যে প্রকল্প উদ্বোধন না করেই চলে গেলেন মেয়র আনিসুল হক

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক আমিনবাজার এলাকায় অবৈধভাবে দখল হয়ে যাওয়া সিটি কর্পোরেশনের ৫২ একর জমি নিয়ে একটি প্রকল্প হাতে নেন তিনি। প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের একান্ত সচিব একেএম মিজানুর রহমান বলেন, স্যার ৫২ একরের প্রকল্পটি নিয়ে খুবই আশাবাদী ছিলেন।

প্রায় ৩০ হাজার লোকের অ্যারেন্জমেন্ট ছিলো। সবাইকে দাওয়াত দেয়া শেষ, সাউন্ড সিস্টেম, স্টেজ ডেকোরেশন চলছে এমন সময় ২৮ জুলাই হঠাৎ করে স্যার বল্লেন, প্রোগ্রাম ক্যান্সেল করো। আমি অসুস্থ, লন্ডন যাবো। ফিরে এসে প্রকল্পের উদ্বোধন করবো। তিনি ফিরে এলেন। কিন্তু…….

আমিনবাজার এলাকায় অবৈধভাবে দখল হয়ে যাওয়া সিটি কর্পোরেশনের ৫২ একর জমি থেকে ইট-বালুর আড়ত আর অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করে ৩৭ একর জমি উদ্ধার করা হয়। বাকি জমির উপর বিজিজির মার্কেট থাকায় একটু দেরি হচ্ছিল উদ্ধারকাজে। এ প্রকল্পের অধীনে ৫ একর জমির ওপর অ্যাসফল্ট প্ল্যান্ট, ৩ একর জমিতে মেকানিক্যাল ওয়ার্কশপ, আরো ৩ একরে ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ওয়ার্কশপ, একটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিল্ডিং, ৬ একরের (ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ও ট্রান্সপোর্ট) পার্কিং, একটি স্কুল ফর স্ট্রিট চিলড্রেন, ৬ একরের বাস-ট্রাক ডিপো, এসটিএস, হসপিটাল, একটি আধুনিক পার্কসহ আরো কিছু স্থাপনা গড়ার কথা ছিল।

আর এ প্রকল্পের উদ্বোধনের জন্য দিনক্ষণ অতিথি সবই ঠিক করা হয়ে গিয়েছিল।

গত ৩০ জুলাই স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে ওই প্রকল্পের উদ্বোধন করতেন। কিন্তু হঠাৎ করে প্রকল্পটি উদ্বোধনের ঠিক একদিন আগে অনুষ্ঠান বাতিল করার কথা জানান আনিসুল হক। এরপর স্ত্রীকে নিয়ে ২৯ জুলাই লন্ডনে চলে যান তিনি।

মাত্র আড়াই বছর নগরপিতার দায়িত্ব পালন করে তিনি সাধারণ মানুষ, দিন মজুর, রিকশাচালক থেকে শুরু করে অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রত্যেকের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। আবার একইভাবে হয়েছেন অনেক দখলদারের চোখের বালি। মেয়র সম্পর্কে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিদ আনোয়ার বলেন, প্রথম দিন থেকেই উনি একটা কথা বলতেন, কাউকে চেনার দরকার নেই, কাউকে জানার দরকার নেই, আইনে যা আসে তাই করবেন। ওনার সাথে কাজ করতে গিয়ে কোনো চাপ, কোনো সুপারিশ, বাধা কিছু্ই পাইনি। সব উনি একাই সামলাতেন।