বালিশ কাণ্ডকেও হার মানিয়েছে ইসির ‘প্রশিক্ষণ দুর্নীতি’: টিআইবি

সম্প্রতি রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কেনাকাটায় দুর্নীতির যে অভিযোগ ওঠেছে, যা ‘বালিশ দুর্নীতি’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে; সেই দুর্নীতিকেও হার মানিয়েছে `প্রশিক্ষণ ভাতা’র নামে নির্বাচন কমিশনের দুর্নীতি। এজন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার (ইসি) কেএম নুরুল হুদাসহ নির্বাচন কমিশনারদের পদত্যাগ দাবি করেছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

গত জাতীয় সংসদ ও উপজেলা নির্বাচনের আগে প্রশিক্ষণের নামে নির্বাচন কমিশনে অর্থের লোপাট হয়েছে এমন একটি সংবাদ মঙ্গলবার একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনার এবং সচিবরা কর্মশালায় ‘বিশেষ বক্তা’, ‘কোর্স উপদেষ্টা’ও ‘কোর্স পরিচালক’ হিসেবে কয়েক কোটি টাকার অর্থ ‘সম্মানি’ও ‘ভাতা’ হিসেবে গ্রহণ করেন বলে খবরে উল্লেখ করা হয়।

বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার বিকালে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের মতো রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের পদস্থ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ পুরো কমিশনকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
প্রতিষ্ঠানটির সাংবিধানিক মর্যাদা পুনরুদ্ধারের স্বার্থে গুরুতর অনিয়ম ও নৈতিক স্খলনের জন্য সর্বোচ্চ দায়িত্বশীল হিসেবে দায় গ্রহণ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য কমিশনারদের অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত সব অভিযোগের যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে অনিয়ম ও দুর্নীতির জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।’

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের পদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ কর্তৃক এ ধরনের কার্যক্রম সম্পূর্ণ অনৈতিক ও অনভিপ্রেত। স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে পুরো একটি কমিশনের পদস্থ প্রায় সব কর্তাব্যক্তির বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ নজিরবিহীন। এছাড়া এ ধরনের প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ না করেই সম্পৃক্ততার নামে জনগণের করের অর্থ আদায় একদিকে রীতিমতো আইনের গুরুতর লঙ্ঘন, ক্ষমতার অপব্যবহার ও সুস্পষ্ট দুর্নীতি, অপরদিকে যোগসাজসের মাধ্যমে অনৈতিক সুবিধা অর্জনের বিস্ময়কর নজির, যা এ পর্যায়ের সাংবিধানিক পদাধিকারী ও অন্যান্য পদস্থ কর্মকর্তাদের কাছে কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ অনৈতিক ঘটনা রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ‘বালিশ দুর্নীতিকে’ও ম্লান করে দিয়েছে।’