যে ১৩ টি কারণে অশুভ মনে করা হয় ১৩ সংখ্যাটিকে

‘আনলাকি থারটিন’ বা ‘অশুভ ১৩’ কথাটির সঙ্গে অনেকেই পরিচিত। এটা আসলে পশ্চিমা সংস্কৃতির অংশ। বলা হয়, ১৩ সংখ্যাটি খুবই অশুভ। এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। কিন্তু বিশ্বাস ও মিথ থেকে বিষয়টি মানুষের মনে ছেয়ে গেছে।

এ বিশ্বাসের প্রভাব এতটাই বেশি যে, চিকিৎসাবিজ্ঞানে এই ভীতির নাম দেওয়া হয়েছে ট্রাইস্কাইডেকাফোবিয়া। এখানে বিশেষ কিছু কারণ তুলে ধরেছেন বিজ্ঞানীরা। এদের বদৌলতে ১৩ সংখ্যাটি অশুভের তালিকায় চলে গেছে।

জেনে নিন, যে ১৩ কারণে অশুভ মনে করা হয় ১৩ সংখ্যাটিকে : –

১. ভিঞ্চির বিখ্যাত ‘দ্য লাস্টি সাপার’ চিত্রকর্মে ১৩ জন মানুষের উপস্থিতি দেখা গেছে। আর সেখানে জুডাস ইসকারিওট নামের যে ব্যক্তিটি যিশুর সঙ্গে প্রতারণা করেন, তিনি ১৩তম ব্যক্তি হিসেবে যোগ দেন খাবার টেবিলে।

২. নর্স মিথলজিতে বর্ণিত আছে, এক ডিনার পার্টি বানচাল করে দেন প্রতারণার দেবতা লোকি। তার আগমনে আয়োজনটি ভেস্তে যায় এবং এই পৃথিবী অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। পার্টিতে তিনি ১৩তম অতিথি হিসেবে প্রবেশ করেছিলেন।

৩. এই নম্বরটি সব সময়ই যেন খাপছাড়া। অলিম্পাসের দেবতার সংখ্যা ছিল ১২ জন। ঘড়িতে ১২ ঘণ্টার হিসেব দেওয়া আছে। এক বছরেও ১২ মাস আছে। জোডিয়াকে রয়েছে ১২টি প্রতীক। এসব ক্ষেত্রে ১৩ সংখ্যাটি সত্যিই যেন অশুভ কিছু।

৪. পশ্চিমের অসংখ্য মানুষের বিশ্বাস, যাদের নামে ১৩টি অক্ষর রয়েছে তাদের ওপর শয়তান ভর করে। জ্যাক দ্য রিপারের কথাই ধরুন। সেই ভয়ংকর সিরিয়াল কিলারের নামে ১৩টি অক্ষর রয়েছে।

৫. এই কারণটি অন্যগুলোর থেকে পৃথক এবং বিদঘুটে। তবুও মানুষের মনে বিশ্বাসের মতো ছেয়ে গেছে। বছরে নারীদের ঋতু হয় ১৩ বারের মতো। কাজেই সংখ্যাটি অশুভ।

৬. ডাইনিদের সভায় সাধারণত ১৩ জন ডাইনি অংশ নয়। সেখানে এই সংখ্যা কখনোই বদলায় না। সাধারণত মাসে সাড়ে ২৯ দিনে নতুন চাঁদের দেখা মেলে। একে বলা হয় লুনার মান্থ। আর ১৩টি লুনার মান্থের সঙ্গে ডাইনিদের গভীর সম্পর্ক রয়েছে।

৭. পশ্চিমে পুরনো সময়ের রীতি অনুযায়ী, ফাঁসির মঞ্চে উঠতে ১৩ পা এগোতে হয়।

৮. এমন বলা হয় যে, যে শুক্রবারে তারিখ হয় ১৩ তখন চুল কাটতে হয় না, কোনো সমাধির পাশ দিয়ে যেতে হয় না, মইয়ের নিচে যাওয়া যাবে না ইত্যাদি।
৯. পৃথিবীর অনেক দেশেই বিভিন্ন হোটেলে ১৩ নম্বর কক্ষ বলতে কিছু থাকে না। এটাকে এড়িয়ে যাওয়া হয়।

১০. স্পেনের মানুষের বিশ্বাস, ১৩ তারিখের মঙ্গলবারে অশুভ কিছু আসে। তাই বাড়তি সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়।

১১. প্রাচীন ব্যাবিলনের কোড অব হামুরাবি হলো বিশেষ কিছু আইন। সেই আইনের ধারার ১৩তমটি পাওয়া যায়নি।

১২. হোলি গ্রেইল রক্ষাকারী নাইটস টেম্পলারে গণহারে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হতো। আর তা শুরু হয় ১৩০৭ সালের ১৩ অক্টোবর থেকে। সাধারণ প্রতি শুক্রবার এই গণমৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হতো।

১৩. প্রাচীন পার্সদের বিশ্বাস ছিল, ১৩ হাজার তম বছরে শয়তান সরাসরি ঈশ্বরের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামবে। তখন বিশ্বটা যন্ত্রণা আর মৃত্যুতে ছেয়ে যাবে। সূত্র : ইন্ডিয়া টাইমস