মঠবাড়িয়ায় ইমরান গাজী হত্যা মামলা তদন্তে পিবিআই’র সাফল্য : ৫ আসামি কারাগারে

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার ইমরান গাজী হত্যা মামলা তদন্তে থানা পুলিশ বিতর্কিত ভুমিকা পালন করলেও সাফল্য দেখিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার পর বিজ্ঞ আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করে।এরপর তারা উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিন নিয়ে ১৫ ফেব্রয়ারি ৪ জন এবং ১৮ ফেব্রুয়ারি ১ জন পিরোজপুর চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।বিজ্ঞ আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান।

বর্তমানে কারাগারে থাকা আসামিরা হলো-সবুজ নগর এলাকার ফাতিমা বেগম,মেহেদী হাসান,হারুন অর রশীদ, পশ্চিম টিকিকাটা এলাকার ফেরদৌস মৃধা এবং মুহিত মৃধা।অভিযুক্ত আসামি ইলিয়াস খলিফা ও হালিম গাজী উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিনে থাকলেও সবুজ নগর এলাকার রফি ফকিরের পুত্র রাজু ফকির পলাতক রয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই ইন্সপেক্টর মোঃ আহসান কবির জানান,পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার (অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক) এবং পিবিআই পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলামের দিক নির্দেশনায় ইমরান গাজী হত্যা মামলায় আশার আলো দেখতে পেয়েছি। পূর্বের সুরতহাল ও ময়না তদন্তের প্রতিবেদনের সাথে সাক্ষীদের জবানবন্দি ও পারিপার্শ্বিক বিষয় সমূহের মিল না থাকায় বিজ্ঞ আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে ডিসিস্ট ইমরান গাজীর (২৫) লাশ পুনরায় ময়না তদন্ত ও ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য কবর থেকে উত্তোলন করা হয়।১০ জন মানিত সাক্ষী এবং ১৫ জন নিরপেক্ষ সাক্ষীদের সাক্ষ্য প্রমান নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদ তৈরি করি।পূর্বের সুরতহালে ইমরান গাজী ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে বলে উল্লেখ করা হয়।কিন্তু পিবিআই তদন্তে ইমরান গাজীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়।

মামলার বাদী আব্দুলাহ গাজী জানান,ইমরান গাজী হত্যাকান্ডের ঘটনা নিয়ে পুলিশ বিতর্কিত ভুমিকা পালন করে।তারা সঠিক তদন্ত করতে ব্যর্থ হয়। থানায় মামলা না নিয়ে এ ঘটনায় তারা একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে বলে জানা যায়।আদালতে মামলা না করলে আমরা ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হতাম।হত্যাকান্ডের পর ঘটনাস্থলে এসে তদন্ত করেন ওই সময়ের মঠবাড়িয়া থানার সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) আসলাম।তিনি আসামিদের সাথে যোগসাজশ করে তদন্তে অবহেলা ও আসামিদের পক্ষপাতিত্ব করে। সুরতহালের ব্লাংক ফরমে আমাদের স্বাক্ষর নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে আমাদের সরিয়ে দেয়। এরপর লাশ থানায় নিয়ে যায়।এ সময় আমরা থানায় গেলে এসআই আসলাম আমাদের থানা থেকে বের করে দেয়।

উল্লেখ্য, মামলার ১ নং আসামি ফাতিমা বেগম এবং তার পরকিয়া প্রেমিক মামলার ২ নং আসামি ইলিয়াস খলিফাকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পায় ইমরান গাজী। এরপর তারা ইমরান গাজীকে হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকে।এরই ধারাবাহিকতায় ঘটনার দিন ২০২১ সালের ১১ অক্টোবর ইমরান গাজীকে হত্যা করে মরদেহ স্থানীয় আউয়াল শরীফের নির্মাণাধীন ভবনে ঝুলিয়ে রাখে।থানা পুলিশ মামলা না নেওয়ায় ডিসিস্ট ইমরান গাজীর বড় ভাই আব্দুল্লাহ গাজী বাদী হয়ে ২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পিরোজপুরকে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেন। মামলাটি তদন্তে আশার আলো দেখতে পায় পিবিআই।