প্রভাব খাটিয়ে বাজারের নাম পরিবর্তন

টাঙ্গাইলের মধুপুরে আলোকদিয়া ইউনিয়ন উত্তর লাউফুলা গ্রাম। সেখানে গত এক বছর আগে স্থানীয়দের উদ্যোগে একটি বাজার বসানো হয়। আর সেই বাজারের নামকরণ করা হয় আবুল খালেক বাজার। বাজারটি অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠে। কিন্তু হঠাৎ করেই এক আওয়ামী লীগ নেতার হস্তক্ষেপে বাজারের নামকরণ করা হয় ‘আওয়ামীলীগ বাজার ও বঙ্গবন্ধু বাসস্ট্যান্ড’। এর পর থেকেই বাজারটি বন্ধ হয়ে যায়। এ নিয়ে পুরো ইউনিয়নজুড়ে রয়েছে আলোচনা-সমালোচনা।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মধুপুরের আলোকদিয়া ইউনিয়নের উত্তর লাউফুলা গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ আনারস চাষ করে থাকেন। প্রতিদিন সকাল বেলায় এই গ্রামে কাঁচাবাজার বসত। দীর্ঘ এক বছর ধরে চলছিল বাজারটি। প্রথমে বাজার বসানোর উদ্দ্যোগ নেন আবুল খালেক নামে এক ব্যাক্তি। কিছু দিনের মধ্য বাজারটি জনপ্রিয় হয়ে উঠে সবার কাছে। জনপ্রিয় হয়ে ওঠার পর আবুল খালেক তার নিজের নামটি প্রচার করে বাজারটির নামকরণ করেন আবুল খালেক বাজার।

কিন্তু কিছু দিন না যেতেই একই গ্রামের আওয়ামী লীগের নেতা মোঃ শহিদুল ইসলাম আবুল খালেক বাজারের নাম পরিবর্তন করে রাখেন ‘আওয়ামীলীগ বাজার ও বঙ্গবন্ধু বাসস্ট্যান্ড’। এই নামকরণ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। কেউ সমর্থন করেন, কেউ বিপক্ষে যান। এরপর থেকে ধীরে ধীরে বাজারটি প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এখন আর ওখানে প্রতিদিন হাঁট বসে না। তবে আওয়ামী লীগ নেতার লাগানো সাইনবোর্ড এখনও ঝুলছে।

এ বিষয়ে উত্তর লাউফুলা গ্রামের ফরহাদ হোসেন জানান, কয়েকটি গ্রাম নিয়ে এই বাজারটি বসানো হয়েছিল। প্রথম অবস্থায় বাজারের নাম ছিল খালেক বাজার। কিন্তু হঠাৎ করেই আওয়ামী লীগের কয়েকজন নামটি পরিবর্তন করে ‘আওয়ামীলীগ বাজার ও বঙ্গবন্ধু বাসস্ট্যান্ড’ করেন।

একই গ্রামের জয়নাল জানান, প্রতিদিন সকালে কাঁচা বাজার বসতো এখানে। কয়েকটি গ্রাম মিলে আমরা এই বাজারটি বসিয়েছি। তবে এখন আর বাজার বসে না।

আলোকদিয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন ধরে তিনি দলের রাজনীতি করেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করেন। তাই তিনি এই বাজারটি ‘আওয়ামী লীগ বাজার ও বঙ্গবন্ধু বাসস্ট্যান্ড’ নাম করণ করেছেন।

আলোকদিয়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ দুলাল হোসেন জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে তিনি বলেন, এভাবে বাজারের নামকরণ করে প্রকৃতপক্ষে আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু সুনাম নষ্ট করা হচ্ছে। শহিদুলের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান দুলাল।