‘পরীমণি মদ্যপ ছিল, বোতল নিতে বাধা দেওয়ায় অভিযোগ’

পরীমণি ও তার সঙ্গীরা মদ্যপ অবস্থায় ঢাকা বোট ক্লাবে ঢুকেছিলেন। মদের বোতল বাইরে নিয়ে যেতে চাইলে বাধা দেওয়ায় পরীমণি ‘ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা’র অভিযোগ এনেছেন বলে দাবি করেছেন ক্লাবটির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও আবাসন ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ। আজ সোমবার গ্রেপ্তার হওয়ার আগে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার সময় এ দাবি করেন তিনি।

নাসির উদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘আমি কম্প্লিটলি ভিকটিম। এখানে যে ঘটনা বলা হচ্ছে সেগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। ঘটনার দিন ছিলাম। আমি ওই ক্লাবের একজন পরিচালক। আমি যখন বের হয়ে যাচ্ছি ওরা (পরীমণি ও তার বন্ধুরা) ঢোকে। তখন আমাদের সিকিউরিটি, আমাদের অফিসার, সেক্রেটারি কেউ উপস্থিত ছিলেন না। তারা না থাকার কারণে তারা (পরীমণি ও তার বন্ধুরা) যখন ঢোকে তখন খুব উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করছিলেন। তাদের সঙ্গে একটা ছেলে ছিল, তারা সবাই মদ্যপ অবস্থায় ক্লাবের ভেতর ঢোকে। ঢোকার পরে আমাদের বারের কাউন্টারে খুব দাবি ড্রিংকস ছিল, তারা জোর করে নেওয়ার চেষ্টা করে।’

নাসির উদ্দিন মাহমুদ আরও বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ, কারণ ওইযে আমি বাধা দিয়েছি। তারা তো নিতে পারেনি। তারা তো মেম্বার না। আমি জাস্ট তাদের বাধা দিয়েছি, এটা (ড্রিংকস) নেওয়া যাবে না। নিতে হলে তোমাদের কোনো অ্যাকাউন্টের অ্যাগেইন্সটে নিতে হবে, কারণ এটা বিক্রি যোগ্য না। এটা সাথে করে নিয়ে যাওয়ার জিনিস না। এটা এখানে বসে খেতে হবে। বাই দিস টাইম আমাদের বার এখন ক্লোজড। এরপরই সে উত্তেজিত হয়ে পড়ে। একটার পর একটা গ্লাস ভাঙতে শুরু করে। সে গালিগালাজ শুরু করে। আমাদের স্টাফরা তাকে (পরীমণি) থামানোর চেষ্টা করে। তাকে ওই ঘটনার আগ পর্যন্ত আমি চিনতাম না। ওই সময় আমি তাকে থামানোর চেষ্টা করি। তখন তার সঙ্গে যে ছেলেটা ছিল, সে এসে আমাকে চড়-থাপ্পড় দেয়। একটা গ্লাস মারে, আমার ঘাড়ে লাগে। এ অবস্থায় আমি আমার সিকিউরিটিদের নির্দেশ দেই, তারা তাদের (পরীমণিদের) উঠিয়ে নিয়ে যায়।’

নাসির বলেন, ‘বাই দিস টাইম সে অনেক ড্রিংকস করে ফেলেছিল। এটা আমাদের সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখবেন (সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে বলেন) যে, সে ড্রিংকস করা অবস্থায় গাড়িতে উঠতে পারছিল না। আর এটা পরের দিনই আমাদের ক্লাবের নিয়ম অনুযায়ী মাস্ট বি রেকর্ডেড। আমাদের কর্মকর্তারা বিষয়টি লিখিতভাবে দিয়েছে। রিপোর্টে পরিষ্কারভাবে লেখা আছে। কিন্তু আমার সাথে তার কিছুই হয়নি।’

এর আগে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সোমবার বেলা ১১টার দিকে সাভার থানায় নাসির উদ্দিনসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন পরীমণি। সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি) কাজী মাইনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এতে নাসির উদ্দিন ও তার বন্ধু অমির নাম উল্লেখ করে আরও চারজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। এর আগে সকালে রূপনগর থানার মাধ্যমে লিখিত অভিযোগ করেন পরীমণি।

মামলার প্রধান আসামি নাসির উদ্দিন মাহমুদসহ পাঁচজনকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর উত্তরার বাসা থেকে অভিযান চালিয়ে নাসির উদ্দিনকে আটক করা হয়। এ সময় তার বাসা থেকে মদ উদ্ধার করা হয়। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদ গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

ওসি কাজী মাইনুল ইসলাম বলেন,পরীমণি নিজে বাদী হয়ে মোট ছয়জনের নামে এ মামলা করেছেন। মামলা নম্বর- ৩৮।

গতকাল রোববার রাতে প্রথমে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাসে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিচার চান পরীমণি।