রাজশাহী নগরীতে অটো ধর্মঘটেই চালু হলো সিটি সার্ভিস বাস

রাজশাহী মহানগরীর মধ্যে চলাচলের জন্য একমাত্র বাহন ছিল অটোরিকশা। বর্তমান রাজশাহীতে প্রায় ২০হাজারের মত অটোরিকশা চলাচল করে। এতে দেখা যায় অটোরিকশার ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের মধ্যে মাঝে মধ্যে বাকবিতন্ডা লেগেই থাকে। এসব অটোরিকশার চালকরা দফায় দফায় ভাড়া বৃদ্ধি করা, যেখানে সেখানে যাত্রী উঠানামা করা, যাত্রী হয়রানী, রাতে যাত্রীদের বেশী ভাড়া আদায়, নানা অপকর্মে জড়িত এমন অভিযোগ অটোরিকশার চালকদের বিরুদ্ধে।

যার ফলে রাজশাহী নগরবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ছিল সিটি বাসের। সেই প্রত্যাশা এবার পুরণ হচ্ছে। রাজশাহীতে চালু হচ্ছে সিটি সার্ভিস বাস।

সোমবার (২৯ আগস্ট) অল্পপরিসরে সাধারণ যাত্রীরা সিটি বাসে বিভিন্ন গন্তব্য পৌঁছেছে। এতে দেরিতে হলেও রাজশাহী মহানগরীর সাধারণ মানুষ কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে।

জানা গেছে, গত রোববার থেকে হঠাৎ করেই যাত্রীদের জিম্মি করে অটোরিক্সা চালকরা আবারো ভাড়া বৃদ্ধির জন্য ধর্মঘট শুরু করে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও অটোপার্টসের দাম বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে রাজশাহী মহানগরীতে গেলো রোববার সকাল থেকেই অটোচলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। সোমবার প্রায় বিকেল তিনটা পর্যন্ত তারা এই ধর্মঘট অব্যাহত রাখে। এতে চরম বেকায়দায় পড়েন অফিস, আদালত, সাধারণ যাতায়াতকারী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।

দেখা গেছে, এই সুযোগে কিছু অটোচালক ও চার্জার চালিত রিকশা চালকরা বেশী ভাড়া আদায় করা শুরু করে। এনিয়ে দিনভর নগরীতে বিভিন্ন জায়গায় হট্টগোলও দেখা দেয়।

এদিকে ধর্মঘট চলাকালীন সময় অটোরিকশা চালক মালিকদের একটি পক্ষ রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের সাথে দেখা করার চেষ্টাও করেন। কিন্তু তাদের সেই চেষ্টাও ব্যর্থ হয়। অটোরিকশা হঠাৎ বন্ধ করে জনগণকে জিম্মি করে ভাড়া আদায় ও তাদের নৈরাজ্যের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে সর্বসাধারণ তাদের এই দৌরাত্ম থেকে মুক্তি পেতে দাবি উঠে সিটি বাস চালুর। এরই পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহী বিভাগীয় সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির পক্ষে ৩০টি বাস বিভিন্ন রুটে চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

রাজশাহী বিভাগীয় সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির সভাপতি সাফকাত মঞ্জুর বলেন, গত দুদিন থেকে অটোরিকশা চালক-মালিকরা চলাচল বন্ধ করে দিলে সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীরা বিপদে পড়ে। এছাড়াও অটোচালকদের জিম্মিদশা থেকে জনগণকে উদ্ধার করতে নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে প্রাথমিক অবস্থায় ৩০টি বাস অবস্থান করছে। সোমবার বিকেল থেকে এসব বাস নিয়মিত যাতায়াত শুরু করেছে।

রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন মেয়রের সাথে আলোচনা করে সিটিং সার্ভিস বাস নামানো হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপাতত নিজেদের উদ্যোগে এই সার্ভিস চালু করা হচ্ছে। পরবর্তীতে এসব চিন্তা ভাবনা করা হবে। ভাড়া আদায় ও শিক্ষার্থীদের জন্য কোন ছাড় রাখা হয়েছে কিনা এসব বিষয়ে তিনি বলেন, এখনো ভাড়া নির্ধারণ করা হয়নি। শহরের মধ্যে ৫ টাকা ১০ টাকা ভাড়া এভাবেই চলবে। তবে কেবল মাত্র শুরু, পরে এসব বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করা হবে বলে তিনি জানান।