মানুষের জীবন নিয়ে রাজনীতি বন্ধ করুন : আইএবি ঢাকা মহা. উত্তর

বর্তমান সরকারকে মানুষের জীবন নিয়ে রাজনীতি বন্ধ করার অনুরোধ জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (আইএবি) ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ।

তিনি বলেন, ভারত প্রীতি ও দিল্লিমুখী পররাষ্ট্রনীতির কারণেই করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) এর ভ্যাকসিন পাওয়া নিয়ে এখন অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। চীনের সঙ্গে চুক্তির পর সরকার সেটাকে ফাইলবন্দি রেখে দিল্লিকে খুশি করতে ভারতের সঙ্গে ভ্যাকসিন চুক্তি করেছে। এটা ছিল আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। এখন যদি ভ্যাকসিন দিতে চার থেকে পাঁচ মাস দেরি হয়ে যায়, আর তাতে করে কিছু মানুষের মৃত্যু হয়, কিছু মানুষ সংক্রমিত হয়, তার দায়িত্ব কি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিবে? তাই সরকারকে বলব নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য দেশের সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা বন্ধ করুন।

মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি ২০২১) ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর শাখা আয়োজিত এক জরুরী সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় অন্যানের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা অরিফুল ইসলাম, সহ-দফতর সম্পাদক মুফতী নিজাম উদ্দিন, ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. শওকত আলী হাওলাদার প্রমুখ।

শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, বিশ্বের অন্তত ৩০টি দেশে ইতিমধ্যে টিকা দেওয়া শুরু করেছে। বাংলাদেশেও জানুয়ারিতে টিকা পাবে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এতদিন জোর গলায় জানিয়েছিলেন। অথচ আমাদের যথা সময়ে টিকা পাওয়ার আশা এখন অনেকটাই ফিকে হয়ে গেছে। এখন যে পরিস্থিতি তাতে এপ্রিলের আগে টিকা পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তিনি বলেন, ভারত ¯পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে কয়েক মাসের জন্য তারা ভ্যাকসিন রফতানির অনুমতি দেবে না। কারণ তাদের দেশের জনগণের জন্য টিকার ব্যবস্থা সুনিশ্চিত না করা পর্যন্ত বাংলাদেশকে টিকা দেবে না। ভারত তো ঠিকই তাদের দেশের মানুষের কথা ভেবে সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করেনি। আর আমাদের সরকার দেশের মানুষের দিকে না তাকিয়ে অন্য দেশকে খুশি করতে ব্যস্ত।

নগর সভাপতি আরও বলেন, ভারতের সাথে উষ্ণ সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতেই সিনোভ্যাককে আমাদের দেশে ট্রায়াল করতে দেয়া হয়নি। সিনোভ্যাককে তাদের রিসার্চ কাউন্সিল এবং বাংলাদেশের মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিল অ্যাপ্রুভ করেছিল। অথচ যখন তারা ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরে যায়। সেখান থেকে কয়েক মাস ধরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এটাকে যাচাই-বাছাই করেছে। ওনারা কী যাচাই-বাছাই করেছেন, যার জন্য বিরাট একটা সুবিধা থেকে আমরা বঞ্চিত হয়েছি। তিনি বলেন, সিনোভ্যাক যদি ট্রায়াল দিতো, তাহলে ভ্যাকসিন বিষয়ে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে থাকতো। কিন্তু সেটা হলো না। এতদিন মানুষ ভ্যাকসিন পাওয়ার আশায় অপেক্ষা করেছিল। কিন্তু সরকারের স্বেচ্ছাচারিতায় সে আশা গুড়েবালি। এখন মানুষকে করোনার ঝুঁকি নিয়েই থাকতে হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রোজেনকার করোনা ভ্যাকসিন এ মাসেই বাংলাদেশের পাওয়ার কথা ছিল। চলতি বছরের জানুয়ারিতেই দেশে করোনার টিকা আসতে পারে বলে সরকারের তরফ থেকে একাধিকবার জানানো হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই ভারত সরকার ভ্যাকসিন রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় বাংলাদেশে জন্য টিকা প্রাপ্তিতে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।