মনোনয়ন না পেয়ে ‘ফাঁসি চাইলেন’ আওয়ামী লীগ নেত্রী

সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন না পেয়ে ময়মনসিংহের এক আওয়ামী লীগ নেত্রী নিজের ফাঁসি চাইলেন। তার নাম নাজনীন আলম।
ফেসবুকে নাজনীনের ‘আমার ফাঁসি চাই’ স্ট্যাটাস শিরোনামে নাজনীনের স্ট্যাটাস আলোচনার ঝড় তুলেছে। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য।

এর আগেও নাজনীন আলম তিনবার মনোনয়ন চেয়েছিলেন। আশায় ছিলেন এবার তার ভাগ্যের শিকে ছিড়বে। আওয়ামী লীগ এবার সংসদে ৫০টি আসনের মধ্যে ৪৩টি আসন পাচ্ছে। তবে নাজনীন এবারও মনোনয়ন পাননি দলের।

২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন নাজনীন। কিন্তু দল মার্কা দেয় সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী মজিবুর রহমান ফকিরকে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তার সঙ্গে লড়ার সিদ্ধান্ত নেন নাজনীন। কিন্তু পেরে উঠেননি।

২০১৬ সালের ২ মে মজিবুর রহমান ফকিরের মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হয়। ওই উপ-নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে বঞ্চিত হন নাজনীন।
একাদশ সংসদ নির্বাচনেও এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ করেন নাজনীন। কিন্তু এবারও মনোনয়ন বঞ্চিত হন। চূড়ান্ত মনোনয়ন পান জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নাজিম উদ্দিন আহমেদ। শেষ ভরসা হিসেবে ছিল সংরক্ষিত নারী আসন।

শনিবার রাত ৭টা ১১ মিনিটের দিকে ফেসবুকে ‘আমার ফাঁসি চাই’ শিরোনামে স্ট্যাটাস দেন নাজনীন। কারণ হিসেবে তিনি ‘ভুল’ ও ‘অপরাধের’ নয়টি কথা উল্লেখ করেন।

‘আমার ফাঁসি চাই..!!
১. কেন হাইকমান্ডের আশ্বাসকে সরল মনে বিশ্বাস করেছিলাম! ২. এলাকাবাসী ও দলীয় নেতাকর্মীদের পাশে থাকার প্রয়োজন কেন অনুভব করেছিলাম! ৩.এমপি/সিনিয়র কোনো নেতার পরিবারের সদস্য কেন আমি হলাম না! ৫. কেন দলের নাম ভাঙিয়ে একটি পয়সা রোজগারের ধান্ধা করিনি! ৬. কেন দলের জন্য কাজ করতে গিয়ে দিনে দিনে নিঃস্ব হতে গেলাম! ৭. কেন জনসমর্থন অর্জনের চেষ্টা করেছিলাম! ৮. কেন তদবির/তেলবাজি ঠিকমতো করতে পারলাম না! ৯. কেন সমর্থকদের বারবার কাঁদাচ্ছি!- সম্ভবত এসবই আমার ভুল ও অপরাধ! এজন্য আমার শাস্তি হওয়া উচিত।

নাজনীন আলমের স্বামী ফেরদৌস আলম গণমাধ্যমকে বলেন, তার স্ত্রী নাজনীন আলম হাসপাতালে গেছেন। বলেন, ‘আপনারা জানেন আমার স্ত্রী ও আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে মানুষ। সাধারণ মানুষের সুখে-দুঃখে মিশে আছি। দলের জন্য জীবনের যা অর্জন ছিল সব দিয়ে দিয়েছি। এরপরও আমরা কী পেলাম!’