পাবনায় ঋণ খেলাপির মামলায় জেলে যাওয়া ১২ কৃষকের জামিন মঞ্জুর

পাবনার ঈশ্বরদীতে মাত্র ২৫ হাজার টাকা ঋণ খেলাপির মামলায় জেলে যাওয়া ১২ কৃষকের জামিন মঞ্জুর করেছেন বিজ্ঞ আদালত। একই সঙ্গে এই মামলায় বাকি ২৫ জনকে আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

রোববার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সামসুজ্জামান তাদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী আব্দুল মজিদ গণমাধ্যমকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৬ সালে ৩৭ জন প্রান্তিক কৃষকের একটি গ্রুপ বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক থেকে জন প্রতি ২৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ নেয়। ঋণ খেলাপির দায়ে ২০২১ সালে ব্যাংকের পক্ষে তৎকালীন ম্যানেজার সৈয়দ মোজাম্মেল হক মাহমুদ বাদী হয়ে ৩৭ জনের নামে মামলা করেন।

ব্যাংকের দায়ের করা মামলায় গত শুক্রবার ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়।

তারা হলেন- ঈশ্বরদীর ছলিমপুর ইউনিয়নের ভাড়ইমারি গ্রামের আলম প্রামাণিক (৫০), মাহাতাব মণ্ডল (৪৫), আবদুল গণি মণ্ডল (৫০), শামীম হোসেন (৪৫), সামাদ প্রামাণিক (৪৩), নূর বক্স (৪৫), মোহাম্মদ আকরাম (৪৬), মোহাম্মদ রজব আলী (৪০), কিতাব আলী (৫০), হান্নান মিয়া (৪৩), মোহাম্মদ মজনু (৪০) ও মোহাম্মদ আতিয়ার রহমান (৫০)।

গ্রেপ্তার একাধিক কৃষকের স্বজন জানান, ঋণ নেওয়ার পর এক বছরের মধ্যে অধিকাংশ কৃষক তাদের ঋণ পরিশোধ করে দিয়েছেন। তাদের পাশ বই এবং জমা স্লিপও রয়েছে। অথচ সেই অর্থ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা জমা না করে আত্মসাৎ করেছেন। ফলে তাদের হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে।

হয়রানির শিকার কৃষক পরিবারের সদস্যরা গণমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, গণমাধ্যমের কারণে আজ আমাদের স্বজনরা আইনি সহায়তা পেলেন। তারা প্রধানমন্ত্রী এবং গণমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানান।

প্রতিষ্ঠানটির আইনজীবীর দাবি, খেলাপি ঋণ আদায়ে নিয়ম মেনে ২০২১ সালে আদালতে মামলা করা হয়।

পাবনার পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সি বলেন, জামিন হওয়ার পর কৃষকদের নিয়ে আমি বসেছি। তাদের থেকে সব কিছু শুনেছি। তারা যাতে হয়রানির শিকার না হন সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে।

পাবনার জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন বলেন, বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসায় তার নির্দেশনা পেয়েছি। কৃষকদের বিরুদ্ধে কেন মামলা হয়েছে তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্তের কাজ শুরু করেছি। কোনো কৃষক যেন হয়রানির শিকার না হয়, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।