নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী) নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই জাল প্যানেলে কাজী নিয়োগ

করে নি কোনো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির প্রকাশ, বসে নি উপদেষ্টা কমিটির সভা। তবুও কাজী সেজে বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রি করে যাচ্ছেন শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার চককাউরিয়া গ্রামের রাফিউল ইসলাম। ঘটনাটি অবিশ্বাস্য হলেও সত্য। এ নিয়ে চলছে ব্যাপক সমালোচনা।

শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার ৪ নং তাতীহাটী ইউনিয়নে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিয়োগ প্রাপ্ত নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজী শামীমুর রহমান কর্মরত থাকাবস্থায় বিগত ১৫ই আগষ্ট ২০২২ ইং মৃত্যু বরণ করেন। ইউনিয়নের বিবাহ ও তালাক নিবন্ধনের জন্য সরকার শ্রীবরদী ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজী আবুতাহেরকে অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদান করেছেন।

কাজী আবুতাহের উক্ত ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত বিবাহ ও তালাক নিবন্ধন করে আসছেন, সাধারণ মানুষের কোনো ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে না। উপজেলা নিকাহ রেজিস্ট্রার নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব সাব- রেজিস্ট্রার শ্রীবরদী ও শেরপুর-৩ আসনের মাননীয় স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার একে এম ফজলুল হক চান, সদস্য উপজেলা চেয়ারম্যান এডিএম শহিদুল ইসলাম ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং উক্ত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এডভোকেট আব্দুর রউফ সহ সকলের সহি স্বাক্ষর ও সীল জাল করে শ্রীবরদী উপজেলার ৪নং তাতীহাটী ইউনিয়নের চককাউরিয়া এলাকার হামিদুল ইসলামের ছেলে মো. রাফিউল ইসলাম অত্র ইউনিয়নে নিকাহ রেজিস্ট্রার কাজী নিয়োগ এ-র ভুয়া জাল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখিয়ে।

গত ১৩ই ফেব্রুয়ারি ২০২৩ইং তারিখে নিয়োগ কমিটির মিটিং করে প্রার্থী বাছাই করে রেজিষ্ট্রেশন করে ২৩ই জুলাই ২০২৩ ইং তারিখে সাব রেজিস্ট্রার শ্রীবরদী অফিসের ২৭৭নং স্বারক মৃলে আইন মন্ত্রণালয়ে বিগত ২৭ই সেপ্টেম্বর ২০২৩ ইং তারিখে সচিব আইন ও বিচার বিভাগে প্যানেল জমা দিয়ে গত ৫ ই নভেম্বর ২০২৩ ইং তারিখে নিকাহ রেজিস্ট্রার নিয়োগ ইস্যু হলে ভুয়া জাল জালিয়াতির মাধ্যমে প্রস্তুত করা প্যনেলের ঘটনা জানাজনি হলে সাব- রেজিস্ট্রার শ্রীবরদী গত ৯ই নভেম্বর ২০২৩ ইং ভুয়া জাল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও জাল জালিয়াতির মাধ্যমে প্রস্তুত ভুয়া প্যানেলে ইস্যু কৃত নিয়োগ বাতিল এ-র জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দিয়েছেন।

ইস্যুকৃত নিয়োগ বাতিল করার জন্য ইতোমধ্যে আইন মন্ত্রণালয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন এবং জেলা শেরপুর কে নির্দেশ দিয়েছেন ভুয়া কাজী কে যোগ দান না করাতে। জেলা রেজিস্ট্রার শেরপুর অফিসে নিকাহ রেজিস্ট্রার পদে যোগ দান না করিয়াই জেলা রেজিস্ট্রার এ-র সহি স্বাক্ষর জাল করে মহাপরিদর্শক নিবন্ধন অফিসে ইন্ডেন্ট জমা দিলে তা জেলা রেজিস্ট্রার শেরপুর প্রতিবেদন দেওয়ায় ইন্ডেন্ট পাস করতে ব্যর্থ হয়ে নিজেকে কাজী দাবী করে মাইকিং করলে আইন মন্ত্রণালয়ের আদেশ ক্রমে জেলা রেজিস্ট্রার শেরপুর ও নিকাহ রেজিস্ট্রার কল্যান সমীতির মাধ্যমে মাইকিং করে জানানো হয়েছে যে উক্ত ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত বিবাহ ও তালাক অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত কাজী আবুতাহের সাহেবের মাধ্যমে বিবাহ ও তালাক নিবন্ধন করতে অনুরোধ করেছেন।

উল্লেখ্য যে অভিযুক্ত রাফিউল ইসলাম সহ একটি জাল জালিয়াতির চক্র শেরপুর জেলায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি না দিয়েই এবং নিয়োগ কমিটির সদস্যদর সহি সীল জাল করে ভুয়া প্যানেল প্রস্তুত করে ইতি মধ্যে কাজী নিয়োগ করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এবং ভুয়া প্যানেলে নিয়োগ প্রাপ্ত কাজী বিবাহ ও তালাক নিবন্ধন করছে এমনকি আলিয়া মাদ্রাসা পড়াশোনা না করে অন্য লোকের শিক্ষা গত যোগ্যতার সনদ পত্র ব্যবহার করে নিজেকে কাজী দাবী করে বিবাহ ও তালাক নিবন্ধন করে আসছে।

ভুক্তভোগীরা জানান, এদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দিয়ে কোনো প্রতিকার পাওয়া যায় নাই। এই জাল জালিয়াতির চক্র খুবই প্রভাবশালী হওয়ায় অবাধে বৈবাহিক অপরাধ করে আসছে। দেনমোহর কমানো বাড়ানো এবং বিবাহ ও তালাক নামা গায়েব করে দেওয়ায় আদালতে মামলা চলমান ও তদন্ত চলছে, এই চক্র শেরপুর জেলায় বাল্য বিবাহ ও বিভিন্ন বৈবাহিক অপরাধ করিয়া আসছে বলেও জানান তারা।

মুসলিম বিবাহ ও তালাক নিবন্ধন বিধি মালা মোতাবেক সরকারি কোষাগারে টাকা জমা দিয়ে সরকারি প্রেস থেকে বিবাহ ও তালাক নামা সংগ্রহ করার বিধান রয়েছে কিন্তু এই চক্র সেই মোতাবেক বিবাহ ও তালাক নামা সংগ্রহ না করে বাজারে ছাপানো বালাম বহি ব্যবহার করে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছ। এদের বিরুদ্ধে আইন গত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে এই পেশায় নিয়োজিত বৈধ কাজীদের দাবী।