পাবনার আটঘরিয়ায় পাটের বাম্পার ফলন

পাবনার আটঘরিয়ায় সোনালী আঁশ পাটের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা। উপজেলায় সোনালী আঁশ খ্যাত পাটের আবাদ বেড়েছে। এক সময়ের বিশ্বব্যাপী সমাদৃত সোনালী আঁশ পাটের গৌরবময় অতীত হারিয়ে গেলেও নতুন করে আবার পাটের অপার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। কয়েক বছর ধরে পাটের দাম ভালো পাওয়ায় পাট চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন পাট চাষিরা। ফলে ব্যাপক হারে এবছরেও পাট চাষ করেছেন তাঁরা।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকের মাঠে মাঠে চোখ জুড়ানো সবুজের সমারোহ। সবুজ পাতার সাথে দোল খাচ্ছে মাঠের পর মাঠ কৃষকের সোনালী আঁশ পাট।

পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় তোশা ও দেশি পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। এবছর আটঘরিয়া উপজেলায় ৫হাজার ১৬ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। পাট পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন চাষিরা। মৌসুমের শুরুতে বিভিন্ন খেতে ভালোফলন হয়েছে।

একদন্ত ত্রি-মোহন গ্রামের পাটচাষি ইউনুস আলী দুই বিঘা, হিদাকোল গ্রামের হামিদ হোসেন পাঁচ বিঘা, চৌবাড়ি গ্রামের মুকুল হোসেন ছয় বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। এবার পাট ভালো হয়েছে। এরকম থাকলে মোটামুটি ভাল লাভই হবে।

ফজলুর রহমান নামের আরেক পাট চাষি বলেন, একদন্ত, লক্ষীপুর, দেবোত্তর, মাজপাড়া, চাঁদভা ইউনিয়ন ও পৌর সভায় বেশিরভাগ এলাকায় পাট চাষ হয়। কিন্তু যখন চাষের জন্য বীজ বুনি তখন, পানির খুব সংকট থাকে। তার পরও পাটের ভালো ফলন হয়েছে। বর্তমানে জমিতে যে পরিমান পাট হয়েছে আশা করি ফলনও ভালো হবে। তবে একবিঘা জমিতে পাট চাষ করতে খরচ হয় ১৪-১৫হাজার টাকা। প্রতিবিঘায় পাট উৎপাদন হয় ১২-১৪মণ। খরচখরচাবাদে ভালো টাকাই লাভ থাকে।

মহসিন আলী নামে অন্য এক কৃষক বলেন, বাংলাদেশের জন্য পাট খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অর্থকরী ফসল। কিন্তু আমরা যারা চাষি, তারা এই পাট চাষ করে তেমন লাভবান হই না। ধার-দেনা ও সুদে টাকা এনে চাষ করি। দাম বৃদ্ধির আগেই দেনা পরিশোধের জন্য পাট বিক্রি করে দিতে হয়। পাট চাষিদের বীজ ও সার কেনার জন্য যদি সরকার কিছু সহযোগিতা করত তাহলে চাষিরা খুবই লাভবান হতো বলে দাবি করেন তিনি।

আটঘরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সজীব আল মারুফ জানান, উপজেলা পাঁচটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার বেশির ভাগ এলাকায় পাট চাষ হয়েছে। ৫হাজার ১৬৫হেক্টর জমিতে পাটের চাষ হয়েছে। আমরা চাষিদের সব ধরনের কারিগরি পরামর্শ ও সহযোগিতা করেছেন।