নদী শুকিয়ে উঠে এলো গ্রাম!

লিমিয়া নদীতে বাঁধ দেয়া হয়েছিল তিন দশক আগে। দীর্ঘ খরায় নদীর পানি শুকিয়ে গেছে। আর তাতেই বেরিয়ে এসেছে হারিয়ে যাওয়া এক গ্রাম।

স্পেন-পর্তুগাল সীমান্তের কাছে লিমিয়া নদীতে হঠাৎ ভেসে উঠেছে বাড়ির ছাদ। অথচ কিছুদিন আগেও এখানে ছিল অথৈ জল।

স্পেন-পর্তুগাল সীমান্তের কাছে কনচেলো ডি লোবিওস অঞ্চলে লিমিয়া নদীতে বাঁধ তৈরি হয়েছিল ১৯৯০-এর দশকে। বেশ কয়েক বছর সেই এলাকায় বৃষ্টি না হওয়ায় ধীরে ধীরে জেগে উঠছে নদীর অতলে ঘুমিয়ে থাকা এক গ্রাম। প্রাচীনকালে গ্রামটির নাম ছিল আচেরেদো। তবে এখন কাদামাখা বাড়িঘর দেখে অনেকেরই মনে হচ্ছে এটি যেন ভৌতিক গ্রাম।
আচেরেদো গ্রামে খরার কারণে পানি কমে যাওয়ায় পানির নীচে থাকা একটি গাছ হঠাৎ বেরিয়ে এসেছে।

১৯৯২ সালে বন্যায় তলিয়ে গিয়েছিল পুরো এলাকা। তখনই বাঁধ দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল আলটো লিন্ডোজো নামের বিশাল এক জলাধার। এখন ভেসে উঠছে বাড়ি-ঘর, মাত্র ১৫ ভাগ পানি নিয়ে জলাধারটিকেও দেখে মনে হচ্ছে যেন ছোট্ট এক পুকুর।

লোবিওস কাউন্সিলের মেয়র মনে করেন, গত কয়েক মাস, বিশেষ করে জানুয়ারিতে দেখা দেয়া ভয়াবহ খরার কারণেই শুকিয়ে গেছে লিমিয়া নদীর পানি, আর পানি হঠাৎ কমে যাওয়াতেই ভেসে উঠেছে প্রাচীন গ্রামটি।

খরার কারণে লিমিয়া নদীর এখন এমন অবস্থা যে পর্তুগাল সরকার গত ১ ফেব্রুয়ারি এক নির্দেশে বলেছে, বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং চাষাবাদে সেচ অব্যাহত রাখতে এখন যেন কেউ আলটো লিনডোসোসহ ছয়টি বাঁধের পানি ব্যবহার না করেন।

ড্রোন থেকে তোলা ছবিতে ধারণা করা হচ্ছে ওখানে হয়ত একটা রেস্তোরাঁ ছিল। ঘরে বিয়ারের খালি বোতল ভর্তি ক্রেট আর ঘরের বাইরে পুরোনো একটা গাড়ি দেখা যাচ্ছে।

লিমিয়া নদীতে প্রাচীন এক গ্রাম ভেসে ওঠায় অনেক ট্যুরিস্ট যাচ্ছেন সেখানে। মাক্সিমিনো পেরেজ রোমেরো গ্রামের একটি বাড়ি দেখে বললেন, ‘‘মনে হলো আমি যেন কোনো পুরোনো ছবি দেখছি। চারপাশ কেমন বিষন্ন।’’

পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, স্পেনের জলাধারগুলোতে এখন ধারণক্ষমতার মাত্র ৪৪ শতাংশ পানি রয়েছে। গত দশকের ৬১ শতাংশের তুলনায় তা অনেক কম। তবে ২০১৮ সালের খরার সময় অবশ্য পানি আরো কমে গিয়েছিল।
সূত্র: ডয়চে ভেলে।