নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সমালোচনা করা যাবে না : রিজভী

বর্তমান সরকারের ভোট ব্যবস্থার কড়া সমালোচনা করে এটিকে ‘ভাতের ব্যবস্থার’ সঙ্গে তুলনা করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সমালোচনা করা যাবে না। সবকিছুর দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, অথচ এ নিয়ে কিছু বলা যাবে না, মুখ খোলা যাবে না। কাল খবরের কাগজে পড়লাম এক বৃদ্ধ মা বলেছেন, এক মুঠো ভাত পানির মধ্যে মিশিয়ে তিনবেলা খান তিনি, দেশে কী ভয়ানক হাহাকার চলছে। কিন্তু কেউ এর প্রতিবাদ করতে পারবে না।

প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ইঙ্গিত করে রিজভী বলেন, আপনার (শেখ হাসিনার) অবৈধ ভোট ব্যবস্থার মতোই ভাতের ব্যবস্থা। আপনার ভোট ব্যবস্থা হচ্ছে রাত্রিবেলা ভোট দেওয়া। আপনার ভোট ব্যবস্থা হচ্ছে ভোটকেন্দ্রে ভোটাররা নয়, গরু-ছাগল যাবে। আপনার ভাতের ব্যবস্থাও তেমনই, যেখানে প্রতিদিন নিত্যপণ্যের দাম বাড়লেও কারো কিছু বলার সুযোগ নেই।

শনিবার (৫ মার্চ) সকালে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে রাজধানীর কেরাণীগঞ্জে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। কেরাণীগঞ্জ দক্ষিণ উপজেলা বিএনপি এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সিন্ডিকেটের হোতারা সবাই ক্ষমতাসীন দলের লোক। তারা সিন্ডিকেট করে নিত্যপ্রয়োনীয় দ্রব্যের দাম বাড়াচ্ছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

বিএনপির এ নেতা বলেন, আজকে নিপুন রায় চৌধুরীরা (বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য) কথা বলতে পারেন না। কথা বললেই কার্যালয়ের মধ্যে বন্দি থাকতে হয়। এটা কোন দেশ বানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, জনগণের আজ এটাই জিজ্ঞাসা? আপনি (প্রধানমন্ত্রী) ফ্লাইওভার দেখান, আপনি উড়াল সেতু দেখান, মেট্রোরেল দেখান। মেট্রোরেল-উড়াল সেতুর বিনিময়ে কি নারীর নির্যাতন? এসব উন্নয়নের ফুলঝুড়ি দেখিয়ে ১২-১৩ বছরে লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। ক্ষমতাসীনদের আত্মীয়-স্বজনরা আঙুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছেন। আর জনগণ যে অন্ধকারে ছিল সে অন্ধকারেই রয়ে গেছেন।

রিজভী বলেন, সমাবেশে আশার পর থেকেই আমরা যে পরিবেশ দেখতে পাচ্ছি দেশে গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় থাকলে এমন পরিবেশ থাকতো না। ফ্যাসিস্ট ও ডিক্টেটর সরকার ক্ষমতায় থাকলেই এমন পরিবেশ থাকে। আওয়ামী লীগ সরকার মনে করে তাদের বিরুদ্ধে সমালোচনা করা অন্যায়, রাষ্ট্রবিরোধী। আজ শনিবার বন্ধের দিন, এখানে একটা বিক্ষোভ সমাবেশ হবে, কিন্তু এখানে এসে আমার কাছে মনে হচ্ছে একটা ভয়ঙ্কর যুদ্ধ পরিস্থিতির প্রাঙ্গণে এসে উপস্থিত হয়েছি। যেন যে কোনো মুহূর্তেই যুদ্ধের দামামা বেজে উঠবে।

কেরাণীগঞ্জ দক্ষিণ উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুন রায় চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।