মদন সরকারি ডিগ্রী কলেজ : ৪৪ টি শিক্ষকের পদ শূন্য, লেখাপড়া ব্যাহত

প্রতিনিধি মদন (নেত্রকোনা) : দীর্ঘদিন ধরে মদন সরকারি হাজী আব্দুল আজিজ খান ডিগ্রী কলেজের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, প্রাণি বিদ্যা, দর্শন, অর্থনীতি বিষয়ে শিক্ষকের পদসহ ৪৪টি পদ শূণ্য থাকায় লেখাপড়া মারাতœক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। তাছাড়া, বাংলা ও ইংরেজী বিষয়ে একজন করে শিক্ষক নিয়োগ থাকায় তারাও সঠিক ভাবে পাঠদান দিতে পারছেনা।

কলেজ সূত্রে জানা যায়, এ কলেজের ১৫টি বিষয়ে এইচএসসি ও ৯টি বিষয়ে স্নাতক কোর্স চালু রয়েছে। এখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা দুই হাজার তিন জন। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেনিতে একজন শিক্ষকও না থাকায় ডিজিটাল যুগে অত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এ কলেজটি ২০১৩ সালের মে মাসে জাতীয়করণ করা হয়। কিন্তু অদ্যাবদি প্রয়োজনীয় শিক্ষকের পদ সৃষ্টি করা হয়নি। প্রভাষক থেকে শুরু করে সহযোগী অধ্যাপক পর্যন্ত এখানে ৬০জন শিক্ষক থাকার পয়োজন। রয়েছে মাত্র ১৬জন্ আর তিন জন এমপিও ভুক্ত ও তিন জন ননএমপিও ভুক্ত প্যারা শিক্ষক রয়েছে।

দ্বাদশ শ্রেনির শিক্ষার্থী সাব্বির, জামিল, কামরুল, রবিন, নাঈম, সাথী, জেনি ও চাদনী আক্তার জানান, ভর্তি হওয়ার পর থেকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ক্লাস হয়না। হাতে গোনা কয়েকটি ইংরেজী ও বাংলা ক্লাস হয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীরা প্রাইভেট পড়তে বাধ্য হচ্ছে।

ছাত্র অভিবাবক নূরুল ইসলাম জানান, হাওরাঞ্চলের বঞ্চিত শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টির লক্ষে স্নাতক সম্মান ও স্নাতকোত্তর চালু করার জন্য অভিবাবক ও সচেতন মহল দীর্ঘ ধরে দাবি জানিয়ে আসলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করছি।

ইংরেজী প্রভাষক মোঃ আজিজুল হক জানান, ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে ইংরেজী বিষয়টি আমি একা পড়াচ্ছি। ফলে একদিনে অনেক গুলো ক্লাস চালানো আমার শারিরীক ও মানসিক চাপ পরে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশী থাকায় বছর শেষে তাদের সিলেবাস সম্পন্ন করা সম্ভব হয় না।

বাংলা প্রভাষক খাইরুল হক জানান, একা অনেক ক্লাস নিতে কষ্ট হয়। তিন গ্রুপের জন্য বাংলা কমন বিষয় হওয়ায় চাপ থাকে বেশী।

কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন,ইংরেজি,বাংলা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে শিক্ষক সংকট নিয়ে প্রতি মাসে দুবার করে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদপ্তরে (মাউশি) লিখিত ভাবে প্রতিবেদন পাঠানো হচ্ছে। শূন্য পদ গুলো জরুরী ভিত্তিতে পূরণ করার জন্য মহাপরিচালকের সাথে সাক্ষাৎ করা হয়েছে। এরপরও কোন কাজ হচ্ছে না। তিনি হাওরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মান উন্নয়নের লক্ষে জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।