নারায়ণগঞ্জে ডিবি পরিচয়ে টাকা ও মোবাইল ছিনতাই

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে এক ব্যবসায়ী ও এক কুয়েত প্রবাসীকে তুলে নিয়ে ব্যাপক মারধর, টাকা ও মোবাইল ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) রূপগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

ভুক্তভোগীরা হলেন রূপগঞ্জের তারাব পৌরসভার রূপসী এলাকার মৃত আবদুল্লাহ ভূঁইয়ার ছেলে ব্যবসায়ী মনির হোসেন (৫৩) ও একই এলাকার মৃত তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে প্রবাসী রমজান ভূঁইয়া (৪৭)।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মনির হোসেন বলেন, বুধবার আমি ও আমার শ্যালক রমজান ভূঁইয়া যমুনা ব্যাংকের রূপসী শাখা থেকে দেড় লাখ টাকা উত্তোলন করি। উত্তোলনের পর টাকা নিয়ে অটোরিকশায় করে রূগগঞ্জ যাচ্ছিলাম জমি রেজিস্ট্রি করার জন্য। ব্যাংকের মাধ্যমেই পার্টিকে টাকা পরিশোধ করেছিলাম। আমাদের সঙ্গে রেজিস্ট্রি ফির জন্য দেড়লাখ ছিল। আমাদের অটোরিকশাটি গন্ধবপুর হাজীবাড়ি এলাকায় এলে একটি নোহা গাড়ি এসে আমাদের গতিরোধ করে। গাড়ির ভেতরে থাকা লোকজন নেমে প্রথমেই আমাকে ধরে বলতে থাকে ‘তগো অনেকদিন ধরে খুঁজতাছি, পাইতেছি না। তদের নামে ওয়ারেন্ট আছে। আমি তাদের কাছে ওয়ারেন্ট দেখতে চাইলে বলে, থানায় গিয়ে দেখবি।

তিনি আরও বলেন, এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে তর্কবিতর্ক শুরু হয়। একপর্যায়ে আমি এবং আমার শ্যালকের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। আমাদের জোর করে গাড়ি তোলার চেষ্টা করে আর আমরা গাড়িতে উঠি না। তারা পাঁচজন ছিল। আমাদের সঙ্গে না পেরে আমার শ্যালকের মাথায় বাড়ি দিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেয়। তখন আমরা তাদের সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে না পেরে গাড়িতে উঠে যাই।

গাড়িতে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের চোখ বেঁধে হাতে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে দেয়। তাদের সঙ্গে একটি ওয়্যারলেস ছিল। আমাদের গাড়ির ভেতরে চিপায় ফেলে দিয়ে বুকের ওপর পা দিয়ে রাখে। চোখ বাঁধা অবস্থায় আমাদের পেটাতে শুরু করে।

মনির আরও বলেন, আমরা তাদের বলছিলাম আমাদের মাইরেন না। টাকা নিয়ে আমাদের ছেড়ে দেন। এটা বলার পরও আমাদের মারতে থাকে। সাড়ে ১১টার সময় আমাদের গাড়িতে উঠানো হয়। ১২টা ৫০ মিনিটে গাউছিয়ার আধুরিয়া এলাকায় নিয়ে নামিয়ে দিয়ে বলতে থাকে, পিছন দিকে তাকাবি গুলি করে ফেলে দেবো। গাড়ির ভেতরে ফোনে বলতে থাকে, স্যার যে ইনফরমেশন দিছে এটা ভুয়া। তাদের সঙ্গে মাল নেই, ইয়াবা নেই। তখন ওইপাশ থেকে বলে, তাহলে ছেড়ে দাও। এদিক দিয়ে বলতে থাকে ছেড়ে দেবো। তাদের মধ্যে একজনের কথায় বোঝা গেছে সে চাঁপাইনবাগঞ্জের লোক।

কুয়েট প্রবাসী রমজান ভূঁইয়া বলেন, তারা ড্রাইভারসহ ছয়জন ছিল। তারা প্রথম থেকেই আমাদের সঙ্গে রূঢ় আচরণ করতে থাকে। যা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। তারা সবাই স্বাভাবিক পোশাকে ছিল। শুধু দুজনের পরনে ডিবির কটি ছিল। বিশ্রী ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। আমাদের সঙ্গে থাকা টাকাসহ দুটি মোবাইল নিয়ে গেছে তারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) তারিকুল ইসলাম বলেন, আমি ব্যস্ত আছি পরে কথা বলবো।

রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম সায়েদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাকেও পাওয়া যায়নি।

নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সি সার্কেল) আবির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকেও পাওয়া যায়নি।