বার্ড ফ্লু ঠেকাতে ভারত থেকে হাঁস-মুরগি আমদানি বন্ধে চিঠি

দেশে বার্ড ফ্লু রোগের সংক্রমণ ও বিস্তার ঠেকাতে তিন মন্ত্রণালয়কে জরুরি চিঠি দিয়েছে প্রাণি সম্পদ মন্ত্রণালয়। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ভারত থেকে মুরগির বাচ্চা, হাঁস-মুরগি, পাখি ও ডিম আমদানি বন্ধে যত দ্রুত সম্ভব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে অনুরোধ জানিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে প্রাণ সম্পদ মন্ত্রণালয় জানায়, শুধু বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নয়, বার্ড ফ্লু’র বিস্তার রোধে এ সীমান্ত পথে বৈধ ও অবৈধভাবে মুরগির বাচ্চা, প্যারেন্টস্টক, হাঁস-মুরগি, পাখি ও ডিমের অনুপ্রবেশ বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং বাংলাদেশকে কোস্টগার্ডকেও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিতে অনুরোধ করা হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগকে।

এছাড়া সমুদ্র, নৌ এবং স্থলবন্দর দিয়ে মুরগির বাচ্চা, প্যারেন্টস্টক, হাঁস-মুরগি, পাখি ও ডিমের অনুপ্রবেশ বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট বন্দর কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদানের জন্য নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়কেও অনুরোধ জানিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

একই সঙ্গে কোনো মৃত হাঁস-মুরগি বা পাখি পাওয়া গেলে নমুনা সংগ্রহ করে দ্রুত নিকটবর্তী ল্যাব থেকে পরীক্ষা করে ফলাফল অনুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণেরও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে চিঠিতে।

জেলা ও উপজেলা ভেটেরিনারি হাসপাতাল ও গবেষণাগারে পর্যাপ্ত নমুনা পরীক্ষার কিট ও পিপিই জরুরি ভিত্তিতে সরবরাহ, খামারে জৈব নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, কৃষক ও খামারিদের সতর্ক করতে ব্যাপক প্রচারণা চালানো, বার্ড ফ্লু প্রতিরোধে এর টিকার বর্তমান মজুত যাচাই করে দ্রুততার সঙ্গে টিকা সংগ্রহের ব্যবস্থা গ্রহণেও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকে নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রণালয়।

চিঠিতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম চালু করা এবং এ সংক্রান্ত তথ্য-উপাত্ত সারা দেশ থেকে সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও তা মন্ত্রণালয়কে তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে বলা হয়েছে।

এখন পর্যন্ত ভারতের ১০ রাজ্যে ছড়িয়েছে বার্ড ফ্লুর সংক্রমণ। উত্তরপ্রদেশ, কেরালা, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ, হরিয়ানা, দিল্লি, গুজরাট ও মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যগুলির পর নতুন করে বার্ড ফ্লুতে আক্রান্ত ঝাড়খণ্ডও। যার প্রভাবে দেশটিতে ফার্মের মুরগি ও ডিমের দাম প্রায় ৫০ শতাংশ কমে গেছে বলে জানিয়েছে অল ইন্ডিয়া পোলট্রি ফেডারেশন। এছাড়া সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রবল আতঙ্কের কারণে মুরগি ও মুরগিজাত দ্রব্যের চাহিদা ৭০ শতাংশের বেশি কমেছে। ফলে অর্ধেকে নেমেছে মুরগি ও ডিমের দাম।