রংপুরের পীরগঞ্জে বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রব, অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারগুলোতে বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রব সীমাহীন বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমান কুকুরের প্রজনন সময়হেতু শুধু হাট-বাজারেই নয়, গ্রামাঞ্চলেও দলবদ্ধভাবে ঘুরছে বেওয়ারিশ কুকুরের দল। বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে বেওয়ারিক কুকরের সংখ্যাও। ফলে রাস্তা-ঘাটে হরহামেশাই ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। কুকুর কামড়ানোসহ আক্রমণের শিকার হচ্ছে অহরহ সাধারণ পথযাত্রী।

২০১২ সালে উচ্চ আদালত ‘কুকুর নিধন অমানবিক’ কারণ দেখিয়ে সারা দেশে কুকুর নিধন বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করা হয়। ফলে পীরগঞ্জসহ সারা দেশে বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সরেজমিন পীরগঞ্জ উপজেলা সদর (পৌরসভা)সহ ভেন্ডাবাড়ী, কলোনী বাজার, কুমেদপুর, পীরেরহাট, বালুয়া বাজার, গুর্জিপাড়া, বড়দরগাহ্, চাতাল বাজার, রসুলপুর ও খালাশপীর হাট ঘুরে দেখা গেছে, সংঘবদ্ধ হয়ে বেওয়ারিশ কুকুরের দল বেপরোয়াভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

সোমবার বিকালে মদনখালী ইউনিয়নের নুসলামপুর গ্রামের সদ্য বিবাহিত লুলুু মিয়া পাশ্ববর্তী দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে নতুন শ্বশুরবাড়ীতে মিষ্টিসহ অন্যান্য খাবার হোটেল থেকে নিয়ে অটোরিক্সায় চেপে বসার আগেই ৮/১০টি কুকুর হাতে থাকা খাবারের ব্যাগে হানা দেয়। কুকুরের দল নিমিষেই খাবারের প্যাকেটগুলো ছিন্নভিন্ন করে ভক্ষণ করে ফেলে। ভয়ে জড়োসড়ো লুলু মিয়া কিংকর্তব্যবিমূঢ়, চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া যেন তার কিছই করার ছিলনা। দু’দিন আগে ভেন্ডাবাড়ী বন্দরের ব্যবসায়ী রব্বানীর ৮ বছরের শিশু কন্যা রাফিয়াকে কুকুর কামড়িয়েছে। পরদিন ওই শিশুর দাদি আছমা বেগম জলাতঙ্কের ভ্যাকসিনের জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যায়। সেখানে ভ্যাকসিন না পেয়ে অন্যত্র থেকে কিনতে হয় তাকে।

পান্থাপুকুর, মিলকী, হাজিপুর, পঁচারপাড়া ও বেহবতপুর গ্রামের কয়েকজন গৃহিণী বেওয়ারিশ কুকুুরের তান্ডবের বর্ণনা দিয়ে বলেন, তারা তাদের ছোট ছোট শিশুদের জন্য সার্বক্ষণিক বাড়ির প্রধান দরজা বন্ধ করে রেখেছেন। এ ব্যাপারে স্থানীয় পশু চিকিৎসক ডা. ফজলুল হক জানান, এ সময়টা কুকুরের প্রজনন সময়, তাই কুকুরগুলো অনেকটাই বেপরোয়া এবং হিংস্র। ক’দিন পর এই সংখ্যা আরো কয়েকগুণ বাড়বে।

এ বিষয়ে মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রুহুল আমিনের সঙ্গে কথা হলে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বেওয়ারিশ কুকুর নিধন প্রক্রিয়া মহামান্য উচ্চ আদালতের নির্দেশানুযায়ী বন্ধ থাকায় কুকুরের বংশ বিস্তার ও উৎপাত অনেকাংশে বেড়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জলাতঙ্ক রোগের ভ্যাকসিন মজুদ আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার জানা নেই।