দেশে একজোড়া জুতার দামে ১০টি গরুর চামড়া

দেশে চামড়ার দাম গত ছয় বছরে প্রতি বর্গফুটে ৪০ টাকা কমলেও অব্যাহতভাবে বেড়ে চলেছে চামড়াজাত পণ্যের দাম।

অন্যদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে গত দুই বছরের ব্যবধানে চামড়ার দাম কমেছে গড়ে প্রায় ২২ শতাংশ; কিন্তু জুতাসহ চামড়াজাত অন্যান্য পণ্যের দাম গড়ে বেড়েছে ৬০ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত।

জুতা, ব্যাগ, লেডিস ব্যাগ, মানিব্যাগ, বেল্ট তৈরির অন্যতম উপকরণ হচ্ছে কম দামের এ চামড়া। এগুলো দিয়ে জ্যাকেট, মোবাইল কভার এবং নামিদামি ফার্নিচারের আবরণও তৈরি হচ্ছে। সেসব বাই প্রোডাক্ট বা রূপান্তর পণ্য দেশে-বিদেশি আকাশছোঁয়া দামে বিক্রি হচ্ছে।

অথচ ধারাবাহিকভাবে কমিয়ে দেয়া এসব পণ্য তৈরির অন্যতম উপকরণ চামড়ার দাম। সর্বশেষ চলতি কোরবানির মৌসুমে ২২ বর্গফুটের একটি চামড়া বিক্রি হয়েছে ৭৫০ থেকে ৮৮০ টাকায়।

খাত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের দেয়া তথ্যমতে, দেশে পাওয়া বিভিন্ন আকারের গরু থেকে সাধারণত সর্বনিম্ন ১৮ বর্গফুট এবং সর্বোচ্চ ২৬ বর্গফুট চামড়া মেলে। কিন্তু মোটাদাগে গরুর চামড়ার গড় উৎপাদন হচ্ছে ২২ বর্গফুট।

আবার এক জোড়া উন্নতমানের জুতা তৈরি করতে সর্বোচ্চ ৩ বর্গফুট চামড়ার প্রয়োজন হয়। এ হিসেবে একটি গরুর চামড়া দিয়ে কমপক্ষে ৭ জোড়া জুতা তৈরি হয়। অন্যদিকে চামড়াজাত পণ্য বিক্রি করে এমন বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট ঘেঁটে দেখা গেছে, শুধু একটি কোমরের বেল্টের দামই আস্ত একটা গরুর চামড়ার দামের চেয়ে বেশি। আর একটি জুতার দামে কেনা যাচ্ছে ১০টি গরুর চামড়া।

এক জোড়া জুতার দাম গড়ে তিন হাজার টাকা দাম ধরলেও একটি গরুর চামড়ায় ব্যবসা হয় কমপক্ষে ২১ হাজার টাকা। দুই বছর আগে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের যে জুতা ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি হতো সেগুলোর দাম এখন ২ হাজার ৮৫০ থেকে ৩ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আর আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড কোম্পানিগুলোর জুতার দাম আরও বেশি। মোটাদাগে বলা যায়, চামড়ার স্যান্ডেল দুই হাজার আর জুতা তিন হাজার টাকার নিচে পাওয়া মুশকিল।