নুসরাত জানেন কিভাবে জনতার মন জয় করতে হয়

নায়িকা নুসরাত জাহানের প্রথম প্রচারসভা ছিল সন্দেশখালির সরবেরিয়া হাইস্কুল মাঠে, গত ২৩ মার্চ। তিনি নায়িকা, স্বভাবতই পর্দায় দেখা শিল্পীকে চাক্ষুষ করার ইচ্ছে তো জনতার থাকবেই। তাই ছিল উপচে পড়া ভিড়। ফলে কর্মিসভা পরিণত হয়েছিল জনসভায়।

সেখানে তাঁকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য ছিল নাচ-গানের আয়োজন। হাতজোড় করে গাড়ি থেকে নেমে এসে সেই শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলেন নুসরাত। তবে নায়িকা আসার পরে প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে নাচ-গান তখনই বন্ধ করে দিতে হয়। সে দিন ছিল তাঁর প্রথম দিনের প্রচারসভা। তাই একটু হলেও কি নায়িকার সপ্রতিভতায় খামতি ছিল?

যদিও নুসরাত জানেন, কী ভাবে জনতার মন জয় করতে হয়। সভার শেষ দিকে মাইক্রোফোন হাতে সরাসরি নেমে আসেন শ্রোতাদের মধ্যে। কথা বলেন উৎসাহী জনতার সঙ্গে। শুধু তা-ই নয়, হাত মেলান, ফ্লাইং কিসও করেন। উদ্বেলিত জনতাও ছুড়ে দেন ফ্লাইং কিস, তাঁদের প্রিয় নায়িকাকে। নুসরাত চেষ্টা করছিলেন জনগণের সঙ্গে মিশে আরও কিছুক্ষণ কাটাতে। কিন্তু নিরাপত্তার কারণে তা আর সম্ভব হয়নি। তবে যেটুকু সময় ছিলেন, উঁচু মঞ্চে দাঁড়িয়ে নয়, দর্শকাসনের কাছাকাছি চলে এসে বক্তব্য রাখেন।

সেখানেই সেরে নেন লাঞ্চ। হালকা খাওয়াদাওয়া। ভাত, শুক্তো আর মুরগির মাংসের ঝোল। সেখান থেকে নুসরাতের গন্তব্য ছিল মিনাখা। আগের রাতেই প্রচণ্ড ঝড়বৃষ্টির কারণে সেখানকার প্যান্ডেল ভেঙে গিয়েছিল। তাই এক মেলাপ্রাঙ্গনে দাঁড়িয়েই তিনি বক্তৃতা দেন। কড়া রোদে দাঁড়িয়েই বহু মানুষ তাঁর বক্তৃতা শোনেন। সেখানে আবার মঞ্চ উঁচু হওয়ায় জনতার মধ্যে মিশে যেতে পারছিলেন না তিনি। তাঁকে মঞ্চে যে মালা পরানো হয়েছিল, সভাশেষে মঞ্চ থেকে নেমে তা জনতাকেই ফিরিয়ে দেন অভিনেত্রী। মহিলাদের সঙ্গে হাত মেলান, সেলফি তোলেন।

মিনাখার পরে হাড়োয়া স্কুল মাঠে যখন তিনি যান, ভিড় উপচে পড়ছে। সেখানে নুসরাত গানও করেন, ‘মন বলেছে আমার আজ সঙ্গে যাবে তোর…’ সঙ্গে সঙ্গে হাততালির জোয়ার। সন্ধে নাগাদ যান শাসনে। সেখানে অবশ্য ভিড় তুলনামূলক ভাবে কম ছিল। সভা শেষ করে ফিরে আসেন কলকাতায়।

পর দিন ২৪ তারিখে প্রথম প্রচারসভা ছিল হিঙ্গলগঞ্জে। সুন্দরবনের লাগোয়া প্রত্যন্ত এলাকা। সে দিন নুসরতকে অভ্যর্থনা জানাতে স্থানীয় মহিলারা চলে এসেছিলেন একেবারে ঢাকঢোল নিয়ে। সভাশেষে অভিনেত্রী দুপুরের খাওয়া সারেন বাদুড়িয়ায় গিয়ে। সেখানকার পুরপ্রধানের বাড়িতে। সে দিনের মেনুতে ছিল শুক্তো, টক ডাল, ইলিশ মাছ ভাজা, দেশি মুরগির পাতলা ঝোল আর টক দই। ওখান থেকে বেরিয়ে আসার পথে নায়িকাকে ঘিরে ধরেন অসংখ্য মহিলা ভক্ত। এক মায়ের কোল থেকে তাঁর ছোট্ট সন্তানকে কোলে তুলে আদর করেন নুসরত।

মাটিয়ার সভার পর ছিল সে দিনের শেষ সভা বসিরহাটের নৈহাটিতে, একটি ক্লাবের মাঠে। এখানেও তাঁর সেলফি তোলা বা অটোগ্রাফ বিলোনোয় খামতি ছিল না। এক নাবালিকা নুসরাতের সঙ্গে কিছুতেই সেলফিটা তুলে উঠতে পারছিল না। তখন কিশোরীর ফোন ধরে হাসিমুখে ছবি তুলে দেন নায়িকাই। শিখিয়েও দেন, ভাল সেলফি কী করে তুলতে হয়। চলে একটু খুনসুটিও। সভায় তো তিনি ফুলমার্কস পাবেন। এ বার বাকি পরীক্ষার ফল দেখা যাবে নির্বাচনের পরেই।