পাউরুটি কেক কেটে জাতির পিতার জন্মদিন পালনে দুই শিক্ষকের সাজা

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় দুই মাদরাসা শিক্ষকের সাজার বদলে এক বছর করে প্রবেশন সুবিধার রায় দিয়েছেন রাজশাহী বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনাল। মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ট্রাইব্যুনালের বিচারক জিয়াউর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।

প্রবেশন প্রাপ্তরা হলেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার বৈরতলা দাখিল মাদরাসার সুপার আব্দুস সালাম ও সহকারী শিক্ষক গোলাম কবির। আদালতের বেঁধে দেয়া শর্ত অনুযায়ী, এক বছরে তাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে নিজেরা পড়বেন, জানবেন এবং শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সেই গৌরবময় ইতিহাস জানাবেন। প্রবেশনকালীন সময়ে আসামীরা জাতির পিতার লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’ ও ‘আমার দেখা নয়াচীন’ এবং মুক্তিযুদ্ধের ওপর লেখা ‘একাত্তরের দিনগুলি’ ও ‘একাত্তরের চিঠি’ বইগুলো পড়বেন।

রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে- শর্ত ভঙ্গ করলে বা তাদের আচরণ সন্তোষজনক না হলে প্রবেশন আদেশ বাতিল হবে। অপরাধের শাস্তি হিসেবে ২০১৮সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২১/৩১ ধারায় প্রত্যেকে এক বছর করে সশ্রম কারাদন্ডসহ এক লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে এক মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড ভোগ করতে হবে।

তাদের প্রবেশনকালীন কর্মকান্ড পর্যবেক্ষণ ও আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রবেশন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বৈরতলা দাখিল মাদরাসার সুপার আব্দুস সালাম ২০২১ সালের ১৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালন অনুষ্ঠানে ১০টাকা দামের কেক কেটে শিক্ষার্থীদের খাওয়ান, হাসি-তামাশা ও ব্যঙ্গাত্মক উক্তি করেন। এ ঘটনাটি গোলাম কবির তার মোবাইল ফোনে ভিডিও লাইভ প্রচার করেন।

এ ঘটনায় আইন-শৃংখলা অবনতির আশঙ্কা একই বছরের ১৭ মার্চ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ইউনুস আলী গোমস্তাপুর থানায় ডিজিটাল আইনে ১১জনের বিরুদ্ধে মামণা করেন। পরে মামলায় জব্দকৃত বিভিন্ন আলামত ঢাকায় সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ১৬ সেপ্টেম্বর আদালতে ১১জনের বিরুদ্ধে চার্জশীট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। তবে ৯ আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় রায়ে তাদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।