রাজধানীতে ধর্ষণবিরোধী মিছিলে পুলিশের সঙ্গে হাতাহাতি

দেশব্যাপী ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নের প্রতিবাদে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে ছাত্র ইউনিয়নের পতাকা মিছিলে বাধা দিয়েছে পুলিশ। এতে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। হামলার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছে উভয়পক্ষ। এই বাধার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন আন্দোলনকারীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার বেলা ১১টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে পতাকা মিছিল করতে শাহবাগ জাদুঘরের সামনে জড়ো হতে শুরু করেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। সেখানে তারা কালো পতাকা হাতে অবস্থান নেন। প্রায় দুই ঘণ্টা যাবৎ অবস্থান করেন তারা।
তখন উপস্থিত ছিলেন ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি মেহেদী হাসান নোবেল, সাধারণ সম্পাদক অনিক রায়, সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দীসহ অন্য নেতৃবৃন্দ।

পরে দুপুর ১টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে রওনা করেন আন্দোলনকারীরা। তবে মিছিলটি থামানোর জন্য হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে সাকুরা পয়েন্টে আগে থেকেই ব্যারিকেড সৃষ্টি করে রেখেছিল পুলিশ। মিছিলটি সামনের দিকে অগ্রসর হয় ব্যারিকেডটি ভাঙার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

এতে আহত আসমানি আক্তার আশা, মাহমুদা দিপা, সাজ্জাদ হোসেন শুভ ও আরেফিন ইমন নামে চারজনকে অন্য আন্দোলনকারীরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে নিয়ে যান।

পরে সাকুরা পয়েন্টে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন আন্দোলনকারীরা। সমাবেশ থেকে তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি জানান এবং ‘পুলিশি হামলা’র প্রতিবাদে সন্ধ্যায় মশাল মিছিলের ঘোষণা দেন।

পরে সেখান থেকে মিছিলটি শাহবাগ হয়ে রাজু ভাস্কর্যে এসে শেষ হয়।

ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেহেদী হাসান নোবেল অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের ১০ জনের বেশি আহত হয়েছে। তারা পিজি (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে চিকিৎসা নিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘এখানে সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক হলো মেয়ে পুলিশ পেছনে ছিলেন। আমাদের মিছিলে নারীরা সামনে ছিলেন। কিন্তু নারী পুলিশ ছিলেন পেছনের দিকে। পুরুষ পুলিশরা নারীদের ওপর হামলা করেছেন।’

তবে, রমনা জোনের ডিসি মো. সাজ্জাদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, তারা দৌড় দিয়ে এসে ব্যারিকেড ভেঙে পুলিশের ওপর হামলা করেছে। তাদের হাতে যে প্লেকার্ড ছিল কালো পতাকাবাহী এসব পুলিশের ওপর ছোড়ে মেরেছে। পুলিশ অসীম ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে ব্যারিকেডের উল্টা দিক থেকে শুধু ব্যারিকেডটা ধরে রেখেছি। তারা নিজেদের দিকে টেনে নিয়ে এগুলো ভেঙে ফেলেছে।

তিনি বলেন, তারা এত বেশি এসেছে যে, আমাদের মেয়ে সদস্যরা পেছনে চলে গেছে। সেখানে তাদের নিগৃহীত করা হয়েছে। আমাদের দু’জনকে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। আমাদের সিনিয়রদের সঙ্গে কথা বলে আমরা পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।

পুলিশের অভিযোগ প্রসঙ্গে মেহেদী হাসান নোবেল বলেন, ‘আমরা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে মিছিল করতে গিয়েছিলাম। তারাই লাঠি বর্ম-নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। পতাকা দণ্ড ছিলো বিদ্যুতের তার ঢুকানোর পাইপ, এগুলো দিয়ে কী হামলা করা যায়?’