মাঠে ওরা ৩৩ জন, হতে চান মুস্তাফিজ-সৌম্য!

চোখেমুখে স্বপ্নের ঝিলিক, লক্ষ্যে পৌঁছাতে অদম্য ইচ্ছার প্রতিশ্রুতি। হাসিতে খুশীতে ভরা প্রিয় মুখগুলো। আনন্দে উচ্ছ্বল এই কিশোর-কিশোরীরা এক একজন মস্তবড় মাঠ সৈনিক। কেউ ক্রিকেট, কেউ ফুটবল, কেউ হকি, বক্সিং, শ্যুটিং, টেবিল টেনিস। কেউ বা তাইকোয়ান্ডো, জিমন্যাসিয়াম নিয়েই অভীষ্ট লক্ষ্যের দিকে এগুচ্ছেন।

সাতক্ষীরার সৌম্য সরকার আর মুস্তাফিজের ব্যাটিং বোলিং প্রতাপ যখন বিশ্বজোড়া তখন সাতক্ষীরার এই কিশোর কিশোরীরাই বা বসে থাকবে কেন। সৌম্য আর মুস্তাফিজের অনুপ্রেরণায় তারা এখন বিকেএসপির শিক্ষার্থী। কেউ ঢাকায়, কেউ চট্টগ্রামে, কেউ খুলনায়, আবার কেউ বা বরিশালে শিখছেন।

ঈদের ক’দিনের ছুটিতে তারা সাতক্ষীরায় বাবা মার কাছে এসেছিলেন। আবারও চার মাসের অনুশীলন ক্যাম্পে ফিরে যাবার মুখে শুধু এক গাল হাসি ছড়িয়ে স্বপ্নের কথা শোনাতে রবিবার সকালে এসেছিলেন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে। ওরা ৩৩ জন। নিজ নিজ ইভেন্টে তারা এক একজন সৈনিক।

বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিকেএসপির প্রতিভা অন্বেষণ প্রতযোগিতায় শুধু সাতক্ষীরা থেকে অংশ নিয়েছিলেন আট শত ছাত্র ছাত্রী। তাদের মধ্যে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা এই ৩৩ জন এখন নতুন স্বপ্ন নিয়ে ক্রীড়া অনুশীলনের সিঁড়ি মাড়াচ্ছেন।

এই কিশোরদের প্রশিক্ষক অভিভাবক খন্দকার আরিফ হাসান প্রিন্স বলেন, তাদের মধ্যে হাসিবুল হাসান বক্সিংয়ে স্বর্ণপদক, আফরা খন্দকার প্রাপ্তি বক্সিংয়ে ব্রোঞ্জ পদক আর রজনী চীনে শ্যুটিং চ্যাম্পিয়নশীপে অংশ নিয়ে ব্রোঞ্জ পদক লাভ করে নিজেদের নৈপুণ্য ও দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। অন্যরাও একই পথ ধরে এগিয়ে যাচ্ছেন সাফল্যের শিখরে।

তাদের সঙ্গী হয়ে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে ঈদ শুভেচ্ছা জানাতে আরও এসেছিলেন নাহিদ হাসান, ফারজানা, রায়না, স্বর্ণালী, খাদিজা খাতুন তমা, মেহেদি হাসান, শোভা, নিবিড়, আফ্রিদা খন্দকার প্রান্তি, সোহেল রানা, মাহিম হাসান, ইয়াসিন হাসান, শাহী আলম মাহমুদ, সিজান, জয় বিশ্বাস, সাকিবুজ্জামান রাজ, হাবিবুর রহমান, আশিকুজ্জামান প্রমুখ ছাড়াও তাদের অভিভাবকরা।

ওরা কেউ হতে চান মুস্তাফিজ, কেউ সৌম্য সরকার। আবার কেউ কেউ হতে চান ম্যারাডোনা, কেউ শচীন টেন্ডুলকার, সৌরভ গাঙ্গুলী, কেউ মেসি , কেউ নেইমার।

প্রেসক্লাব সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ও সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল বারী তাদের স্বাগত জানিয়ে কিশোর কিশোরীদের স্বপ্ন সফলতার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেন, এই সব কিশোরদের উন্মুক্ত মাঠে অনুশীলনে আনতে হবে। তাদেরকে ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব হিসাবে গড়ে তুলতে সব সহায়তা দিতে হবে। এজন্য প্রাথমিক দায়িত্ব নিতে হবে সচেতন অভিভাবকদের।

বিকেএসপির এই শিক্ষার্থীরা প্রায় সবাই ক্লাস সিক্স সেভেনের ছাত্র। বিকেএসপিতে রুটিন অনুশীলনের সাথে সাথে লেখাপড়াও চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। সরকার তাদের সুনাগরিক ও ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব হিসাবে গড়ে তুলতে সব ধরনের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। ওদের স্বপ্ন আমরাও এক একজন মুস্তাফিজ আর সৌম্য হয়ে উঠতে চাই। সেই স্বপ্ন সাধ নিয়েই তাদের এগিয়ে চলা।