‘যুদ্ধাপরাধী ও খুনীরা যেন আর ক্ষমতায় আসতে না পারে’

ষড়যন্ত্রের কারণে ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে পারিনি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে বারবার বিজয় ছিনিয়ে এনেছে বাংলাদেশের মানুষ। সংগ্রাম করেই ২১ বছর পর আবারও ক্ষমতায় আসতে পেরেছে আওয়ামী লীগ।

বুধবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের বিশ্ব স্বীকৃতি উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আওয়ামী লীগের জনসভায় এ কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৩-২০১৫ সাল খালেদা জিয়ার উৎসব ছিল আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারা।

যারা এতিমের টাকা যারা চুরি করেছে তাদের ক্ষমতায় না আনার জন্য জনগণের কাছে আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধাপরাধী ও খুনিরা যেন আর কখনও বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসতে না পারে। যারা এতিমের টাকা চুরি করে, যারা আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ায়, যারা দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে তারা যেন দেশকে আর ধ্বংসের দিকে নিয়ে যেতে পারে। এজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বলেন, আধুনিক বিশ্বের সঙ্গে তালে তাল মিলিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আগামী মাসেই বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ হবে। বাংলাদেশ যেন কারও কাছে ভিক্ষা করে না চলে, তার ব্যবস্থা করছি। বাংলাদেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, এই বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মাদক যেন যুবসমাজকে নষ্ট করতে না পারে। আজকে আপনারা বিবেচনা করে দেখেন , আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন হয়। অন্যরা স্বাধীনতায় বিশ্বাসই করত না, তাই দেশের উন্নতি হয়নি, নিজেদের উন্নতি করেছে। দেশের মানুষের উন্নতি হয়নি। আজকে সারা দেশের মানুষ স্বাধীনতার সুফল ভোগ করছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় একটা ভাষাভিত্তিক দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে পরিচিতি লাভ করিয়েছিলেন জাতির পিতা। এ দেশের মানুষ ছিল শোষিত-বঞ্চিত, তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য, অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য, রাজনৈতিক মুক্তির জন্যই ছিল জাতির পিতার আন্দোলন-সংগ্রাম। ফলাফল- তিনি গ্রেফতার, নির্যাতিত হয়েছেন, বারবার বন্দি হয়েছেন। আমাদের যুবসমাজ একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সংগ্রাম করেছে।

কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য মাত্র সাড়ে ৩ বছর হাতে সময় পেয়েছিলেন জাতির পিতা। এ অল্প সময়ে একটা দেশকে অনেক দূর নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। জাতির পিতা সবুজ বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন। ঠিক সেই মুহূর্তে (১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট) চরম আঘাত আসে। কী অন্যায় তিনি করেছিলেন? দেশকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন। এজন্য তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়েছে।

এর আগে বেলা ৩টার দিকে জনসভাস্থলে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী।

বেলা ২টার মধ্যেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান কানায় কানায় ভরে ওঠে। প্রধানমন্ত্রী মঞ্চে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে লাখো মানুষের স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে সভাস্থল। এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীসহ আরও অনেকে।

সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ধরে নানা জায়গা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল আসে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। এসব মিছিলে সভা উপলক্ষে তৈরি নানা প্রতিকৃতি, পোস্টার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিবাহী পোস্টার ও প্রতিকৃতি ছিল অনেকের হাতে।