বছরের প্রথম দিনে স্বস্তি রাজধানীর কাঁচাবাজারে

সবজির বাজারে বেশ খানিকটা স্বস্তি নিয়েই নতুন বছর শুরু করল নগরবাসী। যদিও করোনার প্রভাবে অনলাইনে কেনাকাটা বাড়ায় কাঁচাবাজারে কমেছে বেচাকেনা।

নতুন বছরের প্রথম দিন রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউনহল মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, সকাল সকালই সবজির পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। শীতকালীন থেকে শুরু করে সব ধরনের রঙিন সবজিই মিলছে তাদের দোকানে। তবে, খুব একটা দেখা মিলছে না ক্রেতার। একে তো সরবরাহ অনেক বেশি তারপর ওপর বিক্রি কম, তাই ভোক্তার অপেক্ষাতেই থাকতে হয় তাদের। আর ক্রেতা কমের ব্যাখ্যাও দিলেন দিলেন তারা।

সবজি ব্যবসায়ী মো. মিরাজ জানান, করোনার কারণে এখন আর ভোক্তারা খুব একটা বাজারে আসেন না। কেনাকাটা সারেন সুপারশপে, অনলাইনে। এসব নানান কারণে বাজারে সবজির দাম কমতির দিকে। যেমন, কেজিতে ১০ টাকা কমে শিম ৪০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, মুলা ১৫ থেকে ২০ টাকা, করলা ৫০ থেকে ৬০ আর নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে ২০ টাকা কমে প্রতিকেজি কাঁচামরিচ, টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, গাজর ৫০ থেকে ৮০ টাকায়। প্রতিকেজি লাল-হলুদ ক্যামসিকামের দাম কমেছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বিক্রি হচ্ছে ৩শ’ টাকায়; সবুজ ক্যাপসিকামের দাম পড়ছে দেড়শ’ টাকা; কেজিতে কমেছে ৫০ টাকা।

বাজারে আসা ক্রেতাদেরও পর্যবেক্ষণ, দাম কমতির দিকে। মধ্যবিত্তের নাগালের মধ্যেই রয়েছে সব সবজি। তবে, শীতকাল বিবেচনায় দাম আরও কমের প্রত্যাশার কথাও জানান তারা।

কাঁচাবাজারের তুলনায় মাছ বাজারে ক্রেতা সমাগম তুলনামূলক বেশি। দোকানে দোকানে ঘুরে তারা কিনছেন পছন্দের মাছ। তবে, পরিমাণে কম। নদী, জলাশয়ের পানি কমতে থাকায় বাজারে মাছের সরবরাহ বেড়েছে। তাই সপ্তাহ ব্যবধানে সব ধরনের মাছের দামও কেজিতে ১শ’ টাকা পর্যন্ত কমেছে বলে জানান বিক্রেতা মো. শাকিল। বাজারে ওজনভেদে প্রতিকেজি চাষের রুই আড়াইশ’ থেকে সাড়ে ৩শ’ আর নদীর রুই বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৫শ’ থেকে এক হাজার টাকায়। কাতলা মাছের দাম পড়ছে রুইয়ের চেয়ে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কম। প্রতিকেজি পাবদা সাড়ে ৩শ’ থেকে ৬শ’, বোয়াল ৪শ’ থেকে ৬শ’, আইড় সাড়ে ৪শ’ থেকে ৭শ’ টাকা আর চাষের চিংড়ির কেজি পড়ছে সাড়ে ৪শ’ থেকে ৬শ’ ও নদীর চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকার মধ্যে।

এই বাজারে সামুদ্রিক মাছের বিক্রেতা আসলাম জানান, রিটা মাছের কেজি পড়ছে ৩শ’ থেকে ৫শ’ টাকা; দাম কমেছে ১শ’ টাকা। কেজিতে ৫০ থেকে ১শ’ টাকা কমে কোরাল বিক্রি হচ্ছে ৫শ’ টাকার মধ্যে আর টুনা মাছের দাম পড়ছে ২২০ টাকা কেজি।

তবে, বিক্রেতাদের দাম কমের দাবির বিপরীতে অবস্থান ক্রেতাদের। তাদের পর্যবেক্ষণ, দাম কমেনি। কোন কোন মাছ আগের দামে বিক্রি হলেও অনেকে মাছের দামই ঊর্ধমুখী।

এদিকে, মাংসের বাজারে দেখা গেল ক্রেতা নেই বললেই চলে। তবুও বেড়েছে সোনালী ও ব্রয়লার মুরগির দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১৫ টাকা বেড়ে ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায় আর সোনালী বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২২০ টাকায়। তবে, দেশি মুরগির দামের কোন হেরফের হয়নি। আড়াইশ’ থেকে ২৬০ টাকাতেই মিলছে এক একটি দেশি মুরগি।

গরু ও খাসির মাংসও বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই। প্রতিকেজি গরুর মাংস ৫৮০ আর খাসির মাংস পাওয়া যাচ্ছে ৯শ’ টাকায়।