ফেনীর নতুন পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান

ফেনী জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) জাহাঙ্গীর আলম সরকারকে প্রত্যাহার করে নতুন এসপি নিয়োগ করেছে প্রশাসন। মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে জাহাঙ্গীর আলমকে গতকাল রোববার প্রত্যাহার করা হয়। একইদিন রাতে নতুন পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন কাজী মনিরুজ্জামান।

ফেনীর পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতিপ্রাপ্ত কাজী মনিরুজ্জামান ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি র‌্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল ক্রাইম প্রিহেনসিভ কোম্পানি কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন।

ঝিনাইদহের গোবিনাথপুরে ১৯৭৬ সালের ৩০ জুন জন্ম নেওয়া কাজী মনিরুজ্জামান ২৫তম বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে ২০০৬ সালে বাংলাদেশ পুলিশে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন।

গত ৬ এপ্রিল নুসরাত জাহানকে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা করেন রোবকাপরা কয়েকজন ব্যক্তি। মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলে নিতে রাজি না হওয়ায় তারা নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেন। এ ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়া এবং মামলা ভিন্ন খাতে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। এমনকি জেলা পুলিশ সুপার এস এম জাহাঙ্গীর আলম অভিযুক্ত ওসিকে রক্ষায় ঘটনা সম্পর্কে ভুল তথ্য পাঠান পুলিশ সদরদপ্তরে।

বিষয়গুলো নিয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিস্তর সমালোচনা হয়। এর মধ্যে নুসরাতের পরিবারের দাবির মুখে প্রথমে সোনাগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোয়াজ্জেম হোসেনকে বদলি করা হয়। পরে এ ঘটনায় পুলিশের দায়দায়িত্ব খতিয়ে দেখতে ১৩ এপ্রিল পুলিশ সদরদপ্তরের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) এস এম রুহুল আমিনকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। ৩০ এপ্রিল কমিটি তাদের প্রতিবেদন পুলিশের মহাপরিদর্শকের কাছে জমা দেয়।

প্রতিবেদনে সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম ও উপপরিদর্শক (এসআই) ইকবালকে সাময়িক বরখাস্ত এবং তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া ও এসপি জাহাঙ্গীর আলম সরকার ও এসআই আবু ইউসুফের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা এবং তাদের নন অপারেশনাল ইউনিটে বদলির সুপারিশ করা হয়।

পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন ও এসআই ইকবাল হোসেন নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে প্রচারের কাজে একে অন্যকে সহযোগিতা করেন। পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম সরকার সকাল ১০টায় নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার খবর পেয়েও ঘটনাস্থলে যাননি। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের দিকে রওনা দেন। পরে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজির নির্দেশে মাঝপথ থেকে ফিরে আসেন।