মিতু হত্যা : আজও শনাক্ত হয়নি পরিকল্পনাকারী

বহুল আলোচিত সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার দুই বছর পূর্ণ হচ্ছে মঙ্গলবার। ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয় মিতুকে। ঘটনার দুই বছর পেরোতে গেলেও এই আলোচিত হত্যাকাণ্ডের কোনো সুরাহা করতে পারেনি পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বলছেন, শিগগিরই দেয়া হবে চার্জশিট।

মিতু হত্যায় জড়িত দাবি করে ঘটনার পরের এক মাসে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে সাত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এদের মধ্যে দুজন পুলিশের সঙ্গে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। যাকে হত্যাকাণ্ডের ‘মূল আসামি’ বলছে পুলিশ, সেই কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুছা শিকদার এবং ‘হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেয়া’ কালুর হদিস গত দুই বছরেও মেলেনি।

তবে এ হত্যাকাণ্ডে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার ‘নির্দোষ’ শাহ জামান ওরফে রবিন (২৭) দেড় বছর জেলের ঘানি টানার পর গত তিনমাস আগে জামিনে বের হয়েছেন। এ ছাড়া মিতুকে তার স্কুলপড়ুয়া ছেলের সামনে কার পরিকল্পনায় কেন হত্যা করা হয়েছিল, সেই প্রশ্নের উত্তর দুবছর তদন্তের পরও দিতে পারেনি পুলিশ।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্তি উপ-কমিশনার (উত্তর) কামরুজ্জামান বলেন, ‘মিতু হত্যা মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) প্রস্তুত। খুব তাড়াতাড়ি চার্জশিট জমা দেয়া হবে। তবে কবে দেয়া হবে তা সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারছি না।’

তিনি জানান, এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে দুজন ক্রসফায়ারে মারা গেছে। মুসা ও কালু নামে দুজনকে এখনও গ্রেফতার করা যায়নি।

যদিও গত বছরের জুলাই মাসেই চার্জশিটের বিষয়টি নিষ্পত্তি করার কথা জানিয়েছিল চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার ইকবাল বাহার। মিতু হত্যার একবছর পূর্তিতে তিনি বলেছিলেন, ‘বছর অতিক্রান্ত হয়ে যাচ্ছে, খুব বেশিদিন অপেক্ষা করাটা সমীচীন হবে না। যেহেতু চার্জশিট দিতে হবে, আমরা চাচ্ছি জুলাই মাসের মধ্যে এটা নিষ্পত্তি করতে।’

দুই বছরেও শনাক্ত হয়নি পরিকল্পনাকারী

২০১৬ সালের ৫ জুন প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গুলি করে খুন করা হয় মিতুকে। সে সময় চট্টগ্রামে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততাও মিতু হত্যাকাণ্ডের সম্ভাব্য কারণ হতে পারে ধরে নিয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তবে অল্প দিনেই সে ধারণা থেকে সরে আসেন তদন্তকারীরা। এ খুনের নির্দেশদাতা কে দুই বছরেও তা নিয়ে স্পষ্ট কিছু বলতে পারছে না পুলিশ।

এদিকে মিতুর স্বজনদের দাবি, মূল আসামিকে বাঁচাতে দীর্ঘায়িত করা হচ্ছে এ মামলার তদন্ত। তারা এ হত্যার নির্দেশদাতা হিসেবে মিতুর স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকেই ইঙ্গিত করছেন। যদিও তদন্তকারী সংস্থা নগর গোয়েন্দা পুলিশ বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলছে না।

হত্যাকাণ্ডের পর বাবুলের শ্বশুর সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন জামাতার পক্ষে কথা বললেও পরে তার মেয়ের হত্যাকাণ্ডের পেছনে জামাতার ‘পরকীয়া সম্পর্কের’ সন্দেহের ইঙ্গিত করে তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করে তিনি এসব দাবি জানানোর পাশাপাশি ওই সময় সাংবাদিকদের কাছে এ দাবি করেন। বাবুল আক্তারের সঙ্গে উন্নয়নকর্মী গায়ত্রী সিং ও রাজধানীর বনানীর বিনতে বসির বর্ণি নামে দুই নারীর সম্পর্কের কথা বলেছিলেন তিনি।

তবে সে সময় উল্টো শ্বশুরপক্ষ তাকে ঘায়েল করতে চাচ্ছেন অভিযোগ করে সঠিক তদন্তেই হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত রহস্য উদঘাটন হবে বলে দাবি করেছিলেন বাবুল আক্তার।

তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, হত্যাকাণ্ডের দুই সপ্তাহের মধ্যেই তারা বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততার ব্যাপারে ইঙ্গিত পান। স্ত্রী খুন হবেন বিষয়টি বাবুল জানতেন। তবে এ হত্যা মামলায় অভিযোগপত্র জমা দেয়ার পর বিস্তারিত জানা যাবে।

এ বিষয়ে কথা বলতে বাবুল আক্তারের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

হদিস নেই প্রধান আসামি, ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ মুছার

মিতু হত্যার ২০ দিন পর ২০১৬ সালের ২৬ জুন পুলিশের পক্ষ থেকে মো. আনোয়ার ও মো. মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম নামে দুজনকে গ্রেফতারের কথা জানানো হয়।

পরে বলা হয়, আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে তারা হত্যাকাণ্ডের মূল নায়ক হিসেবে মুছার নাম বলেছেন। রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ছাত্রলীগ নেতা রাশেদ হত্যাসহ প্রায় ছয় মামলার আসামি মুছা ছিলেন চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার বাবুল আক্তারের সোর্স। আর হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রটি সরবরাহ করেন বাবুল আক্তারের আরেক সোর্স হিসেবে পরিচিত নগরীর বাকলিয়া এলাকার এহেতেশামুল হক ভোলা।

পুলিশ জানায়, মুছা, তার দুই সহযোগী নবী ও কালু হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেন। এর মধ্যে নবী ও কালু ছুরিকাঘাত করেন বলে জবানবন্দিতে ওয়াসিম জানিয়েছেন। পরে বাকলিয়া এলাকা থেকে ভোলা ও তার সহযোগী মনিরকে পয়েন্ট ৩২ বোরের একটি পিস্তলসহ গ্রেফতার করে পুলিশ। উদ্ধার করা পিস্তলটিই মিতু হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হয় বলে পুলিশ জানায়।

ওই ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে ভোলা ও মনিরকে আসামি করে অস্ত্র আইনে একটি মামলা করা হয়। মিতু হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয় ভোলাকেও। ভোলা ও মনিরকে আসামি করে পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দেয়ার পর ২০১৬ সালের ২২ নভেম্বর আদালতে এই অস্ত্র মামলার বিচার শুরু হয়।

ভোলা ছাড়াও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল ‘সরবরাহকারী’ মুছার ভাই সাইদুল আলম শিকদার ওরফে সাকু ও মো. শাহজাহানকে বিভিন্ন সময়ে গ্রেফতার করে পুলিশ। আর নুরুল ইসলাম রাশেদ ও নুরুন্নবী ওই বছরের ৫ জুলাই পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন।

এদিকে তদন্ত-সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘গ্রেফতার হওয়া আসামিদের মধ্যে এরই মধ্যে যারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন এবং যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, তাদের কারও মুখে ঘটনার মোটিভ ও আসল নির্দেশদাতার নাম উঠে আসেনি। ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়া আসামিদের সবাই বলেছে, এ কিলিং মিশনে অংশ নেয়ার জন্য তাদের ভাড়া করে মুছা শিকদার। তাই এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনে মুছাকে গ্রেফতার করাটা খুবই জরুরি। কারণ মুছাই জানেন, কোন ব্যক্তির নির্দেশে তাদের এ খুনের জন্য ভাড়া করেছে এবং কেন এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। একইভাবে এ খুনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত আরেক পলাতক আসামি কালুর কাছেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে।’

তবে পুলিশের খাতায় মুছা পলাতক থাকলেও তার পরিবার বলছে ভিন্ন কথা। তাদের দাবি, মুছা পুলিশ হেফাজতেই রয়েছেন। ২০১৬ সালের ৪ জুলাই সংবাদ সম্মেলন করে মুছার স্ত্রী পান্না আকতার বলেন, ‘ওই বছরের ২২ জুন বন্দর এলাকার বাসা থেকে মুছাকে সাদা পোশাকের পুলিশ গ্রেফতার করে। এরপর মুছাসহ অন্য আসামিদের নগরীর দামপাড়া পুলিশ লাইনে রাখা হয়। কিন্তু অন্য আসামিদের গ্রেফতার দেখালেও মুছাকে গ্রেফতার দেখানো হয়নি। মুছার পরিণতি নিয়ে অনেকের কাছে নানারকম তথ্য শুনি।’

ওইসময় তিনি দাবি করেন, ২২ জুন বন্দর থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিউদ্দিন সেলিমের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল মুছাকে গ্রেফতার করে। তবে পুলিশ বরাবরই এ দাবি নাকচ করে আসছে। মুছা ও তার সহযোগী কালুর সন্ধান পেতে পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করে চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার।

এদিকে ঘটনার আড়াইমাস পর ১৬ আগস্ট বাংলাদেশ পুলিশের তৎকালীন এআইজি (কনফিডেন্সিয়াল) মো. মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, চট্টগামে পুলিশের সোর্স মুছা ভারতে গ্রেফতার হয়েছেন। একদিন পরেই পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, নামে অনেকটা মিল থাকলেও ভারতে আটক মুসা বাংলাদেশের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ মুছা শিকদার নন। ভারতে আটক মুসার পুরো নাম মো. মুসাউদ্দিন ওরফে মুসা।

বিনা বিচারে দেড় বছর জেলের ঘানি টানলেন ‘নির্দোষ’ রবিন

মিতু হত্যাকাণ্ডের পরপরই ২০১৬ সালের ৮ জুন (বুধবার) সকালে হাটহাজারীর মুসাবিয়া দরবার শরীফ থেকে আবু নছর গুন্নু এবং ১১ জুন (শনিবার) সকালে নগরের বায়েজিদ থানার শীতলঝর্ণা এলাকার একটি আধাপাকা টিনের ছাউনির বাড়ি থেকে শাহ জামান ওরফে রবিনকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার করে পুলিশ।

তখন পুলিশের দাবি ছিল, আবু নছর গুন্নু ‘শিবির ক্যাডার’ ও এক রিকশাচালক পাঁচলাইশ থানায় মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন- মিতু হত্যার সঙ্গে রবিন জড়িত।

পরদিন (১২ জুন) আবু নছর গুন্নু ও শাহ জামান রবিনের ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান। এতে দুজনের প্রত্যেককে সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম হারুনুর রশিদ।

যদিও রিমান্ড চলাকালে ১৬ জুন সিএমপি কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহার জানান, পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু আক্তার খুনের ঘটনায় আটক আবু নছর গুন্নু ও শাহ জামান রবিন জড়িত কি না এ বিষয়ে পুলিশ এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারেনি।

তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আটক দুজন মিতু হত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ত কি না তা এখনো বলতে পারছি না। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আরও চারদিন তারা পুলিশের হেফাজতে থাকবে। এ ঘটনায় তাদের কাছ থেকে তথ্য আদায়ের চেষ্টা করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ফলাফল জানাতে পারবো।’

সাত দিনের রিমান্ড শেষে ২০ জুন মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) দেবদাস ভট্টাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, ‘রবিনের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে তার বিরুদ্ধে নগরীতে ছিনতাই ও চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে।’

যদিও গুন্নুকে আটকের পর মুসাবিয়া দরবারের পরিচালনা কমিটির একাংশ সংবাদ সম্মেলন করে দাবি করে, পুলিশ ৩০ লাখ টাকার বিনিময়ে তাকে মিতু হত্যায় ফাঁসিয়েছে। পরবর্তীতে গুন্নু জামিনে বের হলেও রবিনের পক্ষে কেউ জামিন আবেদন না করায় তাকে কারাগারেই থাকতে হয়।

প্রায় দেড়বছর জেলের ঘানি টানার পর চট্টগ্রামের কয়েকজন সাংবাদিকের সহায়তায় গত তিনমাস আগে জামিনে বের হয়ে আসেন অসহায় যুবক রবিন।

রবিন প্রসঙ্গে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বলছেন, ‘রবিন নির্দোষ। অভিযোগপত্র থেকে তাকে বাদ দেয়া হবে। তখন মুক্তির ক্ষেত্রে তার আর কোনো বাধা থাকবে না।’

প্রসঙ্গত, ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রামের ওআর নিজাম রোডের বাসা থেকে কয়েকশ গজ দূরে নগরীর জিইসি মোড়ে খুন হন বাবুলের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু। মোটরসাইকেলে করে আসা কয়েকজন সেখানে ছেলের সামনে তাকে প্রথমে ছুরিকাঘাত করে। পরে গুলি করে হত্যা করে। সে সময় পুলিশ সুপার হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সদর দফতরে যোগ দিয়ে ঢাকায় ছিলেন বাবুল।

চট্টগ্রামে জঙ্গি দমন অভিযানের জন্য আলোচিত বাবুল আক্তার চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনারের দায়িত্ব থেকে পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সদর দফতরে যোগ দেয়ার কয়েক দিনের মাথায় খুন হন তার স্ত্রী। হত্যাকাণ্ডের পর নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন বাবুল আক্তার।

এরপর চট্টগ্রামে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততাও মিতু হত্যাকাণ্ডের সম্ভাব্য কারণ হতে পারে ধরে নিয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তবে অল্পদিনেই সে ধারণা থেকে সরে আসেন তদন্তকারীরা। হত্যাকাণ্ড নিয়ে নানা গুঞ্জনের মধ্যে ২৪ জুন রাতে ঢাকার বনশ্রীতে শ্বশুরের বাসা থেকে বাবুল আক্তারকে গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে নিয়ে প্রায় ১৪ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তখন তার কাছ থেকে জোর করে পদত্যাগপত্র নেয়ার খবর ছড়ালেও সে বিষয়ে কেউ মুখ খুলছিলেন না।

তার ২০ দিন পর ১৪ আগস্ট স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানান, বাবুলের অব্যাহতির আবেদন তার কাছে রয়েছে। আরও ২২ দিন পর ৬ সেপ্টেম্বর বাবুলকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

নানা আলোচনা সমালোচনার মধ্যে চুপ থাকা বাবুল আক্তার হত্যাকাণ্ডের দুই মাস পর ফেসবুকে স্ত্রীকে নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে আবার আলোচনায় আসেন। মিতু হত্যার পর থেকে বাবুল ঢাকায় শ্বশুরবাড়িতে থাকলেও নতুন চাকরিতে (বেসরকারি) যোগ দেয়ার পর দুই সন্তান নিয়ে ঢাকার মগবাজারে আলাদা বাসা নিয়ে থাকতে শুরু করেন।