ফের কর্মবিরতিতে ইবি কর্মকর্তারা, শিক্ষক হেনস্তার বিচারের দাবি

১২ দফা দাবি আদায়ে ফের দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা সমিতি। বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবন ফটকে অবস্থান নেন কর্মকর্তারা। কর্মসূচিতে তারা ১২ দফা দাবির পাশাপাশি উপাচার্যের নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ করেন। এসময় তারা উপাচার্যের নিয়োগ সংক্রান্ত ইউজিসি’র তদন্ত নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রাখার দাবি তুলেন।

এদিকে কর্মকর্তাদের কর্মসূচি চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রক্টরিয়াল বডি ও ছাত্রলীগের পাহারায় কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। এসময় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপাচার্যের সাথে সাক্ষাৎ করেন।

জানা যায়, কর্মকর্তারা কর্মবিরতি পালন করলেও শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্ট দপ্তরের জরুরী সেবাসমূহ চালু রেখেছে। এর আগে একই দাবিতে টানা প্রায় দুই মাস কর্মবিরতি পালন করেন তারা। পরে গত সেপ্টেম্বরে উপাচার্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করেন তারা। তবে গতকাল ইমাম নিয়োগ বোর্ডকে কেন্দ্র করে আবারও কর্মবিরতি শুরু করেন তারা।

অন্যদিকে মঙ্গলবার উপাচার্যের কার্যালয়ে বহিরাগত ও ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মী কর্তৃক শিক্ষকদের হেনস্তার ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতদের বিচার দাবিতে উপাচার্য বরাবর লিখিত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শাপলা ফোরামের একাংশ। বুধবার ফোরামের কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন ফোরামটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রবিউল হোসেন। তিনি জানান, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে আমরা যে পরিস্থিতির শিকার হয়েছি তার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই। সেইসাথে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমরা লিখিত আবেদন করবো।

কর্মবিরতির বিষয়ে কর্মকর্তা সমিতির সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিদ হাসান মুকুট বলেন, “আমরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো। এর আগেও উপাচার্য দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাসে আমরা আন্দোলন স্থগিত করেছিলাম। তবে এবার দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত কোনো আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করা হবে না।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা ইমাম নিয়োগ বোর্ডকে কেন্দ্র ১২ দফা দাবি নিয়ে প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। এ কর্মসূচিতে তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি ঘোষণা করেন। পরে ইমাম নিয়োগ ও তাদের দাবি নিয়ে উপাচার্যের নিকট যান। এসময় উপাচার্যের নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির তদন্ত বিষয়ে সাক্ষাৎ করতে আসেন প্রগতিশীল শিক্ষক সংগঠন শাপলা ফোরামের একাংশ। পরে সেখানে ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতা-কর্মীরা প্রবেশ করলে এক উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। উপাচার্যের ইন্ধনে বহিরাগত ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মী কর্তৃক শিক্ষকদের হেনস্তা করেছে বলে অভিযোগ করেন উপস্থিত শিক্ষকরা। এর প্রতিবাদে ঘটনার তদন্ত ও বিচার চেয়ে মানববন্ধন করেন শাপলা ফোরামের একাংশ। এদিকে পৃথক পৃথক বিবৃতিতে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে শাপলা ফোরাম, বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিট।