পাবনায় নিখোঁজের ৪৪ ঘণ্টা পর যমুনায় ভেসে উঠলো নিখোঁজ দুই তরুণের মরদেহ

যমুনা নদীতে নিখোঁজের ৪৪ ঘণ্টা পর দুই তরুণের মরদেহ পাওয়া গেছে।

সোমবার (৩ অক্টোবর) সকালে পাবনার নগরবাড়ী নৌ-বন্দরের প্রতাপপুর নামক স্থানে ভেসে ওঠে তাদের মরদেহ।

তারা হলেন সাঁথিয়া উপজেলার ভৈরবপুর গ্রামের মৃত আক্কাস সর্দারের ছেলে পান্না সর্দার (২৮) এবং সুজানগর উপজেলার কোলচুড়ি গ্রামের আমিরুল সেখের ছেলে আশিক ওরফে পিয়াস সেখ (২০)। তারা সম্পর্কে খালাত ভাই।

নগরবাড়ী নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শরিফুল ইসলাম এবং পুরান ভারেঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এএম রফিকুল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, সোমবার (৩ অক্টোবর) সকাল ৭টার দিকে প্রতাপপুর জামে মসজিদের কাছে যমুনা নদীতে মরদেহ দুটি ভেসে ওঠে। সেখানে একটি কার্গো জাহাজ ছেড়ে যাওয়ার পর পরই এগুলো ভাসে।

স্রোতে মরদেহ দুটি জাহাজের নিচে এসে আটকে ছিল বলে ধারণা করছেন এলাকাবাসী।

পরে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে। এসময় মৃতদের স্বজনদের আহাজারীতে নদী তীরের পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে।

এর আগে শনিবার (১ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে নগরবাড়ী নৌবন্দরে জাহাজের ধাক্কা থেকে বাঁচতে নৌকা থেকে যমুনায় ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন ওই দুই তরুণ। এরপর শনি ও রোববার দুপুর পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিস ও ডুবুরিদল উদ্ধার অভিযান চালায়। কিন্তু বৈরি আবহাওয়া ও তীব্র স্রোতের কারণে অনুসন্ধান অভিযান বন্ধ করে ডুবুরিরা।

নগরবাড়ী নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শরিফুল ইসলাম জানান, পাবনায় ডুবুরি না থাকায় তারা রাজশাহীতে ডুবুরির জন্য খবর পাঠান। সেখান থেকে ডুবুরিদল এসে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। কিন্তু রোববার দুপুরে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিপাতের কারণে উদ্ধার অভিযান শেষ করে রাজশাহী ফিরে যান।

পুরান ভারেঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এএম রফিকুল্লাহ জানান, নিখোঁজ দুজনের মধ্যে পান্না সর্দার সাঁতার জানতেন। তিনি তার ছোট ভাই আশিককে উদ্ধার করতে গিয়ে তলিয়ে গিয়েছিলেন।

নগরবাড়ী নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শরিফুল ইসলাম জানান, মরদেহ দুটি রঘুনাথপুর গ্রামের নজরুল ইসলাম সেখের বাড়িতে রয়েছে। পরবর্তীতে আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার পর মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।

উল্লেখ্য, শনিবার (১ অক্টোবর) দুপুরে নগরবাড়ী ঘাটে (বন্দরে) জাহাজের ধাক্কা থেকে বাঁচতে নৌকা থেকে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ হন দুই তরুণ। খালাত বোনের বিয়ে উপলক্ষে তারা রঘুনাথপুর গ্রামে তাদের খালু নজরুল ইসলাম সেখের বাড়ি গিয়েছিলেন। শনিবার তাদের ছেলে পক্ষের বাড়ির অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্ত এর আগে তারা শখের বশে একটি নৌকা নিয়ে যমুনা নদীতে ঘুরতে গিয়ে নৌকা থেকে ঝাঁপ দিয়ে তলিয়ে যান।