বাংলাদেশে তৈরি হবে নিজস্ব ব্র্যান্ডের মোটর গাড়ি

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন জানিয়েছেন, বাংলাদেশে নিজস্ব ব্র্যান্ডের মোটর গাড়ি উৎপাদন করা হবে। জাপানের মিতসুবিশি করপোরেশনের কারিগরি সহযোগিতায় রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড মোটর গাড়ি উৎপাদন করবে। এ লক্ষ্যে খুব শিগগির অটোমোবাইল ইন্ডাস্ট্রি ডেভেলপমেন্ট পলিসি চূড়ান্ত করা হবে।

সোমবার (৩১ আগস্ট) শিল্প মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতোর সঙ্গে বৈঠককালে এসব তথ‌্য জানান শিল্পমন্ত্রী।

বৈঠকে বাংলাদেশে শিল্প খাতে জাপানি বিনিয়োগের বিষয়ে আলোচনা হয়। এ সময় বাংলাদেশে নিজস্ব ব্র্যান্ডের মোটর গাড়ি উৎপাদন, জাতীয় শিল্পনীতি ২০২১ প্রণয়ন ও শিল্প ডাটাবেজ তৈরিতে জাপানের কারিগরি সহায়তা, মোটরসাইকেল শিল্পের আধুনিকায়ন, বাংলাদেশে অটোমোবাইল ও হালকা প্রকৌশল শিল্প সংশ্লিষ্ট ভেন্ডর ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়ন, মোটরসাইকেলের সার্টিফিকেশনের জন্য অটোমোবাইল টেস্টিং অ্যান্ড রিসার্স ইনস্টিটিউট স্থাপন এবং শিল্প বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে কারিগরি সহযোগিতাসহ দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা হয়। শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বেগম পরাগসহ মন্ত্রণালয় ও জাপানি দূতাবাসের কর্মকর্তারা বৈঠকে অংশ নেন।

জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে শিল্পমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও শিল্পায়নে জাপানের উদ্যোক্তারা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিসিআইসির সার কারখানাগুলোতে জাপান দীর্ঘদিন ধরে প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছে। ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা নির্মাণেও জাপানের সক্রিয় অংশগ্রহণ রয়েছে।

তিনি রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলগুলোর আধুনিকায়ন, কৃষিভিত্তিক শিল্পকারখানা স্থাপন, কৃষিপণ্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, হালকা প্রকৌশল শিল্পের উন্নয়ন এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য ভেন্ডর শিল্পে বিনিয়োগ করতে জাপানের রাষ্ট্রদূতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘করোনা মহামারি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশে বিনিয়োগের ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি হয়েছে। জাপানের মিতসুবিশি করপোরেশনসহ অন্যান্য অটোমোবাইল শিল্পের উদ্যোক্তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী।’

বাংলাদেশে মোটরসাইকেল শিল্পের বিকাশে রেজিস্ট্রেশন ফি যৌক্তিক পরিমাণে নির্ধারণ করা প্রয়োজন বলে অভিমত ব্যক্ত করেন জাপানের রাষ্ট্রদূত। রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলের আধুনিকায়ন এবং চিনি শিল্পে পণ্য বৈচিত্র‌্যকরণে শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হবে বলে জানান তিনি।

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে স্থাপিত জাপান ইকোনোমিক জোন মানের দিক থেকে এশিয়ায় শীর্ষে আছে, উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ বাড়াতে দ্বিপাক্ষিক সংলাপ জোরদার করতে হবে। এর মাধ্যমে বিনিয়োগের জন্য উদীয়মান খাতগুলো চিহ্নিত করতে যৌথভাবে কাজ করতে হবে।’

তিনি জাপানের বিনিয়োগ বাড়াতে কর প্রণোদনা, পর্যাপ্ত ভূমি বরাদ্দসহ অন্যান্য সুযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।