বছরের প্রথম ছয় মাসে মুনাফা কমেছে সরকারি ব্যাংকের

বছরের প্রথম ছয় মাসে বেসরকারি ব্যাংকগুলো পরিচালন মুনাফা ভাল করলেও কমেছে সরকারি ব্যাংকের। সব পর্যায়ে সুদ হার বৃদ্ধির প্রতিযোগিতা কমিয়ে আনতে না পারলে মুনাফা বাড়বে না বলছেন ব্যাংকাররা। তবে টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনে ব্যাংকগুলোর অভ্যন্তরীণ ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করা ও অর্থ সরবরাহ বাড়ানোর পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের।

চলতি বছরের শুরু থেকেই তারল্য সংকটে পড়েছে দেশের ব্যাংকিং খাত। বেশি চাপে রয়েছে বেসরকারি ব্যাংকগুলো। তবুও বছরের অর্ধেক সময়ে পরিচালন মুনাফায় বেশ ভাল করেছে বেশিরভাগ বেসরকারি ব্যাংক। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দক্ষ পরিচালনার কারণেই লভ্যাংশ বেড়েছে। তবে সরকারের অর্থ যোগাতে ব্যাংক নির্ভরতা, আমানতকারী ও ব্যবসায়ীদের প্রতিযোগিতায় সুদের হার বৃদ্ধির প্রবণতা কমাতে না পারলে প্রকৃত মুনাফা বাড়বে না বলছেন তারা।

মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিস এ খান বলেন, ‘আমাদের দেশের অর্থনীতিতে অর্থের সাপ্লাই চেন রয়েছে তা সিজনালি পরিবর্তন হয়। সরকার টাকা নিয়ে যাচ্ছে। আবার গ্রাহকের ব্যবসা বাড়ছে তাদেরও টাকার চাহিদা আছে। তখন এমন অবস্থা হলে টাকা নেয়ার জন্যে হুরোহুরি পরে যায়।’

এদিকে ৬ থেকে ৯ শতাংশ সুদ হার বাস্তবায়ন করতে গিয়ে মুনাফা অর্জন বেশ কঠিন হয়ে পড়ে সরকারি ব্যাংকগুলোর। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর থেকে ৬ মাসে ১৬ কোটি টাকা কমেছে রুপালী ব্যাংকের, জনতা ব্যাংকের কমেছে ১৪১ কোটি এবং অগ্রণী ব্যাংকের মুনাফা কমেছে ৭৮ কোটি টাকা। এছাড়া বেসিক ব্যাংক লোকসান করেছে ১৬৪ কোটি টাকা। ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারের নির্দেশ মেনে চলায় ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে অর্থনীতিতে।

অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শামস উল ইসলাম বলেন, ‘বেসরকারি ব্যাংকে যে হারে লাভ বেড়েছে সে হারে সরকারি ব্যাংকে বাড়েনি। কিন্তু দেশের অর্থনীতিতে ভাল ফলাফল এনেছে। আমরা গ্রামে গঞ্জে চার শতাংশ সুদে ঋণ দিয়েছি। এটা ১৬ কোটি মানুষের ব্যাংক। জনগণের উন্নতি হচ্ছে কিনা তা দেখতে হবে।’

বর্তমানে দেশে পরিচালিত হচ্ছে ৫৭টি তফসিলি ব্যাংক। এসব ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা বেশি করতে হলে আমানত বাড়ানোর পাশাপাশি কমাতে হবে ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ ব্যয় ও মন্দ ঋণের পরিমাণ। অন্যাথায় মুনাফার প্রবৃদ্ধি টেকসই হবে না বলছেন অর্থনীতিবিদরা।

অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘পরিচালন মুনাফা যদি বাড়াতে হয় তাহলে দুটো ভাবে বাড়তে হবে। ব্যাংকগুলোকে ওভার রেট কমাতে হবে।’

প্রতি বছর আমানতের বিপরীতে মুনাফার হার তুলনামূলক কতটা বেশি হচ্ছে, তা পর্যালোচনার পরামর্শ অর্থ খাতের এই বিশেষজ্ঞের।