বিপদসীমার উপরে তিস্তার পানি, ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দী

চারদিনের টানা ভারী বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা ও ধরলা নদীর চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে লালমনিরহাটে প্রায় ১০ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। তিস্তার পানি প্রবাহ বিপদসীমার দুই সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকাল ৬টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের (বাঁধ) ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৬২ সেন্টিমিটার। যা স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার। বিপদসীমার দুই সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভোর রাত থেকে তিস্তার পাড়ের অধিকাংশ বাড়ি ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় অনেকে তিস্তার বামতীর বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানা গেছে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও পুর্বাভাস সুত্র জানায়, বৃহস্পতিবার ভোর থেকে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করে নীলফামারীর ডালিয়া তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে। সকাল ১০টা থেকে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যারেজের সবকটি(৪৪টি) জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে।

এদিকে তিস্তা নদী পরিবেষ্টিত ডিমলা উপজেলার খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাপানী, খগাখড়িবাড়ি, পুর্ব ছাতনাই, পুর্ব ছাতনাই, নাউতারা, গয়াবাড়ি এবং জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা, শৌলমারীসহ আশপাশ কয়েকটি ইউনিয়নের তিন হাজার পরিবারের বসতবাড়ীতে পানি উঠেছে। টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ময়নুল ইসলাম জানান বন্যায় তার ইউনিয়নের পূর্ব খড়িবাড়ী, টাবুর চর ও বাংলা পাড়ার প্রায় ২ হাজার পরিবার পানি বন্দী রয়েছে।

খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম লিথন জানান, তার ইউনিয়নের কিছামত ছাতনাই চরে বসবাসরত তিনশত পরিবারের বসতভিটায় হাঁটু পরিমান পানি উঠেছে।

পূর্বছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান বলেন, তার ইউনিয়নের প্রায় ৯শত পরিবার ভোররাত থেকে পানি বন্দী হয়ে রয়েছে। এছাড়া অনেক পরিবার তিস্তার বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, টানা ভারী বর্ষণ ও উজানে ঢলে তিস্তা পানি বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিনি জানান, তিস্তা এলাকা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। যে কোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় তৎপর রয়েছে বোর্ডের সংশ্লিষ্টরা।