মাটির নিচে এক অজানা জগৎ!

ব্রাজিলের মাটির নিচে একাধিক সুড়ঙ্গের সন্ধান মিলেছে যা লক্ষাধিক বছর ধরে ছিল লোকচক্ষুর আড়ালে। যা প্রকাশ্যে আসে ২০০০ সালের পর। জানা গেছে এক ভূবিজ্ঞানী তার যাতায়াতের পথে হঠাৎই একদিন ওই সুড়ঙ্গের সন্ধান পান।

জানা গেছে, সুড়ঙ্গগুলির এক একটির দৈর্ঘ্য প্রায় ২০০০ ফুট। উচ্চতায় ৬ ফুটেরও বেশি । এবং আকারে প্রশস্ত এই সুড়ঙ্গগুলিতে প্রবেশ ও প্রস্থানের রয়েছে একাধিক পথ। কোনো কোনো প্রবেশপথ ১৫ ফুটেরও বেশি প্রশস্ত।

রিও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ভূবিজ্ঞানী হেইনরিখ ফ্র্যাঙ্ক, যিনি প্রথম মাটির নিচে ওই সুড়ঙ্গগুলো আবিষ্কার করেন। একটি নির্মিতব্য বাড়ির নিচে গর্তগুলি উদ্ধার করেন তিনি। উদ্ধার হওয়া গর্তগুলির আকৃতি,গঠন দেখে কৌতূহলতা হয় ফ্র্যাঙ্কের মধ্যে। তিনি ঠিক করেন, ওই গর্তের ভেতর প্রবেশ করে দেখবেন সেখানে কি রয়েছে। তারপরই রহস্য ভেদ করলেন সুড়ঙ্গ’র ।

ফ্র্যাঙ্কের আগে অনেকে এই ধরনের সুড়ঙ্গ লক্ষ্য করেও গুরুত্ব দেননি। অনেকে ভেবেছিলেন প্রাকৃতিক ভাবেই এই গুহাগুলো সৃষ্ট । এদিকে ফ্র্যাঙ্কই প্রথম জানান যে, গুহার মতো দেখতে এই সুড়ঙ্গগুলি প্রাকৃতিক নয়। সেগুলিকে বানানো হয়েছে। তিনি এমন একটি তথ্য দিয়েছেন যা খানিকটা অবাক করার মতোই। তার মতে যারা এই সুড়ঙ্গগুলি বানিয়েছে তারা মানুষ নয়!

ফ্র্যাঙ্ক বলেন, সুড়ঙ্গের ভিতর প্রবেশ করে তিনি দেখেছেন গুহাগুলির দেওয়াল জুড়ে রয়েছে শক্ত নখের আঁচরের দাগ, যা মানুষের পক্ষে করা মোটেও সম্ভব নয়। এরপরই সুড়ঙ্গগুলি নিয়ে গবেষণা চালাতে শুরু করেন এই ভূবিজ্ঞানী। জানতে পারেন ব্রাজিলের মাটির নিচে এমন অন্তত হাজার দেড়েক সুড়ঙ্গপথ রয়েছে। আর প্রত্যেকটিরই বৈশিষ্ট্য একই রকম । প্রত্যেকটি সুড়ঙ্গ’রয়েছে একাধিক প্রবেশ পথ। তার ব্যাখা থেকে জানা যায় এই সুড়ঙ্গ কোনও প্রাগৈতিহাসিক প্রাণীর তৈরি করা। সেই প্রাণী হতে পারে ডাইনোসর সমসাময়িক।

ফ্র্যাঙ্ক জানিয়েছেন বিষয়টি যে শুধু গবেষণা করার মতো তাই নয়, এই নিয়ে সতর্ক হলে এই প্রাগৈতিহাসিক প্রাণীদের তৈরি গুহা বা সুড়ঙ্গগুলো সংরক্ষণও করা সম্ভব হবে। প্রাগৈতিহাসিক যুগের মানুষের তৈরি স্থাপত্য তো আছেই তার পাশাপাশি প্রাণীর তৈরি ঘর দেখারও সুযোগ হবে বলেই মনে করেন ফ্র্যাঙ্ক।

একইসঙ্গে তিনি জানান, নির্মাণ কাজের চাপে ওই সুড়ঙ্গগুলি নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে । তাই নিজের উদ্যোগেই ইতিমধ্যে সংরক্ষণের কাজ শুরু করেছেন তিনি। তবে প্রক্রিয়াটি বেশ কঠিন হতে চলেছে । ব্রাজিলের মাটির নীচে থাকা প্রায় দেড় হাজার সুড়ঙ্গের প্রত্যেকটির বৈশিষ্ট্য বিচার করা খুব সহজ কাজ নয়। ফ্র্যাঙ্ক জানিয়েছেন, তারা চেষ্টা চালাচ্ছেন এবং আশাবাদী আরও অনেকেই এই ব্যাপারে তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসবেন।