পরিস্থিতি বিবেচনায় নভেম্বরে এসএসসি, ডিসেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা

করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আগামী নভেম্বরে এসএসসি ও ডিসেম্বরে এইচএসসি এবং সমমানের পরীক্ষার্থী নেওয়ার চিন্তা রয়েছে। যদি পরীক্ষা নেয়া না যায় তবে, অ্যাসাইনমেন্ট ও সাবজেক্ট ম্যাপিং করে ফল প্রকাশ করা হবে। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন।

শিক্ষামন্ত্রী জানান, চলতি বছরের এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট দেয়া হবে। এ ক্ষেত্রে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ১২ সপ্তাহে বিভাগভিত্তিক তিনটি বিষয়ে মোট ২৪ টি অ্যাসসাইনমেন্ট করতে হবে। আগামী ১৮ জুলাই থেকে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রম শুরু হবে। আর এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ১৫ সপ্তাহে বিভাগভিত্তিক নির্বাচিত তিনটি বিষয়ের ৬টি পত্রে মোট ৩০টি অ্যাসাইনমেন্ট দেয়া হবে। এসব অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিখন ফল মূল্যায়ন যাচাই করা হবে।

ডা. দীপু মনি আরও জানান, করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে ইতোমধ্যে প্রকাশিত সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের আলোকে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে এসএসসি ও ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এইচএসসি পরীক্ষা নেয়ার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। যদি পরীক্ষা না নেয়া যায় সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্টের ফল ও সাবজেক্ট ম্যাপিং করে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী আরও জানান, আমদের শিক্ষার্থীরা একদম প্রস্তুতি নিতে পারেনি। তাই আমরা তাদের প্রস্তুতি দিকে লক্ষ্য রেখে অ্যাসাইনমেন্টগুলো দিচ্ছি।

শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট কিভাবে মূল্যায়ন করা হবে সে বিষয়ে শিক্ষকদের নির্দেশনা দেয়া হবে। অ্যাসাইনমেন্ট ঠিকভাবে মূল্যায়ন হচ্ছে কিনা তাও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে দৈবচয়ন ভিত্তিতে নমুনা সংগ্রহ করে যাচাই করা হবে। শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন নিয়ে কোন অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।

শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা পরীক্ষা নেয়ার পরিকল্পনা করেছি। পরীক্ষাগুলো হবে শিক্ষার্থীদের গ্রুপভিত্তিক নির্বাচিত তিনটি বিষয়ের ওপরে। যদি নির্বাচিত বিষয়ের পরীক্ষাগুলো নেয়া যায় সেক্ষেত্রে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষায় প্রাপ্ত ফলের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হবে। আর পরীক্ষা নেয়া সম্ভব না হলে শিক্ষার্থীদের সাবজেক্ট ম্যাপিং ও অ্যাসাইনমেন্টের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পরিস্থিতি অনুকূল হলে সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে তিনটি বিষয়ে পরীক্ষার ভিত্তিতে, বাকি আবশ্যিক বিষয়গুলোর মূল্যায়ন হবে এসএসসি এবং জেএসসি পরীক্ষার বিষয় ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে। আর যদি পরীক্ষা নেয়া সম্ভব না হয় তাহলে অ্যাসাইনমেন্ট ও বিষয় ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হবে। অথবা শুধু বিষয় ম্যাপিংয়ের মাধ্যমেও মূল্যায়ন হতে পারে। সেটি পরে জানানো হবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা এবার মূল্যায়নের মাধ্যমেই শিক্ষার্থীদের ফলাফল দিতে চাই। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে খুব অল্প সময়ে পরীক্ষা আয়োজন করা হবে।

সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের বিষয়টি পরিস্কার করেন শিক্ষামন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জেএসসির ফলের ভিত্তিতে ও এইচএসসির পরীক্ষার্থীদের জেএসসি ও এসএসসির ফলের ভিত্তিতে সাবজেক্ট ম্যাপিং করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল উপস্থিত ছিলেন। এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো: মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব আমিনুল ইসলাম খান।