বরিশালে মানবতার বাজার আবার চালু হলো

করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমজীবী মানুষের খাদ্যসহায়তা দেয়ার জন্য বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) উদ্যোগে বরিশালে ফের চালু হয়েছে ‘মানবতার বাজার’।

বৃহস্পতিবার (৬ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর অমৃত লাল দে কলেজ মাঠে এ বাজারের উদ্বোধন করা হয়।

বাসদ বরিশাল জেলার আহ্বায়ক ইমরান হাবিব রুমন ও সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তীর উপস্থিতিতে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রথম ধাপে ৩০০ রিকশা শ্রমিককে খাদ্যসহায়তা দেয়া হয়। এসময় সেখানে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট ও সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট বরিশাল জেলা ও মহানগর শাখার নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

মানবতার বাজার থেকে চাল, ডাল, তেল, চিনি, দুধ, সেমাইসহ ১০ ধরনের খাদ্যসামগ্রী বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়।

সদস্যসচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী জানান, জনগণের সহায়তা নিয়ে এই মানবতার বাজার ঈদ পর্যন্ত চলবে। লকডাউন থাকলে প্রয়োজনে ঈদুল ফিতরের পর আবার মানবতার বাজার চালু করা হবে।

প্রসঙ্গত, করোনা সঙ্কটের শুরুতে গত বছর মার্চের তৃতীয় সপ্তাহে ঘরে ঘরে মুষ্টিচাল সংগ্রহের লক্ষ্যে ‘এক মুঠো চাল’ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামেন সংগঠনটির নেতাকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবীরা। এরপর থেকে বরিশালে খাদ্যসহায়তা, স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রী প্রদান, চিকিৎসাসেবা, করোনা রোগীদের জন্য অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসসহ নানা ধরনের সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন তারা।

গত বছর প্রায় ছয় মাস করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ, তেল, ডিম, টমেটো, মিষ্টি কুমড়া, ঢেঁড়স, পুঁইশাক, শিশুদের জন্য চকলেট, আচার, চানাচুর, মাস্ক, জরুরি ওষুধ বিতরণ করেন তারা। এই কর্মসূচিকে সংগঠনের পক্ষ থেকে তখন নামকরণ করা হয় ‘মানবতার বাজার’। ‘মানবতার কৃষি’ নামে অপর একটি কর্মসূিচর আওতায় কৃষিতে উৎসাহিত করতে কৃষক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে সবজি ও ফলদ গাছের চারা বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়।

করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনলাইনে ক্লাস শুরু হয়। উচ্চবিত্তরা গৃহশিক্ষক রেখে বা অনলাইন ডিভাইস দিয়ে তাদের ছেলেমেয়ের পড়াশোনা অব্যাহত রাখেন। পাশাপাশি মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তানদের পড়াশোনা করাচ্ছেন তাদের বাবা-মা। কিন্তু হতদরিদ্র এবং শ্রমিক পরিবারের সন্তানরা পড়াশোনা থেকে পিছিয়ে পড়তে থকে। সুবিধাবঞ্চিত ছেলেমেয়েরা যেন শিক্ষা থেকে ঝরে না পড়ে এবং অন্যান্য সহপাঠীর থেকে পিছিয়ে না পড়ে সেজন্য গত বছরের ১০ জুন বাসদের উদ্যোগে ‘মানবতার পাঠশালার’ কার্যক্রম শুরু হয়। নগরীর বিভিন্ন বস্তি এলাকার শ্রমিকের সন্তানদের শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ পাঠশালায় পড়াশোনা শেখানো হয়।