ভারতের আদলে সংসদের উচ্চকক্ষ করতে চান খালেদা

ভারতীয় সংসদীয় পদ্ধতির আদলে বাংলাদেশের সংসদে উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা করতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার কথা জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। একে তিনি বিদ্যমান সংসদীয় ব্যবস্থা সংস্কারের অংশ বলছেন।

বুধবার বিকালে রাজধানীর একটি হোটেলে রাষ্ট্র পরিচালনায় বিএনপির দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ভিশন ২০৩০ প্রকাশের শুরুতেই বিএনপি চেয়ারপারসন তার এই পরিকল্পনার কথা জানান।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এককক্ষের সংসদীয় ব্যবস্থা চালু হয়। তবে ভারতে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট রয়েছে। এর মধ্যে লোকসভার সদস্যরা সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হন। বর্তমানে লোকসভার সদস্য সংখ্যা ৫৪৫ জন। আর উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার সদস্যদ ২৪৫ জন। এদের মধ্যে ১২ জনকে নির্বাচিত করেন রাষ্ট্রপতি। অন্যান্য সদস্যরা রাজ্য ও শায়ত্বশাসীত অঞ্চলগুলোর বিধানসভা কর্তৃক নির্বাচিত হন।

তবে বাংলাদেশে কী ধরনের উচ্চকক্ষ থাকবে, সেটা বলেননি খালেদা জিয়া। তার উত্থাপিত ভিশন ২০৩০ অনুমোদনের আগে এই বিষয়টি নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে বাদানুবাদের খবরও প্রকাশ হয়েছে গণমাধ্যমে। এসব প্রতিবেদনে বলা হয়, বিএনপির শীর্ষ নেতাদের একটি অংশ চান না, বাংলাদেশে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ থাক। কারণ যে ক্ষেত্রে ভারতের মত বাংলাদেশকেও বিভিন্ন প্রদেশে ভাগ করতে হবে।

খালেদা জিয়া বলেন, ‘সংবিধানের এককেন্দ্রীক চরিত্র অক্ষুন্ন রেখে বিদ্যমান সংসদীয় ব্যবস্থা সংস্কারের অংশ হিসেবে জাতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা করার বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে।’

সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের সিদ্ধান্তও পর্যালোচনার ঘোষণা দেন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর সংবিধানের পঞ্চদশ ও ষষ্ঠদশ সংশোধনীর মাধ্যমে গণভোট ব্যবস্থা বাতিল, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল, সংসদ বহাল রেখে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধান প্রবর্তন, সংবিধানের কিছু বিষয় সংশোধন, পরিবর্তন, প্রতিস্থাপন, রহিতকরণ এবং সংবিধানের কতিপয় ধারা, উপধারা সংশোধনের অযোগ্য করার বিধান প্রবর্তন, উচ্চ আদালতের বিচারকদের অভিসংশনের ক্ষমতা সংসদের ওপর ন্যস্তকরণের বিধানসহ কয়েকটি অগণতান্ত্রিক বিধান প্রণয়ন করে। বিএনপি এসব বিতর্কিত ও অগণতান্ত্রিক বিষয়াবলী পর্যালোচনা ও পুনঃপরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক সংস্কার করবে।’

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বাতিল হওয়া গণভোট ব্যবস্থাও পুনঃ প্রবর্তনের ঘোষণা দেন খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, ‘এই বিধান চালু করে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনস্থাপন করবে।’

জাতীয় সংসদকে সকল কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করারও ঘোষণা দেন বিএনপি নেত্রী। বলেন, ‘জাতীয় স্বার্থ সম্পর্কিত বিষয়ে বিরোধী দল সমূহের সাথে আলোচনা করা হবে। পাবলিক একাউন্টস কমিটি ও পাবলিক আন্ডারটেকিং কমিটির সভাপতিত্ব বিরোধী দলের সদস্যদের ওপর অর্পণ করা হবে।’