নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত এমএ হাসেমের স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিল

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজ (বিওটি) এর প্রয়াত প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং প্রাক্তন চেয়ারম্যান, দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান পারটেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং সাবেক সংসদ সদস্য এম এ হাসেম এর স্মরণে আজ নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে ভার্চুয়াল “স্মরণ সভা এবং দোয়া মাহফিল” অনুষ্ঠিত হয়।

সকাল ৯ টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত মরহুমের আত্মার মাগফিরাতের জন্য কোরআন খতমের আয়োজনের মাধ্যমে “স্মরণ সভা এবং দোয়া মাহফিল” অনুষ্ঠান শুরু হয়।

সকাল ১১ টায় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির জনসংযোগ অফিস এর পরিচালক এবং টিভি উপস্থাপক জনাব জামিল আহমেদ এর সঞ্চালনায় এম এ হাসেম এর স্মরণে তাঁর জীবনী নিয়ে আলোচনা সভা আরম্ভ হয়।

আলোচনা সভায় তাঁর আদর্শ ও কর্মময় জীবন নিয়ে আলোচনা করা হয় এবং বক্তারা তাঁর সাথে নানা স্মৃতি এর কথা তুলে ধরেন। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এবং এনএসইউ এর সদস্যরা তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন।

এসময় তাঁরা বলেন, এম এ হাসেম এর মৃত্যু এনএসইউ পরিবারের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। এই দুঃখজনক মৃত্যুর সাথে এনএসইউ তার সত্যিকারের একজন বন্ধুকে হারিয়েছে। নিঃসন্দেহে, তাঁর মৃত্যু এনএসইউ এবং সামগ্রিকভাবে জাতির জন্য একটি বড় ক্ষতি।

দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন মহাখালীর গাউছুল আজম মসজিদ এর খতিব বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা মাহবুবুর রহমান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে স্মরণ সভা এবং দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাউথ ইস্ট ব্যাংক লিমিটেড এর প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, এফবিসিসিআই এর প্রাক্তন চেয়ারম্যান এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এম. এ. কাসেম, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য, আজিম উদ্দিন আহমেদ, বেনজীর আহমেদ, মোঃ শাহজাহান, মিজ রেহানা রহমান এবং ইয়াসমীন কামাল।

এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রয়াত এম এ হাসেম এর বড় ছেলে সিটি ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান এবং পারটেক্স স্টার গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিল্পপতি আজিজ আল কায়সার, পুত্রবধূ সিটি ব্যাংক লিমিটেড এর পরিচালক তাবাসসুম কায়সার এবং দৌহিত্র আম্মান আল কায়সার।

এম এ কাসেম বলেন, তিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশের বেসরকারি শিল্পখাত অনেক এগিয়ে নিয়ে গেছেন। বাংলাদেশের বেসরকারি পর্যায়ে উচ্চ শিক্ষার বিস্তারে রেখেছেন অগ্রণী ভূমিকা। এজন্য বাংলাদেশের বেসরকারি খাত তথা বাংলাদেশ তাঁর কাছে চির ঋণী থাকবে। তিনি ছিলেন এনএসইউ তার সত্যিকারের একজন বন্ধু, এনএসইউ এর উন্নয়নে তাঁর অবদানের কথা সবাই সারা জীবন কৃতজ্ঞতাচিত্তে স্মরণ করবে।

আজিজ আল কায়সার বলেন, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ছিল আমার বাবার সব থেকে ভালবাসার জায়গা, তিনি সব সময় তাঁর সব কাজের মধ্যে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিকে সব থেকে গুরুত্ব দিতেন। আমি মনে করি, এখনও ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা, শিক্ষকবৃন্দ এবং কর্মকর্তাবৃন্দ সবাই সেই জিনিস গুলো মাথায় রেখে এই ইউনিভার্সিটিকে সামনের দিকে আরও অনেক দূরে মিলেমিশে এগিয়ে নিএ যাবে তা হলে তাঁর স্বপ্ন পূরণ হবে। তিনি যেমন পারিবারিক ভাবে ছিলেন সুখি তেমনি ছিলেন একজন সফল শিল্পউদ্যোক্তা। তিনি সব সময় সমাজ তথা দেশের এবং দেশের মানুষের সেবায় কাজ করে গেছেন। এজন্য তিনি নানা সমাজ সেবামূলক কাজে নিয়োজিত ছিলেন।

অধ্যাপক আতিকুল ইসলাম বলেন, নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি জানাব এম এ হাসেম এর কাছে গভীর ভাবে ঋণী। এই ইউনিভার্সিটির জন্ম পরিকল্পনা থেকে শুরু করে আজকের যে অবস্থান এবং আগ্রগতি সর্বক্ষেত্রে তাঁর অবদান অপরিসীম। তিনি খুবই বড় মাপের এবং বড় মনের একজন মানুষ ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন দূরদৃষ্টি সম্পন্ন, স্বচ্ছ দৃষ্টি এবং দৃড় চিত্তের মানুষ। তাঁর ছিল ঝুঁকি নেয়ার অসাধারণ ক্ষমতা যার জন্যে তিনি এত সফল হয়েছেন। আমি মনে করি, তাঁর কর্মদক্ষতা এবং তাঁর কাজের জন্য এদেশের মানুষের কাছে অনুস্বরণীয় আদর্শ হয়ে থাকবে।

ভার্চুয়াল “স্মরণ সভা এবং দোয়া মাহফিল” এ অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. ইসমাইল হোসেন, বিভিন্ন অনুষদ এর ডিন, শিক্ষকবৃন্দ এবং কর্মকর্তাবৃন্দ।

এছাড়াও ভার্চুয়াল “স্মরণ সভা এবং দোয়া মাহফিল” নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ এ সরাসরি সম্প্রচার এর মাধ্যমে সংযুক্ত ছিলেন দেশ বিদেশের বিপুল সংখ্যক অভিভাবক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।

এটি উল্লেখ্য যে, জনাব এম এ হাসেম বৃহস্পতিবার ২৪ ডিসেম্বর, ২০২০ ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন)। সর্বশক্তিমান আল্লাহ তায়ালার নিকট মরহুমের আত্মার মুক্তির জন্য এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের এই ক্ষতি সহ্য করার জন্য সাহস ও সমবেদনা জানানোর জন্য দোয়া কামনা করা হয়।