয়ার ৮’শ টাকা কমিশন কেটে নিয়ে ২ হাজার টাকা দেওয়ায় ভিজিটর এখনও ঐ টাকা নেননি। এভাবে কর্মচারীদের বিভিন্ন ফান্ডের লাখ লাখ উত্তোলন করে অফিস সহকারী সারোয়ার আলম তা কর্মচারীদের হাতে না দিয়ে হয়রানী করছেন বলেও বেশ কিছু কর্মচারী অভিযোগ করেছেন। এ সব কিছু অনিয়ম-দূর্নীতির সাথে যুক্ত রয়েছেন উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মহসীন সরকার বলে জানা গেছে। এ ব্যাপারে উক্ত অফিস সহকারী গোলাম সারোয়ারের সাথে মুঠোফোনে যোগযোগ করা হলে তিনি বিভিন্ন অনিয়ম-দূর্নীতির কথা অস্বীকার করে উক্ত ডেলিভেরী রোগীদের বিলের টাকা উত্তোলন করেছেন বলে স্বীকার করেন। তিনি বলেন , এ বিষয়ে আমি আপনার সাথে পরে কথা বলবো। একই ভাবে পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মহসীন সরকার জানান, আমি টাকা উত্তোলনের ব্যাপারে বাইরের লোককে জানাতে পারি না । এটা আমাদের অভ্যন্তরিন ব্যাপার।