বেসরকারি হাসপাতালে পরীক্ষা ফি তালিকা টাঙানোর নির্দেশ

আগামী ১৫ দিনের মধ্যে দেশের প্রত্যেক বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে শারীরিক পরীক্ষার মূল্য তালিকা টাঙানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলো যাতে রোগী ও তার স্বজনদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করতে না পারে সেজন্য আইন অনুসারে মূল্যতালিকা টাঙ্গানোকে বাধ্যতামূলক করেছে হাইকোর্ট।

এক রিট আবেদনের প্রাথ‌মিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য ৭ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।

স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলকে (বিএমডিসি) এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে হবে।

আদেশে বলা হয়, দ্য মেডিকেল প্র্যাকটিস অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরিস (রেগুলেশন) অর্ডিন্যান্স, ১৯৮২ অনুসারে নীতিমালা তৈরি এবং বাস্তবায়নের জন্য ৬০ দিনের মধ্যে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করতে হবে।

স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল, পুলিশের মহাপরিদর্শক ও র‌্যাবের মহাপরিচালককে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ড. বশির আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাসুদ হাসান চৌধুরী পরাগ।

পরে মাসুদ হাসান চৌধুরী বলেন, অর্ডিন্যান্স অনুসারে কেন বেসরকারি ক্লিনিক মনিটর করা হবে না, কেন নীতিমালা তৈরি করা হবে না, এই মর্মে বিবাদীদের প্রতি রুল জারি করেছেন আদালত। একইসঙ্গে এই রুলস তৈরির জন্য একটি কমিটি গঠন করতে বলেছেন। ৬০ দিনের মধ্যে সরকার কমিটি গঠন করবে নীতিমালা তৈরির জন্য।

এসময় প্রত্যেক জেলা সদর হাসপাতালে ৩০টি করে আইসিইউ বেড কেন স্থাপন করা হবেনা এবং প্রত্যেক বেসরকারি হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরীক্ষা ও ফিসের মূল্য তালিকা কেন প্রদর্শন করা হবেনা এবং কেন যাচাইবাছাই করে বেসরকারি ক্লিনিক ও পরীক্ষাগুলোর লাইসেন্স দেয়া হবে না জানতে চেয়ে রুল জারি করে হাইকোর্ট।

রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারীর আইনজীবী ড. বশির আহমেদ এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাসুদ হাসান চৌধুরী পরাগ।

হিউম্যান রাইটস ল’ইয়ার্স অ্যান্ড সিকিউরিং এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি অব বাংলাদেশের পক্ষে কোষাধ্যক্ষ মো. শাহ আলম রিটটি দায়ের করেন। রিটে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে বিবাদী করা হয়।

বেশিরভাগ বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে কোনো ধরণের নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই যার-যার ইচ্ছেমতো শারীরিক পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করার অভিযোগ রয়েছে।

রোগ নির্ণয়ের ফি নিয়ে ভোগান্তিতে পড়ছে হাজার হাজার রোগী ও তার স্বজনরা। রোগী ও তার স্বজনদের কাছ থেকে হাসপাতালগুলো যাতে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করতে না পারে, সে জন্যই এই রুল জারি করেন আদালত।