মোবাইলে দৈনিক লেনদেন হাজার কোটি টাকা ছাড়ালো

সদ্য সমাপ্ত জুন মাসে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস)- সেবাটির মাধ্যমে মে মাসে দৈনিক লেনদেন হয়েছিল ৮৪৪ কোটি ২৩ লাখ টাকা। আর জুনে ১৫৬ কোটি ৫ লাখ টাকা বেড়ে তা দাঁড়ায় ১ হাজার কোটি ২৮ লাখ টাকায়। এই হিসেবে মে মাসের তুলনায় জুনে লেনদেন বেড়েছে ১৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ।বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এই তথ্য জানাগেছে।

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের কারণে গত ১১ মাস ধরেই রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে। যার অন্যতম কারণ হুন্ডি। এছাড়া এই পদ্ধতিতে অবৈধ জায়গায় অর্থায়ন করা হচ্ছে-দীর্ঘদিন ধরে এমন আশংকা করা হলেও দিন দিন বেড়েই চলেছে মোবাইলের মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন। বৈধ পথে অর্থ আদা-প্রদান বাড়াতে মোবাইলে লেনদেনের সীমা বেঁধে দেয়া হলে তা কমেনি।বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে একথা বলা হয়েছে।

মোবাইল ব্যাংকিংয়ের লাগাম টানতে চলতি বছরের জানুয়ারিতে লেনদেনে সীমা বেঁধে দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এই পদ্ধতিতে ব্যক্তি হিসাবে দিনে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ও মাসে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা জমা দেয়ার বিধান করা হয়। এ ক্ষেত্রে দিনে সর্বোচ্চ ২ বার ও মাসে ২০ বার টাকা জমা দেয়ার আইন করান হয়। তবে ৫ হাজার টাকার বেশি টাকা জমা বা উত্তোলনে গ্রাহকের পরিচয়পত্র বা স্মার্ট কার্ডের ফটোকপি প্রদর্শন ও এজেন্টকে পরিচয়পত্র নম্বর দেয়া বাধ্যতামূলক করা হয়। আগে একজন গ্রাহক তাঁর হিসাবে দৈনিক ৫ বার ও মাসে ২০ বার টাকা জমা দিতে পারত। এ ক্ষেত্রে প্রতিবার ২৫ হাজার টাকা ও মাসে দেড় লাখ টাকা জমা দেওয়ার সুযোগ ছিল।

একই সঙ্গে নগদ অর্থ উত্তোলনের ক্ষেত্রে দিনে সর্বোচ্চ ১০ হাজার ও মাসে ৫০ হাজার টাকা উত্তোলনের সুযোগ রাখা হয়। সেক্ষেত্রে দিনে সর্বোচ্চ ২ বারে ও মাসে ১০ বার নগদ অর্থ উত্তোলনের সুযোগ দেওয়া হয়। পাশাপাশি একটি হিসাবে অর্থ জমার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৫ হাজার টাকা পর‌্যন্ত উত্তোলনের সুযোগ রাখা হয়। যেখানে আগে দৈনিক ২৫ হাজার টাকা ও মাসে দেড় লাখ টাকা অর্থ উত্তোলনের সুযোগ ছিল। এসব নিয়ম করার পরও মোবাইলে লেনদেন বাড়ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সমাপ্ত অর্থবছরের জুনে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মোট লেনদেন হয়েছে ৩০ হাজার ৯ কোটি টাকা। যেখানে মে মাসে লেনদেন হয়েছিল ২৬ হাজার ১৭১ কোটি ২৮ লাখ টাকা। মাসের ব্যবধানে লেনদেন বেড়েছে প্রায় ১৫ শতাংশ।

জুনে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেনকৃত অর্থের মধ্যে ১২ হাজার ৩৩৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ক্যাশ ইন হয়েছে এবং ১১ হাজার ৪২৭ কোটি ১৭ লাখ টাকা ক্যাশ আউট হয়েছে। বাকি টাকা পি টু পি, বেতন পরিশোধ ও বিল পরিশোধের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে। বর্তমানে ১৭টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। সারাদেশে এসব ব্যাংকের ৭ লাখ ৫৮ হাজার ৫৭০টি এজেন্ট রয়েছে। মে মাসের তুলনায় জুনে এজেন্ট বেড়েছে ১ দশমিক ৬২ শতাংশ।-প্রতিবেদন চ্যানেল আই অনলাইনের সৌজন্যে প্রকাশিত।