ভোলার তেঁতুলিয়া নদীর তীরে দৃষ্টিনন্দন ‘বঙ্গবন্ধু পার্ক’

উপকূলীয় জেলা ভোলার তেঁতুলিয়ার পাড় ঘেঁষে গড়ে উঠেছে অপরূপ ‘বঙ্গবন্ধু পার্ক’।

বাহারি রংয়ের সিসি ব্লক, ছোট-বড় বেঞ্চ ও ছাউনি, আর চারদিকে সবুজে ঘেরা বৃক্ষরাজি আর পাখিদের কলকাকলি, নদীর ঢেউ, প্রকৃতির নির্মল বাতাস আর সূর্যাস্ত নিয়ে গড়ে উঠা ‘বঙ্গবন্ধু পার্ক’ এখন দর্শনার্থীদের ভীড়ে মুখরিত।

ভোলা সদরের দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের কোড়ালিয়া গ্রামে তেঁতুলিয়া পাড়ে এ পার্কটি নির্মাণ করা হয়েছে।

জেলার অন্যতম দর্শনীয় স্পট, জেলার পর্যটনের এক নতুন দিগন্ত সৃষ্টি করেছে পার্কটি।

চারদিকের মনোরম পরিবেশ মুগ্ধ করে দর্শনার্থীদের পার্কটিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে পর্যটক কেন্দ্র। সবুজ প্রকৃতি, নীল আকাশ প্রকৃতির নির্মল বাতাস আর তোঁতুলিয়া নদীর ঢেউ দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন মানুষ।

ঘুরতে আসা কে. এইচ মাতাব্বর বলেন, ভোলায় বিনোদন কেন্দ্রের সংখ্যা এমনিতেই কম। তবে বঙ্গবন্ধু পার্কটি একটি দর্শনীয় স্পট। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এখানে ঘুরতে আসে। এমনই একজন সোহান।

তিনি বলেন, আমি এখানে ঘুরতে এসে মুগ্ধ। পরিবার-পরিজন নিয়ে ভ্রমণের জন্য পার্কটি অন্যতম।

নিলয় জানান, আমরা এখানে মাঝে মধ্যেই ঘুরতে আসি। যতবার এসেছি ততবারই ভালো লেগেছে।

সরেজমিন দেখা যায়, পার্কের চারপাশে বাহারি রংয়ের সিসি ব্লক বিছানো হয়েছে। রয়েছে বসার বেঞ্চ, ছাউনিসহ নানা স্থাপনা। রয়েছে সবুজ প্রকৃতি ও তেঁতুলিয়া নদীর ঢেউ এবং সূর্যাস্তের মনোরম দৃশ্য। দিন দিন পর্যটকদের জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পার্কটি। ছুটির দিনে এখানে প্রচুর মানুষের সমাগম হয়।

প্রায় ২ একর এলাকা জুড়ে মনোরম পরিবেশে আধুনিকরূপে পার্কটি নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে এলেই মন জুড়িয়ে যায় পর্যটকদের। নৌকায় ঘুরে বেড়ানো, ছবি তোলা আর বাহারি রংয়ের সিসি ব্লকে বসে অবসর কাটানোর একটি অন্যতম দর্শনীয় স্থান এটি। ভ্রমণপিপাসুদের কাছে এটি একটি প্রিয় স্থান হয়ে উঠেছে। পার্কের পাশেই শিশুদের জন্য বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে।

ভোলা-১ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের গ্রামের বাড়ির পেছনের অংশে পার্কটির অবস্থান। তেঁতুলিয়া বাঁধকে নানারূপে সাজিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে দর্শনীয় স্থান হিসেবে। যা এখন মন কাড়ে পর্যটকদের। পার্কটি এখন সবার কাছে পরিচিত। এখানে বসেই পড়ন্ত বিকেলের নয়নাভিরাম দৃশ্য উপভোগ করেন দর্শনার্থীরা।

২০১৩-১৪ সালের দিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড তেঁতুলিয়ার ভাঙন রোধে এখানে সিসি ব্লক স্থাপন করে। পরবর্তীকালে দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইফতারুল হাসান স্বপন ব্যক্তিগত অর্থায়নে পার্কটি নির্মাণ করেন এবং তা ধীরে ধীরে আধুনিকরূপ নেয়। ভ্রমণপিপাসুদের প্রিয় স্থান হিসেবেই মন জয় করেছে পার্কটি।

ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, ২০১৩-১৪ সালের দিকে ভাঙন রোধে তেঁতুলিয়া পাড়ের প্রায় ৯শ মিটার দৈর্ঘ্যে সিসি ব্লক স্থাপন করা হয়। এরপর থেকে এটি এখন পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিণত হয়েছে।

পার্কের উদ্যোক্তা ও দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান ইফতারুল হাসান স্বপ্ন বলেন, বঙ্গবন্ধু পার্কটি এখন ভোলার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এতো সুন্দর মনোরম পরিবেশে, যে এখানে আসবে তারই ভালো লাগবে। দিনে এবং রাতে এখানে পর্যটকদের সমাগম থাকে। বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ এখানে ঘুরতে আসেন। সম্প্রতি এখানে উপকূল সাহিত্য সংসদ জমজমাট এক সাহিত্য আড্ডার আয়োজন করে বলে সংগঠনের সভাপতি কবি নীহার মোশারফ জানান।