বৃটিশ ও ইউরোপীয় ব্যবহারকারীদের মোবাইলে ব্যক্তিগত তথ্য দেখতে পারে টিকটক

বৃটেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য দেখতে পারে টিকটক। চীনা ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্মটি নিজেই এ কথা জানিয়েছে।

বহুদিন ধরেই ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিয়ে আলোচনা চলছে। এই অ্যাপের মাধ্যমে চীন সরকারের কাছে পশ্চিমা দেশগুলোর নাগরিকদের তথ্য পাচার হয়ে যাচ্ছে বলেও আশঙ্কা করছে তারা। যদিও টিকটক বরাবরই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কিন্তু এবার কোম্পানিটি নিজেই জানালো তাদের কর্মীদের টিকটক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্যে প্রবেশের সক্ষমতা রয়েছে। এ খবর দিয়েছে গার্ডিয়ান ও ডেইলি মেইল।

টিকটকের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা আরও বেশি সামঞ্জস্যপূর্ণ, উপভোগ্য এবং নিরাপদ করতেই তাদের কর্মীদের এই অ্যাক্সেস দেয়া হয়। এমন এক সময় এই ঘোষণা এলো যখন এক মার্কিন কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে এ ধরণের কোনো ব্যবস্থা রাখেনি টিকটক। এই সুবিধা শুধুমাত্র বৃটেন, সুইজারল্যান্ড ও ইইউভুক্ত দেশগুলোর জন্য প্রযোজ্য।

গত সপ্তাহে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে টিকটকের ইউরোপীয় অঞ্চলের গোপনীয়তাবিষয়ক প্রধান ইলেন ফক্স বলেন, একটি বৈশ্বিক দল ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতাকে আরও আনন্দদায়ক, নিরাপদ ও ধারাবাহিক রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে। ব্রাজিল, কানাডা, চীন, ইসরাইল, জাপান, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইনস, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত করপোরেট গ্রুপের কিছু কর্মী টিকটকের ইউরোপীয় ব্যবহারকারীদের তথ্যে প্রবেশ করতে পারে। যদিও ইউরোপীয় ব্যবহারকারীদের তথ্য বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরের সার্ভারে সংরক্ষণ করে থাকে প্রতিষ্ঠানটি।

টিকটকের মূল প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্স বরাবরই অস্বীকার করে আসছে যে চীন সরকার সাইটটি নিয়ন্ত্রণ করে। যদিও মার্কিন ফেডারেল কমিউনিকেশনস কমিশনের কমিশনার ব্রেন্ডন কার বলেন, আমি মনে করি টিকটক নিষিদ্ধ করা ছাড়া আর কোনো পথ খোলা নেই। গত আগস্টে এমপিদের আপত্তির মুখে বৃটিশ পার্লামেন্টের টিকটক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়া হয়। চীন সরকারের হাতে তথ্য পাচারের আশঙ্কায় অ্যাকাউন্টটি বন্ধের দাবি তুলেছিলেন বৃটিশ এমপিরা।

তবে টিকটক ঠিক কোন ধরণের তথ্য দেখতে পারে তা নির্দিষ্ট করে জানাননি ফক্স। এরমধ্যে মোবাইলের কন্টাক্ট নাম্বার, বয়স, ইমেইল এবং লোকেশন থাকতে পারে। বিষয়টিকে উদ্বেগজনক বলে আখ্যায়িত করেছেন সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ জেক মুর। তিনি ডেইলি মেইলকে বলেন, আরও একটি কোম্পানি হয়ত ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য বিক্রি করছে। টিকটক যদিও দাবি করছে, বাজারে থাকা অন্য অ্যাপগুলো থেকে তাদের অ্যাপ কোনো দিক থেকেই আলাদা নয়। ব্যবহারকারীরা নিজেরাই যে তথ্য আমাদেরকে দেয় আমরা তাই সংগ্রহ করি।

এটি তাদের অভিজ্ঞতাকে আরও সুন্দর করতেই ব্যবহার করা হয়। আমরা কীভাবে আমাদের ব্যবহারকারীদের তথ্য গ্রহণ করি সে বিষয়ে টিকটক পুরোপুরি স্বচ্ছ।