প্রশাসনকে ম‍্যানেজ করে ফের চলছে মিঠাপুকুরে অবৈধ বালু উত্তোলন

সতর্কেই সীমাবদ্ধ উপজেলা প্রশাসন।প্রশাসনের নীরবতায় অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্মে নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে রংপুরের মিঠাপুকুরে বিলীন হচ্ছে কৃষি জমি ও হুমকির মুখে পড়েছে ঘাঘট ও আখিরা নদী

ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান কমে যাওয়ায় এ উপজেলায় বেড়েছে অবৈধ বালু উত্তোলনের দৌরাত্ম এমনটাই মনে করছেন মিঠাপুকুরের সচেতন নাগরিক সমাজ।অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলে রয়েছে হামলার হুমকি তাই ক্ষতিগ্রস্তের স্বীকার হলেও অভিযোগ দেয়না কেউ।সাহস করে অভিযোগ দিলে উপজেলা প্রশাসন দেয় সতর্কবার্তা।সতর্কবার্তা পেলেই বালু ব্যবসায়ীরা খোলস পাল্টে রাতের আঁধারে উত্তোলন করে বালু।কখনো বা কিছুদিন বন্ধ করে অভিযোগকারীকে খুঁজে বের করে তার সঙ্গে দফারফা করে পুনরায় চলে অবৈধ বালু উত্তোলন।উপজেলা প্রশাসনের এমন নীরবতায় লাগামহীন মিঠাপুকুরের অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা।

সরেজমিনে উপজেলার ভাংনী ইউনিয়নের চাঁনপুর নামক গ্রামের ঘাঘট নদীতে গিয়ে দেখা যায়, চারমাস থেকে প্রায় ৫০ লক্ষাধিক টাকার বালু উত্তোলন করেছে স্থানীয় আংগুর,মোখলেসার,খোরশেদ গং। প্রশাসন সবকিছু জেনেও কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় ব্যক্তি জানান,আংগুর গংয়ের রয়েছে ঠাকুরবাড়ি এলাকায় একচ্ছত্র আধিপত্য।একাধিক মামলার আসামি মোখলেছার রহমান সহ ঠাকুরবাড়ি,তেলিপাড়া ও চাঁনঘাট এলাকায় এক যুগেরো বেশি সময় ধরে ঘাঘট নদী থেকে থেমে থেমে জায়গা পরিবর্তন করে বালু উত্তোলন করছে তারা।

আংগুরের ঘনিষ্ঠভাজনরা জানান,পুরনো অবৈধ বালু ব্যবসায়ী আংগুর এসিল্যান্ড অফিস,ইউএনও অফিস,স্থানীয় ভূমি অফিস,জনপ্রতিনিধি,পুলিশ,সাংবাদিকসহ প্রশাসনের সর্বস্তরে রয়েছে তার সুসম্পর্ক।প্রয়োজনমাফিক যেখানে যেমন প্রয়োজন দেন মাসিক মাসোহারা।এজন্যই আংগুরের বালুর পয়েন্টে হয়না ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান।

ঘাঘট নদী থেকে আংগুর গংয়ের লাগামহীন এমন বালু উত্তোলনের ফলে নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে ক্রমেই বিলীন হয়ে যাচ্ছে কৃষি জমি।

উপজেলার রানীপুকুর ইউনিয়নের মাদারপুর মৌজাস্থ খিয়ারপাড়া চতরায় গিয়ে দেখা যায় চাষাবাদের জমি এবং তার পাশ্ববর্তী ১০০ গজ পশ্চিমে আখিরা নদীর পাড় কেটে অবৈধভাবে মাটি বিক্রির মহোৎসব চলছে।হুমকির মুখে আখিরা নদী ও চাষাবাদের জমি।

উপজেলার বালারহাট ইউনিয়নের কোনাপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পশ্চিমপাশে গিয়ে দেখা যায় সেচকাজের জন্য খননকৃত সরকারি ক্যানেল থেকে ড্রেজার লাগিয়ে বালু উত্তোলন করছে অবৈধ বালু ব্যবসায়ী জায়গীরের বাবু।

মিঠাপুকুর উপজেলার বালু ব্যবসায়ীদের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, জনপ্রতিনিধি,বিট পুলিশ,ভূমি অফিসসহ স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সখ্যতা করেই তারা বালু উত্তোলন করছে।সবাইকে মাসোহারা দিয়েই চলছে এই বালু উত্তোলন।

মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিকাশ চন্দ্র জানান,আখিরা নদী পাড় কেটে মাটি বিক্রি ও বালু উত্তোলনের বিষয়গুলো আমি অবগত ছিলাম না।এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।