রায়ের দিন বৃহস্পতিবার হওয়ায় বেশি শঙ্কায় বিএনপি

নেতাকর্মীদের গণহারে ধরপাকড়, ক্ষমতাসীন দলের প্রস্তুতি আর রায়ের দিন বৃহস্পতিবার হওয়ায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় নিয়ে বিএনপিতে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। রায়ের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে নেতাকর্মীদের মাঝে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ততই বাড়ছে। নেতাকর্মীদের আশঙ্কা, ‘নেতিবাচক’ রায় হলে বিএনপি চেয়ারপারসনকে কম করে হলেও বৃহস্পতিবার থেকে রোববার পর্যন্ত চার দিন কারাভোগ করতে হবে। কারণ আপিল প্রক্রিয়ায় জামিন পেতে এ সময়টুকু লাগতে পারে।খবর পরিবর্তন ডটকমের।

তবে বিএনপির সিনিয়র নেতারা খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন। তাদের মতে, এই মামলায় খালেদা জিয়া খালাস পাবেন। মামলার অভিযোগের সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

বিএনপি নেতাকর্মীরা বলছেন, চেয়ারপারসন আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। যে কারণ তিনি মামলা চলাকালীন আদালতে উপস্থিত হয়েছেন। এই মামলায় খালেদা জিয়াকে ‘সাজা দেয়ার সুযোগ’ নেই। তবে রায়ের দিন বৃহস্পতিবার নির্ধারণ, নেতাকর্মীদের গণহারে গ্রেফতার এবং ক্ষমতাসীন দলের ‘রণপ্রস্তুতিতে’ তারা ‘সরকারি হস্তক্ষেপের’ আশঙ্কা করছেন।

বিএনপির মধ্যম সারির কয়েকজন নেতা বলেন, ‘আসলে এটি এমন একটি বিষয় যা নিয়ে সরাসরি মন্তব্য করা যায় না। কিন্তু একটা জিনিস পরিষ্কার রায়ের তারিখ বৃহস্পতিবার দেয়ার কারণটা কী।’

‘শুক্র ও শনিবার ছুটির দিন। তাই তাৎক্ষণিক আপিল মঞ্জুর না হলে নেত্রীকে কম করে হলেও চার দিন কারাগারে থাকতে হবে। আর প্রধানমন্ত্রী বলে বেড়াবেন- খালেদা জিয়া এতিমের টাকা মেরে খেয়ে জেলে খেটেছেন’ যোগ করেন তিনি।

এদিকে দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার প্রসঙ্গে নয়াপল্টনের এক সংবাদ সম্মেলনে মঙ্গলবার সকালে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘এটি কোন বিচ্ছিন্ন নৃশংসতা নয়, ৮ ফেব্রুয়ারি সরকার প্রধানের ইচ্ছা পূরণ নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বেপরোয়া উন্মত্ততায় বিএনপির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে। মনে হয়, সরকার রায় নির্ধারণ করে রেখেছে বলেই প্রতিক্রিয়ার অজানা আতঙ্কে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর বুলডোজার চালাচ্ছে।’

জানতে চাইলে খালেদা জিয়ার আইনজীবী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়া খালাস পাবেন।’

তিনি বলেন, ‘আমরা বিকল্প কিছু ভাবছি না। যে ডকুমেন্টর ওপর ভিত্তি করে মামলার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে তা দেশের প্রায় প্রতিটি মানুষই অবগত আছে। রায় কী হবে সেটা আদলাত ভালো জানেন। এটা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই।’

খালেদা জিয়ার আরেক আইনজীবী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, ‘মামলায় আমরা দেখতে সক্ষম হয়েছি যে, কোনো কনভিকশন (দোষীসাব্যস্ত করার) দেয়ার মতো কোনো ম্যাটেরিয়াল নেই। এখন জজ সাহেব কী করবেন এটা উনার ব্যাপার।’

এক প্রশ্নের জবাবে কিছুটা রসাত্মক ভঙ্গিতে তিনি বলেন, ‘যদি (নেতিবাচক) কিছু হয় তাহলে আপিলের ফোরাম আছে, আপিল করব। যদি খালাস পেয়ে যান, তাহলে তো ভালোই হলো। না পেলে আপিল করব, হাইকোর্টে যাব। ওখানে না হলে সুপ্রিম কোর্টে যাব, না হলে আবার রিভিউ করব।’

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার পুরনো ঢাকার বকশীবাজারে স্থাপিত ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. আখতারুজ্জামান রায় ঘোষণা করবেন।