পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় মাদ্রাসা অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে সনদ ও বয়স জালিয়াতির অভিযোগ

পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মহিপুরে এক মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে পরিচয়পত্রের নির্ধারিত বয়সের সাথে, তার কর্মস্থলে দায়েরকৃত শিক্ষা সনদে উল্লেখিত বয়সের অমিল থাকার অভিযোগ উঠেছে।

এমনকি জাল শিক্ষা সনদ ব্যবহার করে বর্তমান কর্মস্থলে পদোন্নতি পেয়েছেন বলেও গুঞ্জন রয়েছে। তিনি উপজেলার মহিপুর থানার সদর ইউপির মোয়াজ্জেমপুর ছালেহিয়া আলিম মাদ্রাসা’র অধ্যক্ষ একেএম আবু বকর ছিদ্দিকি। কাম্য যোগ্যতা না থাকলেও শিক্ষা মন্ত্রনালয় কর্তৃক নিষেধাজ্ঞার নোটিশ অমান্য করে পদোন্নতিসহ কর্মস্থানে বহাল থাকার একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে তার বিরুদ্ধে। অনুসন্ধানে জানা যায়, জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী এ, কে, এম, আবু বকর ছিদ্দিকি জন্মগ্রহণ করেন ১লা মার্চ ১৯৬৪ ইং (০১/০৩/১৯৬৪) তারিখ। কিন্তু তার কর্মরত প্রতিষ্ঠানে দায়েরকৃত শিক্ষা সনদ অনুযায়ী, গত ১৯৭৪ ইং সালে তিনি দাখিল পরিক্ষায় দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হন, তথা মাত্র দশ (১০) বছর বয়সে তিনি দাখিল পাশের সনদ লাভ করেন। অপরদিকে ১৯৭৬ ইং সালে আলিম পরিক্ষা (রোল নং-১৯৫১) অংশগ্রহণ করেন এবং তৃতীয় বিভাগ এ উত্তীর্ন হন, তথা মাত্র বারো (১২) বছর বয়সে তিনি আলিম পাশের সনদ লাভ করেন। ১৯৮০ ইং সালে তিনি কামিল পরিক্ষায় ( হাদিস) তৃতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হন বলে তার শিক্ষা সনদে তথ্য পাওয়া যায়। এতে তার চাকুরির ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ নিয়ে দুর্নিতি ও জালিয়াতির সন্ধান মিলে। তিনি আলিম পরিক্ষায় (তৃতীয়’র) পরিবর্তে দ্বিতীয় বিভাগ ও কামিল (হাদিস এ তৃতীয়’র) পরিবর্তে, (ফিকাহ) পরিক্ষায় দ্বিতীয় বিভাগ, পাশের সন- ১৯৯৬ ইং জালিয়াতি করেছেন। যা দিয়ে মোয়াজ্জেমপুর ছালেহিয়া আলিম মাদ্রাসায় গত ০১লা জুন ১৯৮০ ইং তারিখে যোগদান করেন। এবং এই জাল সনদ ব্যবহার করে গত ১ লা সেপ্টেম্বর ১৯৮৫ ইং তারিখে এম, পি, ও ভুক্ত হন। এভাবে প্রতিটি স্থানে রয়েছে তার বয়স ও শিক্ষা সনদ জালিয়াতির ধুম্রজাল। বেসরকারী মাদ্রাসা শিক্ষা কর্মচারী বেতন সহকারি অংশ ও জনবল কাঠামো- ১৯৯৫ এর শিক্ষা মন্ত্রানলয়ের শাখা ১১ এর পরিপত্র মোতাবেক সকল পরিক্ষায় দ্বিতীয় বিভাগ বাধ্যতামুলক। এই অধ্যক্ষ এ,কে এম আবু বকর ছিদ্দিকির চাকুরিতে দাখিল করা শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদে একমাত্র দাখিল পরিক্ষায় দ্বিতীয় বিভাগ, এবং বাকি সনদগুলো তৃতীয় বিভাগ থাকা সত্তে¡ও, তিনি ২৩ শে জুন ২০০৮ ইং তারিখে উক্ত মাদ্রাসার অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন। অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেই তিনি মহা পরিচালক বরাবর এম,পি,ও সংশোধনের জন্য আবেদন করেন। গত ২৩ শে নভেম্বর ২০০৮ ইং তারিখে মহাপরিচালকের পক্ষে, অধ্যক্ষ ও শিক্ষক হিসেবে তাহার কাম্য যোগ্যতা না থাকায়, আবেদন নাখোচ করা হয়। এরপরেও অদৃশ্য শক্তির কারনে এখনো তিনি উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ হিসেবে বহাল রয়েছেন।

এ বিষয়ে অধ্যক্ষ এ কে এম আবুবক্কর সিদ্দিকি জানান, আমার সকল কাগজ ঠিক আছে। আমাদের সময় দাখিল পরীক্ষায় ঐ ধরনের সিস্টেম ছিল। আর আমার সাথে ব্যাক্তিগত সমস্যার কারণে একটি মহল এই অপপ্রচার চালাচ্ছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.মোখলেছুর রহমান জানান, এ বিষয়ে আমার কাছে কেউ লিখিত অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।