নামাজের সময় আল-আকসা মসজিদে হামলা ইসরাইলি বাহিনীর

ফিলিস্তিনের অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদে হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী।

শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) ভোরে ফজরের নামাজের সময় মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করে হাজার হাজার মুসল্লির ওপর অতর্কিত হামলা চালায় পুলিশ। বর্বরোচিত এ হামলায় শতাধিক ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

রমজানের শুরু থেকেই আল-আকসা মসজিদসহ পুরো অঞ্চলে উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত কয়েকদিন ধরেই ফিলিস্তিনের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। এতে বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছেন। এরই ধারাবাহিকতায় আল-আকসা মসজিদে অভিযান চালানো হয়।

মসজিদ সংশ্লিষ্টদের বরাতে আলজাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ভোরে ফজরের নামাজের জন্য মসজিদে জড়ো হন হাজার হাজার মুসল্লি। কিন্তু নামাজ শেষ হতে না হতেই অভিযান শুরু হয়। অভিযান চলে সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত। কয়েক ঘণ্টা ধরে মসজিদের আঙিনায় ও নামাজের স্থানে রাবার বুলেট, টিয়ার গ্যাস ও স্টান গ্রেনেড নিক্ষেপ করে ইসরাইলি পুলিশ ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী।

বেশ কয়েকটি দরজা দিয়ে প্রবেশ করে মসজিদের আঙিনায় হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী। পরে ছাদে উঠে মসজিদের উপাসকদের ওপরেও গুলি চালায়। এ ছাড়া আহতদের চিকিৎসার জন্য আসা চিকিৎসকদের সেখানে যেতে বাধাও দেয় তারা।

ফিলিস্তিনের গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এখানে চিকিৎসক, সাংবাদিক, মসজিদের স্বেচ্ছাসেবক এবং নারীদের লক্ষ্যবস্তু করে হামলা চালানো হয়েছে। আহতদের মধ্যে দুজন সাংবাদিকও রয়েছেন। এ ছাড়া এক শিশুকেও আটক করা হয়েছে।

ফিলিস্তিনের রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, অন্তত ১০০ জনকে মসজিদ থেকে উদ্ধার করে নিকটবর্তী হাসপাতালে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ইসরাইলিরা হামলা চালিয়ে যাওয়ায় আরও লোককে সরিয়ে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পূর্ব জেরুজালেমের আল-মাকাসেদ হাসপাতাল জানিয়েছে, আল-আকসায় আহত ৪০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুজন গুরুতর আহত।

পূর্ব জেরুজালেম এলাকাটি মুসলিম এবং ইহুদি উভয় ধর্মের কাছেই অত্যন্ত পবিত্র হিসেবে বিবেচিত। প্রায়ই ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে বড় সংঘাতের শুরু হয় এখান থেকে। গত বছর রমজানজুড়েই এ এলাকায় অস্থিরতা ছিল। এবারও সেই একই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে সংঘাতের ভিডিও। এতে দেখা গেছে ফিলিস্তিনিরা পুলিশের দিকে ইট ও পাথর ছুড়ে মারছে। অপরদিকে ইসরাইলি পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও স্টান গ্রেনেড মেরে বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা করছে। এতে একাধিক আন্দোলনকারী অসুস্থ হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট।